ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাস্তবতা দেখালেন মাশরাফি
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আরও একটি ম্যাচ। আরও একবার বিধ্বস্ত বাংলাদেশ। প্রোটিয়াদের মাটিতে পা রাখার এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত পরাজয়ের বৃত্তে আটকা পড়ে আছে টাইগাররা । সফরের শুরুতে টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাইয়ের লজ্জার পর ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন চান্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
কিন্তু একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও একই চিত্র মাশরাফিবাহিনীর। কিম্বার্লির পর বুধবার পার্লের বোল্যান্ড পার্কেও ধরাশায়ী সাকিব-তামিমরা। ফলে এক ম্যাচ বাকি রেখেই সিরিজ জলাঞ্জলি দিতে হয়েছে তাদের। জয় তো দূরের কথা, লড়াইটাই জমিয়ে তুলতে পারছে না সাব্বির-নাসিররা। ‘জায়ান্ট কিলার’ হিসেবে বিশ্ব আঙ্গিনায় নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে ফেলা দলটি হঠাৎ করেই জিততে ভুলে যাওয়ায় দেশবাসীর মতোই সমান হতাশ দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা।
দক্ষিণ আফ্রিকায় টানা ব্যর্থতার কারণটা অবশ্য খুঁজে বের করেছেন তিনি। অধিনায়কের মতে, বাংলাদেশ আসলে দল হিসেবেই খেলতে পারছে না। ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১০ উইকেটে হারলেও প্রাপ্তি ছিল মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় ম্যাচে প্রাপ্তি বলতে মুশফিকের ধারাবাহিকতা, ইমরুলের ফর্মে ফেরা আর রুবেল হোসেনের বোলিং। কিন্তু দু-একজনের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নয়, মাশরাফি চাইছেন দল হিসেবে ভালো করতে। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক তাই বললেন, ‘মূল সমস্যা হচ্ছে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের বাইরে আমরা দল হিসেবে ভালো করতে পারছি না। আমাদের দলে ডি ভিলিয়ার্সের মতো কেউ নেই যে একাই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিবে। তাই প্রতি ম্যাচেই অন্তত ছয়-সাতজনকে নিজের সেরাটা দিতে হবে।’
পরশু পার্লে এবি ডি ভিলিয়ার্সের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের কাছে কাছেই মাথানত করেছে বাংলাদেশ। ২০ ওভার পর্যন্ত স্বাগতিকরা যেখানে ওভারপ্রতি ৫ করে রান তুলেছে, তারাই শেষ পর্যন্ত গড়েছে ৩৫৩ রানের পর্বত। আর সেটি ‘মিস্টার থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি’র বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে। মাশরাফি সেটা হাসিমুখেই স্বীকার করেছেন। ‘সে যখন এমন ছন্দে থাকে, আপনাকে তখন শতভাগ সেরাটা দিতে হবে। না হলে সে আপনাকে ভোগাবে। তবে আমাদের স্কোরটা তিনশ ছাড়াতে পারতো। কিন্তু তাহিরের উইকেটগুলো আমাদের অনেক চাপে ফেলে দিয়েছিল।’
কাল সংবাদ সম্মেলনেও মাশরাফির কণ্ঠে হতাশাই ঝড়লো। সিরিজের মাঝখানে একজন বোলার যতই অনুশীলন করুক, তবুও খুব একটা উন্নতির সুযোগ দেখেন না তিনি। ভিন্ন কন্ডিশনের জন্য প্রস্তুত হতে সতীর্থদের বরং অফ সিজন বা বিশ্রামের সময়টাকে কাজে লাগানোর তাগিদ দিয়েছেন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক।
উল্লেখ্য, আগামী রোববার ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্কে নিয়ম রক্ষার ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ঐ ম্যাচে অংশ নিতে কাল রাতেই পার্ল ছেড়েছে টাইগাররা। ইস্ট লন্ডনে আবারো কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে হাথুরুসিংহের ছাত্রদের। দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় শহরটিতে অনুষ্ঠিত শেষ নয় ওয়ানডের সবকটিতেই যে হেসে-খেলে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা!
"