ক্রীড়া ডেস্ক
মাশরাফির কাছে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর মন্ত্র
দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় পর টেস্ট ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্টটি ঢাকায় এবং পরেরটি মাঠে গড়াবে চট্টগ্রামে। অজিদের বিপক্ষে এই সিরিজের জন্য এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। ঢাকায় একদফা অনুশীলনের পর চট্টগ্রামেও সাত দিনের ক্যাম্প। টাইগারদের এখন চলছে শেষভাগের প্রস্তুতি। এই প্রস্তুতিতে দলের সঙ্গে আছেন ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ টেস্ট খেলা বাংলাদেশ বর্তমান দলের একমাত্র ক্রিকেটার তিনিই!
অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যে চারটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ তার সবকটাতেই ছিলেন মাশরাফি। যিনি আসন্ন সিরিজে খেলছেন না। তবে টেস্ট দলে না থাকলেও সতীর্থদের সঙ্গে ঠিকই ক্যাম্পে আছেন তিনি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা মুশফিক-তামিমদের দেখছেন খুব কাছ থেকে। কয়েক দিনের এই দর্শন থেকেই মাশরাফির উপলব্ধি- ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষের সিরিজে দারুণ কিছু করে দেখাতে পারে বাংলাদেশ।
কীভাবে এই দারুণ অর্জনটা হবে সেটার মন্ত্রটা অবশ্য মাশরাফি জানেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভালোর করার জন্য সতীর্থদের পরামর্শ দিয়েছেন ওয়ানডে অধিনায়ক। কাল ক্রিকেটীয় ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মাশরাফি জানালেন সতীর্থদের প্রতি তার প্রত্যাশার কথা। তাকিয়ে আছেন দলের অভিজ্ঞ চার তারকা সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দিকে। মাশরাফি মনে করেন এই চতুষ্টয় নামের প্রতি সুবিচার করতে পারলে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো কঠিন কিছু হবে না। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার কাছে যে তারা একেবারেই নতুন।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দ্যুতি ছড়িয়েছেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা। অজিদের বিপক্ষে পুণরায় নিজেদের প্রমাণ করতে পারলে আসন্ন সিরিজেও জয় সম্ভব বলে মনে করছেন মাশরাফি। বলেছেন, ‘আশা করি, আমাদের চার অভিজ্ঞ খেলোয়াড় এবার নিজেদের মূল্য বোঝাতে সক্ষম হবেন। তারা এমন উদাহরণ তৈরি করবেন, যেটা তরুণরা অনুসরণ করে এগিয়ে যাবে।’
অস্ট্রেলিয়াকে কিভাবে হারানো যায়, সে উপায়টা বাতলে দিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক। বলেছেন, ‘তামিম রয়েছে ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে। যদি সে এবং ইমরুল কায়েস মিলে ভালো একটা সূচনা এনে দিতে পারে তাহলে সেটা হবে একধাপ এগিয়ে যাওয়া। এরপর আমাদের রয়েছে সাকিব এবং মেহেদী হাসান মিরাজের স্পিন। যদি পেসারদের মধ্যে একজনও অন্তত একটি কিংবা দুটি স্পেল ভালো করতে পারে, অন্তত তিনটি কিংবা চারটি উইকেট নিতে পারে। তাহলে অবশ্যই আমাদের পক্ষে একটা সম্ভাবনা তৈরি হবে। এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে অবশ্যই আমরা ভালো কিছু প্রত্যাশা করতে পারি।’
মাশরাফি মনে করেন, বাংলাদেশ এখন আগের চেয়ে শক্তিশালী দল। মানসিকভাবেও অনেক এগিয়ে। বিশেষ করে গত বছর ইংল্যান্ডকে হারানো এবং শ্রীলঙ্কায় গিয়ে শততম টেস্টে জয় বাংলাদেশের মানসিক শক্তি অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। মাশরাফি বলেন, ‘লড়াই করাই এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি। হার কিংবা জয়, এখন বাংলাদেশ লড়াই করতে জানে। যে কারণে এখন আমরা একটা ভালো ফলাফল আশা করতে পারি।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ উপলক্ষে বাংলাদেশ যে প্রস্তুতি নিয়েছে, মাশরাফির মতে যে কোনো টেস্ট সিরিজের আগে এটা সেরা প্রস্তুতি। ওয়ানডে দলপতি বলেছেন, ‘আমার মনে হয় দলের ক্রিকেটাররা সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে তাদের মানসিকতা নিয়ে। গত ১৫ বছরে আমাদের সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয় ছিল এটাই। তবে সুযোগ প্রতিদিনই আসে না। এটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
"