ক্রীড়া ডেস্ক
ওয়ানডেতেও হোয়াইটওয়াশ
সিরিজ জয়ের স্বপ্ন অনেক আগেই ধূসর হয়ে গেছে। ইস্ট লন্ডনে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের হারানোর কিছুই ছিল না। কিন্তু পাওয়ার ছিল। শান্ত¦নার সেই ম্যাচেও হারের বৃত্তে থাকল টাইগাররা। নির্বিষ বোলিং এবং ব্যাটিং ব্যর্থতার পরিণতি হিসেবে ওয়ানডেতেও হোয়াইটওয়াশ হতে হলো মাশরাফি বিন মর্তুজার দলকে। সফরকারীদের এবারের হারটি কাঁটায় কাঁটায় দুশো রানে। পরপর দুই সংস্করণে ধবলধোলাই হওয়া বাংলাদেশের সামনে এখন টি-টোয়েন্টি সিরিজের চ্যালেঞ্জ। বৃহস্পতিবার শুরু হবে কুড়ি ওভারের প্রথম ম্যাচ। পরেরটা ২৯ অক্টোবর।
টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশকে নিয়ে ছেলেখেলা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডেতেও ধারাটা অব্যাহত রাখল প্রোটিয়ারা। টাইগার বোলারদের পিটিয়ে ছাতু বানিয়ে রানোৎসব করেছেন স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। সবমিলিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে হাজারেরও বেশি রান করেছে প্রোটিয়া শিবির। এক সিরিজে প্রথমবারের মতো সর্বোচ্চ রান হজমের দুঃস্মৃতি উপহার পেল সফরকারীরা। এর আগে হাজারেরও বেশি রান হজমের রেকর্ড আছে শুধু তিনটি দলের-ভারত, ইংল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে।
কাল ইস্ট লন্ডনে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৩৬৯ রান করেছে প্রোটিয়ারা। তবে স্বস্তির খবর হচ্ছে সফরে এটাই প্রথম ম্যাচ যেখানে প্রোটিয়া কোনো ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করতে পারেননি। অসুস্থ না হলে হয়তো ঠিকই সেঞ্চুরি তুলে নিতেন ফ্যাফ ডু প্লেসি। ৯১ রান করে উইকেট ছেড়ে এসেছেন প্রোটিয়া অধিনায়ক।
জিততে হলে রেকর্ডই গড়তে হতো বাংলাদেশকে। রানপাহাড়ের জবাব দিতে নেমে ৪১তম ওভারে ১৬৯ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ১০ উইকেটে ১০ উইকেটে, দ্বিতীটিতে ১০৪ রানে এবং কালকেরটা ২০০ রানে।
হাশিম আমলাকে শেষ ম্যাচে বিশ্রামে রেখেও দক্ষিণ আফ্রিকা কোনও সমস্যার মুখোমুখি হয়নি। কুইন্টন ডি ককের সঙ্গে এদিন উদ্বোধনী জুটিতে নামেন তেম্বা বাভুমা। হাফসেঞ্চুরির আক্ষেপ থেকে গেলেও তিনি আউট হওয়ার আগে ১১৯ রানের শক্ত জুটি গড়েন। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ৪৮ রানে লিটনের হাতে ক্যাচ দেন বাভুমা।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় উইকেট পায় কিছুক্ষণ পরই। ১৫তম ফিফটি পাওয়া ডি কক ৬৮ বলে ৭৩ রান করে ফিরতি বলে মিরাজকে ক্যাচ তুলে দেন। তারপর আবার প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের দাপট। ফাফ দু প্লেসি ওয়ানডেতে অভিষিক্ত হওয়া এইডেন মারক্রামকে সঙ্গে করে ১৫১ রানের বড় জুটি গড়েন। কিন্তু পিঠে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন দু প্লেসি। ৬৭ বলে ১০ চার ও ১ ছয়ে ৯১ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হন স্বাগতিক অধিনায়ক। ওই ওভারেই ৬৬ রানে আউট হন মারক্রাম।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৭৬ রান করা এবি ডি ভিলিয়ার্স এদিন মাত্র ২০ রানে মাশরাফির দুর্দান্ত ক্যাচ হন। ৪৬তম ওভারে তাকে ফেরান রুবেল। পরের ওভারে তাসকিনের জোড়া আঘাত। নবাগত উইলেম মুলডার (২) ও অ্যান্ডিল ফেলুখায়োকে (৫) মুশফিকের ক্যাচ বানান তিনি।
শেষদিকে ফারহান বেহারডিয়েন ও কাগিসো রাবাদার ঝড়ো ব্যাটিং প্রোটিয়াদের স্কোর সাড়ে তিনশর উপরে নেয়।
৩৭০ রানের বড় টার্গেটে নেমে ৬১ রানেই বাংলাদেশ হারায় ৫ উইকেট। আগের দুই ম্যাচের সেরা পারফর্মার ইমরুল কায়েস ও মুশফিকুর রহিম ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি। বরং বাফেলো পার্কে অন্য ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে সাকিব আল হাসান ছিলেন উজ্জ্বল। তার সঙ্গে মুশফিক প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহকে দ্রুত ফিরিয়ে আবারও সফরকারীদের চাপে ফেলে প্রোটিয়ারা। প্রথম দুই ম্যাচে অপরাজিত ১১০ ও ৬০ রান করা মুশফিক শেষ ম্যাচে মাত্র ৮ রানে রাবাদার হাতে ক্যাচ দেন। ২ রানে মাহমুদউল্লাহকে এলবিডাব্লিউ করেন মালডার।
সাব্বিরকে নিয়ে ৬৭ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন সাকিব। ৬৩ বলে ৬ চারে হাফসেঞ্চুরি পান বাংলাদেশি অলরাউন্ডার। তবে তাকে থামতে হয় ৬৩ রানে। সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে বদলি ফিল্ডার জেপি দুমিনির হাতে ক্যাচ দেন সাকিব। ওই ওভারেই সাব্বির ৩৯ রানে ক্যাচ তুলে দেন প্রোটিয়া উইকেটরক্ষকের হাতে। ১৩৫ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর ব্যবধান কমাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন মাশরাফি মুর্তজা ও মিরাজ। কিন্তু তাদের ২৮ রানের জুটি ভেঙে দেন প্যাটারসন। মাশরাফি ১৭ রানে ডি ককের গ্লাভসে ধরা পড়েন। ৪১তম ওভারে তাসকিন (২) ও মিরাজকে (১৫) আউট করে গুটিয়ে দেন ইমরান তাহির।
"