ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ১৯ নভেম্বর, ২০১৭

ঢাকায় বিধ্বস্ত রাজশাহী কিংস

শিরোপা ধরে রাখাটা কঠিন। এই চাপেই বোধহয় প্রথম ম্যাচে শেষ হয়ে গিয়েছিল ঢাকা ডায়নামাইটস। বিপিএলের পঞ্চম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে নবাগত সিলেট সিক্সার্সের কাছে উড়ে গিয়েছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। ৯ উইকেটের হারটা তাতিয়ে দিয়েছিল সাকিব আল হাসানের দলকে। এরপর থেকেই দুর্বার গতিতে ছুটছে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটি। কাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আসরের চতুর্থ জয় তুলে নিয়েছে চ্যাম্পিয়নরা। তাতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানটাও অটুট রাখল তারা। ৫ ম্যাচে তাদের অর্জন ৯ পয়েন্ট।

ঢাকা ডায়নাইমাইটসের চতুর্থ জয়টি এসেছে রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে, ৬৮ রানের বড় ব্যবধানে। ঢাকার ছুড়ে দেওয়া ২০১ রান-পাহাড়ের জবাব দিতে নেমে ইনিংসের ১০ বল বাকি থাকতেই ১৩৩ রানে গুটিয়ে যায় রাজশাহী কিংস। শহিদ আফ্রিদির আগুন বোলিংয়ের কাছেই মূলত অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে ড্যারেন স্যামির দল।

এবারের বিপিএলের শুরুর দিকে ছিলেন না আফ্রিদি। টুর্নামেন্টে যোগ দিয়ে প্রথম ম্যাচেই ব্যাট হাতে তুলেছেন ঝড়। আগুন ঝরিয়েছেন বল হাতে। দুর্দান্ত অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সের সুবাদে ম্যাচসেরাও হয়েছিলেন সেদিন। কাল অবশ্য ব্যাট হাতে বিধ্বংসীরূপে হাজির হতে পারেননি তিনি। তবে বল হাতে ঠিকই পুষিয়ে দিয়েছেন। রাজশাহীকে দ্রুত গুটিয়ে দেওয়ার আসল নায়ক যে তিনিই! চার ওভারে ২৬ রান খরচায় তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। এর মধ্যে তিনজনই রাজশাহীর সেরা ব্যাটসম্যান। আফ্রিদির সঙ্গে টেক্কা দিয়ে উইকেট নিয়েছেন আবু হায়দার রনি। ১৪ বলে ১১ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন এই পেসার। চার ওভারে ২২ রান দেওয়া সাকিবের শিকারের সংখ্যা দুটি।

অবশ্য এমন নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পরও ম্যাচসেরার স্বীকৃতি পেয়েছেন একজন ব্যাটসম্যান। দুই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান তান্ডবে চালিয়ে যে জয়ের পথটা আগেই মসৃণ করে দিয়েছেন। এভিন লুইস ও কাইরেন পোলার্ডের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের সুবাদে এদিন দলীয় সংগ্রহ দু শ ছাড়িয়েছে ঢাকা ডায়নামাইটস। ৩৮ বলে ৬৪ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেছেন ওপেনার লুইস। পোলার্ড ২৫ বলে অজেয় ৫২ রানের বিস্ফোরক ইনিংসই উপহার দিয়েছেন দলকে। ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ইনিংসটি সাজিয়েছেন তিনি। এই দুই ক্যারিবীয় ছাড়া উল্লেখযোগ্য ২২ বলে ২৮ রান করেছেন কুমার সাঙ্গাকারা।

অবশ্য ঢাকা যে বড় সংগ্রহের পথে হাঁটছে সেটা বোঝা গেছে শুরুতেই। প্রথম চার ওভারেই স্কোর বোর্ডে পঞ্চাশ রানের বেশি জমা করেছে ঢাকা। আরেকটু ছোট করে বললে লুইস। আফ্রিদির সঙ্গে তার উদ্বোধনী জুটিটা পুরোপুরি ভয়ঙ্কর রূপ নেওয়ার আগেই ভেঙে যায়। শুরু না হতেই থেমে গেছে আফ্রিদি ঝড়। ৮ বলে ৩ চারে ১৫ রান করেছেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার। ৯৯ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হয়ে সাজঘরে ফিরে যান লুইস। শেষ দিকে তার দেখানো পদাঙ্কটাই অনুসরণ করেছেন পোলার্ড। তবে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেওয়ার সুবাদে প্রত্যাশিতভাবেই ম্যাচসেরা হয়েছেন লুইস।

ব্যাটসম্যানরা তাদের কাজটা ঠিকঠাক করে গেছেন। নির্ধারিত কুড়ি ওভারে ৭ উইকেটে ২০১ রান জমা করেছেন স্কোর বোর্ডে। বোলারদের জন্য ম্যাচটা যে কঠিন হবে না সেটা অনুমিতই ছিল। তাই বলে এতটা সহজভাবে ঢাকা ডায়নামাইটস জিতবে সেটা ভাবার লোক খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর ছিল।

লক্ষ্যটা নিঃসন্দেহে কঠিন ছিল, তবে অসম্ভব নয়। কিন্তু রাজশাহী কিংসের ইনিংস শুরুর প্রাথমিক বিপর্যয়ই বলে দিয়েছিল ম্যাচটা যেতা সম্ভব নয়। প্রথম ওভারেই যে আফ্রিদির জোড়া আঘাত। জাকির হাসান ও মুমিনুল হক ধাক্কাটা প্রায় সামলে উঠেছিলেন। তৃতীয় উইকেটে তাদের ৫৮ রানের জুটি জয়ের স্বপ্ন না দেখালেও পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর আশা জাগিয়েছিল। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দুজনের প্রস্থান রাজশাহীর চতুর্থ হার প্রায় নিশ্চিত করে দেয়। ২৩ বলে দলীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রান করা জাকির আফ্রিদির ঘূর্ণির বলি হয়েছেন। মুমিনুলের ঘাতকও তিনি। উইকেটে জমে উঠতে শুরু করা ড্যারেন স্যামিকে অবশ্য ঢাকার অধিনায়ক সাকিব ফিরিয়েছেন। ১৯ রান করেন রাজশাহী দলপতি। রাজশাহীর ইনিংসে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন রানসংখ্যায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist