ক্রীড়া ডেস্ক
বার্নাব্যুতেও চেনারূপে রিয়াল
রিয়াল মাদ্রিদ ২ : বার্সেলোনা ০ * দুই লেগে ৫-১ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ
তবে কি পতন ঘটল বার্সেলোনার সোনালি যুগের! এমন প্রশ্ন এখন উঠতেই পারে। বলতে গেলে রিয়াল মাদ্রিদের দ্বিতীয় সারির সঙ্গেও পাত্তা পেল না মেসি-সুয়ারেজরা। অসাধারণ নৈপুণ্যে উয়েফা সুপার কাপ জয়ে পর এবার স্প্যানিশ সুপার কাপও নিজেদের দখলে নিল ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম লেগে ঘরের মাঠে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়েছিল ভালভের্দের দল। সেই ব্যর্থতাকে পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়াতে হলে অসাধ্য সাধন করতে হতো কাতালান ক্লাবটিকে। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে একরকম উড়ে গেছে বার্সেলোনা। লক্ষ্যের তার ধারেকাছেও যেতে পারেনি তারা, উল্টো সমর্থকদের হতাশা বাড়িয়ে বরণ করেছে আরেকটি পরাজয়। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের উড়িয়ে দিয়ে স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতে মৌসুমটা শুরুতেই রাঙিয়ে নিল ‘গ্যালাকটিকোস’রা।
গত বুধবার রাতে রিয়ালের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বার্সেলোনাকে ২-০ গোলে হারিয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ অগ্রগামিতায় শিরোপা জিতেছে জিনেদিন জিদানের দল। প্রথম লেগে বার্সেলোনার মাঠ ন্যু ক্যাম্পে ৩-১ গোলে জিতেছিল তারা। এদিন বার্সার চেয়ে পিছিয়ে থেকেই মাঠে নেমেছিল রিয়াল। পাঁচ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় ছিলেন না দলের সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সমর্থক চিন্তায় আরো বাড়ে যখন দুই ইনফর্ম তারকা গ্যারেথ বেল ও ইসকোকেও একাদশের বাইরে রাখেন জিনেদিন জিদান। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ তিন খেলোয়াড়কে ছাড়া খেলতে নামা রিয়ালকে কোনো পরীক্ষাতেই ফেলতে পারল না ভালভের্দে শিষ্যরা। উল্টো তারকাহীন দলে জয়ের নায়ক বনে যান তরুণ আসেনসিও। গত মৌসুমেই নিজের ঝলক দেখিয়েছিলেন আসেনসিও। স্প্যানিশ সুপার কাপের প্রথম লেগেও নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে চমৎকার এক গোলে জয় নিশ্চিত করেছিলেন। সেই ম্যাচে যেখানে শেষ করেছিলেন ঘরের মাঠে যেন সেখান থেকেই শুরু করলেন। জালের দেখা পেতে সময় নেন মাত্র চার মিনিট। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে তার আচমকা শটে এগিয়ে যাওয়া গোলটি দর্শকরা মনে রাখবে আরো অনেক দিন। এমন শটে বল যে জালে ঢুকতে পারে তা যেন ভাবতেই পারেননি সামান্য এগিয়ে থাকা মার্ক আন্ড্রে টের স্টেগেন, জায়গা থেকে একচুল নড়েননি তিনি। এ নিয়ে টানা ৬৮টি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে গোল করল রিয়াল। সবশেষ গত বছর এপ্রিলে চ্যাম্পিয়নস লিগে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিল ইউরোপের সফলতম ক্লাবটি।
বাঁচা-মরার ম্যাচে বার্সার মরিয়া ভাব দেখা যায়নি একবারের জন্যও। উল্টো বার্সেলোনার খেলা ছিল শুরু থেকেই ছন্দহীন, খেলোয়াড়দের মধ্যে ছিল বোঝাপড়ায় ঘাটতি। দেখে মনে হচ্ছিল, নেইমারকে হারানোর যন্ত্রণা এখনো ভুলতে পারেনি মেসিরা। একের পর এক ভুল পাস সমর্থকদের বিরক্ত ও হতাশায় বাড়িয়েছে শুধু। অন্যদিকে একের পর এক আক্রমণে রিয়াল স্ট্রাইকাররা ত্রাস ছড়িয়েছে বার্সার রক্ষণদুর্গে। তেমনি এক আক্রমণে ৩৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারত রিয়াল। তবে লুকাস ভাসকেসের শট পোস্টে লাগলে সে যাত্রায় বেঁচে যায় তারা। কিন্তু ছয় মিনিট পর আর ভুল করেননি করিম বেনজেমা। দলকে আরেকবার এগিয়ে বার্সার হাত থেকে ম্যাচ বের করে নিয়ে যান এই ফরাসি স্ট্রাইকার। দীর্ঘদিন ধরেই মাঝমাঠ ও রক্ষণ নিয়ে ভুগছে বার্সেলোনা।
"