শরীফুল রুকন, চট্টগ্রাম
টেকনিকে মনোযোগী সাব্বির
বোলার শফিউল প্রস্তুতি ম্যাচে লেটার মার্কসহ পাস। কিন্তু সামর্থ্যরে পুরো প্রমাণ দিতে পারেননি ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তা পারবেন? প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ১০ রানে আউট সাব্বির উত্তরটা দিলেন, ‘চেষ্টা করব অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দুটি যেন ভালো পারফর্ম করতে পারি। ভালো খেলতে পারলে আমরা জিতব।’
সাব্বির রহমানের পুরনো অভ্যাস ‘মেরে খেলা’ বাদ যায়নি টেস্টেও। কিন্তু টেস্ট মানে তো মেরে খেলা নয়। উইকেট ধরে রেখে খেলতে হবে। অভ্যাস করতে হবে বল ছাড়ারও। বিষয়গুলো বোঝেন সাব্বির রহমানও, ‘টেকনিক নিয়ে একটু কাজ করছি। টেকনিক বলতে, ব্যাক লিফট নিয়ে কাজ করছি। সামনে-পেছনে থ্রো ডাউন নিয়ে কাজ করছি। থ্রো ডাউনটা ব্যাটিংয়ের খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। সামনের বল বা পেছনের বলে কীভাবে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া যায়, কীভাবে ছাড়তে হয়, এসব আর কি।’
প্রাথমিকভাবে এক মাসের জন্য বাংলাদেশের ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে যোগ দিয়েছেন মার্ক ও’নিল। নতুন কিছুর চেষ্টায় গুরুর কাচ থেকে কোনো দীক্ষা পেয়েছেন কি না-প্রশ্নে কাল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সাব্বির বললেন, ‘ব্যাক লিফটের সমস্যাটা নিয়ে কাজ করছি উনার সঙ্গে। তিনি নরমাল কিছু টেকনিক সমস্যা নিয়ে কাজ করেছেন। ব্যাটের গ্রিপ নিয়ে। সামনের বল, পেছনের বল কীভাবে ফেস করতে হয় তা নিয়ে কাজ করছি। ধৈর্য, দায়িত্ব নিয়ে কীভাবে লম্বা ইনিংস খেলা যায় তা নিয়ে ওনার সঙ্গে কাজ করছি।’
সাব্বির রহমান বললেই তার পরিচয় চলে আসত ‘টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান’। সেই সাব্বির রহমান এখন বাংলাদেশ দলের টেস্ট একাদশেরও গর্বিত সদস্য। নিজের ব্যাটিং নিয়ে আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত সাব্বির বলেন, ‘পরিস্থিতি অনুযায়ী শট খেলতে হবে। প্রথম বলে আক্রমণাত্মক হলে তো চলবে না। বুঝতে হবে উইকেট কেমন, ওদের বোলার, ওদের পরিকল্পনা কেমন, সবকিছু ভেবেই খেলতে হবে। যেহেতু আমি আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান, সেভাবে খেলব যেভাবে খেলে আসছি। তবে চেষ্টা করব পরিস্থিতি বুঝে খেলার।’
ওয়ানডেতে এখন তিনে ব্যাট করছেন সাব্বির রহমান। সবশেষ টেস্টে ব্যাট করেছেন চারে। প্রস্তুতি ম্যাচেও খেলেছেন চারে। তবে তার কথায় ইঙ্গিত মিলল, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে পারেন একটু নিচেও, ‘পজিশন নিয়ে চিন্তা কিছু করি না। দল যেখানে খেলায়, সেখানেই খেলব। কোচ এখনো কিছু বলেননি। হয়তো ছয় বা পাঁচেও খেলতে পারি।’
গত বছর চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ হেরেছিল ২২ রানে; আরেকপ্রান্ত থেকে অসহায় চোখে এ দৃশ্য দেখেছেন ওই টেস্টে অভিষেক হওয়া সাব্বির। ম্যাচটির প্রসঙ্গ তুলতেই বিষাদের ছায়া পড়ে তার মুখে, ‘অবশ্যই খারাপ লাগে। অভিষেকে ম্যাচ জেতাতে পারলে ভালো লাগত। প্রায় শেষ পর্যন্ত গিয়েছিলাম আমরা। ম্যাচ জেতার আশা ছিল, হয়নি।’
এদিকে মুশফিক একাদশ আর তামিম একাদশের মধ্যেকার ম্যাচে জয়-পরাজয় কিছুই নেই। চট্টগ্রামে টাইগারদের প্রস্তুতি ম্যাচের তৃতীয় দিনে জয়ী হলো বৃষ্টি। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গতকাল শুক্রবার একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। সকাল থেকেই ছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। দুপুরে শুরু হয় মুষলধারে বর্ষণ। শেষ পর্যন্ত দুপুর পৌনে ১টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃতীয় দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। তবে বেলা ২টার দিকে ফুটবল খেলতে মাঠে নামেন সবাই।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ১৪০ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে মুশফিক একাদশ। শান্ত সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন। মুশফিক করেন ৩০ রান। তামিম একাদশের শফিউল ইসলাম ১৭ রানে ৫ উইকেট নেন। জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৮৩ রানে অলআউট হয় তামিম একাদশ। সর্বোচ্চ ৭৩ করেন মুমিনুল হক। এ ছাড়া নাসির হোসেন ৬২, তানবীর হায়দার ৫১ এবং তামিম ইকবাল ২৯ রান করেন। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ইমরুল কায়েসের উইকেট হারিয়ে ২৪ রান তুলে দিন শেষ করে মুশফিক একাদশ। শেষ দিন তো খেলাই হয়নি। অবশ্য বৃষ্টির শঙ্কা মাথায় নিয়েই তিন দিন দিনজুড়ে অনুশীলন করেছেন মুশফিকরা। তিন দিনের ম্যাচের দুই দিনে বৃষ্টি একটু বাগড়া দিলেও হয়েছে খেলা। কাল প্রচারমাধ্যমকে সাব্বির জানালেন, যে কাজে চট্টগ্রাম আসা তার ৮০ ভাগই পূরণ হয়েছে।
"