ক্রীড়া প্রতিবেদক
আজ আসছে অস্ট্রেলিয়া
দৃশ্যটা এর আগেও দেখেছে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম। কাল আরেকবার সাক্ষ্যি হলো সেটার। হোম অব ক্রিকেটে হলো কমান্ডো মহড়া। আধঘণ্টা চলল ‘জিম্মি’ নাটক; সেনাবাহিনীর উদ্ধার তৎপড়তা। অতঃপর দ্রুতই হেলিকপ্টারে চড়িয়ে ক্রিকেটারদের পৌঁছে দেওয়া হয় নিরাপদ স্থানে। এই শ্বাসরুদ্ধকর মিনিটগুলো উপভোগ্যও হয়ে উঠেছিল! বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন থাকবে সেটার একটা নমুনা মাত্র এই কমান্ডো মহড়া। মহড়াপর্বে ২৫ জন প্যারা কমান্ডো অংশ নিয়েছিলেন।
অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফর নিয়ে নাটক কম হয়নি। জল বহুদূর গড়ানোর পর এসেছে সমাধান। ঝুলে থাকা এই সফরটা কখনো সংশয়ে পড়ে গিয়েছিল নিরাপত্তা ইস্যুতে। কখনো বা অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে খাদের কিনারায় গিয়ে দাঁড়িয়েছিল সিরিজের ভাগ্য। অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরেছে দুই দেশেই। অবসান হতে বহু দিনের অপেক্ষার। আজ রাতেই যে বাংলাদেশে আসছে অস্ট্রেলিয়া। রাত পৌনে এগারোটার দিকে ঢাকা বিমানবন্দরে পা রাখার কথা স্মিথ-ওয়ার্নারদের।
সিরিজটা মাঠে গড়াতে পারতো দুই বছর আগেই। তখন আলোর মুখ দেখেনি সিরিজটি। গত বছরও সিরিজের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হয়েছিল। কিন্তু গেল বছরের জুলাইয়ে গুলশান হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ভয়াল সন্ত্রাসী হামলার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল সিরিজে। নিরাপত্তা ইস্যুতে বেঁকে বসেছিল অস্ট্রেলিয়া। সফরটা তখনই স্থগিত করে দিয়েছিল অজিরা। কিন্তু তারা না এলেও বাংলাদেশ সফর করে গেছে ইংল্যান্ড জাতীয় দল। বাংলাদেশের নিরাপত্তার ব্যাপারে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন বাটলার-রুটরা। সেই সিরিজেও একবার কমান্ডো মহড়া হয়েছিল। কাল হলো আরেকবার। দুটো মহড়া-ই মূলত অস্ট্রেলিয়াকে কেন্দ্র করে। আসন্ন সিরিজটাও গত বছরের মতো নি-িদ্র নিরাপত্তার চাদরে হবে।
যেটার শুরুটা হচ্ছে আজ রাত থেকেই। হজরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও রাখা হয়নি ক্রিকেটারদের কোনো কার্যক্রম। উড়োযান থেকে নামার পরপরই সরাসরি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হবে স্মিথ-ওয়ার্নারদের। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ এবং সার্বিক বিষয় নিয়ে কাল মিরপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবে সফরকারীরা।
এই সিরিজে সবচেয়ে বেশি কথা উচ্চারিত হয়েছে নিরাপত্তা ইস্যুতে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন হবে এই প্রসঙ্গে কয়েকদফা পর্যবেক্ষণও করেছে অস্ট্রেলিয়া প্রতিনিধি দল। স্মিথরা ঢাকায় আসার দুদিন আগেই নিরাপত্তা দল এসে হাজির। এবারো যথেষ্ট ইতিবাচক সফরকারীরা। তাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে নিয়োজিত থাকছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি সদস্য। পুলিশকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত থাকবে সেনাবাহিনী। জরুরি প্রয়োজনে ৩০ মিনিটের মধ্যে স্টেডিয়াম চত্বরে উপস্থিত হবেন এই কমান্ডোরা। বিশ্ববাসীর আস্থা ধরে রাখা ও আয়োজক হিসেবে সফলতার মুকুটে আরও একটি পালক যুক্ত করার লক্ষ্যেই বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার সিরিজের দায়িত্বে যুক্ত থাকবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
অবশ্য মাঠের বাইরে সর্বোচ্চ আতিথেয়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ। কাল সিরিজের কেতাবি নামও নির্ধারণ করা হয়েছে। আসন্ন সিরিজের টাইটেল স্পন্সর পেয়েছে ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ‘রকেট’। তবে মাঠের বাইরে সর্বোচ্চ আতিথেয়তা দিলেও ভেতরে অজিদের ন্যূনতম ছাড় দেবে না মুশফিকুর রহিমের দল।
২৭ আগষ্ট মিরপুরে প্রথম টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে। তবে মূল লড়াইয়ের আগে ২২ ও ২৩ আগস্ট দুদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে অজিরা।
"