ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৪ জুলাই, ২০১৭

আরো নিখুঁত হতে চান রাব্বি

আগামী এক বছরের জন্য নিজেদের তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। বোলার কিংবা ব্যাটসম্যান সবাই এখন দলে জানেন, দলে জায়গা পেতে হলে কঠোর পরিশ্রমের বিকল্প নেই। সেই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ দলের পেসারদের নিয়ে কাজ শুরু করেছেন বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ। এবার তার সঙ্গে বোলিং নিয়ে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন জাতীয় দলের পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি। এরই মধ্যে বোলিংয়ের ব্যালেন্সেও অনেকখানি উন্নতি করেছেন এই ডানহাতি পেসার। কাজ করছেন রিভার্স সুইং নিয়েও।

রোববার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) লাউঞ্জে বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজের বোলিং-ব্যাটিংসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন রাব্বি, ‘এখন আমাদের স্পট বোলিং নিয়ে কাজ চলছে। তাই এখনো পুরো ছন্দে বল করা হয়নি। আমি মূলত যেসব বিষয় জানি, তা নিখুঁতভাবে করার কাজটাই এখন করছি।’

বাংলাদেশ দলে ওয়ালশ আর রাব্বি অনেকটা একই সময়ে যাত্রা করেছেন। গত সেপ্টেম্বরে বোলিং কোচ হয়ে বাংলাদেশে আসেন ওয়ালশ। অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে রাব্বির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু।

দলে জায়গা পাওয়ার পর থেকে রাব্বি খেলেছেন ৫ টেস্ট। কাছ থেকে দেখছেন ওয়ালশকে। প্রকাশ করেছেন ওয়ালশ বিষয়ে নিজের মুগ্ধতাও। জানালেন, কথা দিয়েই অনেক অনুপ্রেরণা জোগাতে পারেন ওয়ালশ। ‘এত বড় মাপের ক্রিকেটার। তার কথাইতো দারুণ। আমরা অনেক উপকৃত হই। সবক্ষেত্রেই আমরা উপকৃত হয়েছি। তিনি অনেক ফ্রেন্ডলি। এজন্য কাজ করতে আমাদের সুবিধা হয়।’

‘আমরা পেশাদার ক্রিকেটার। সাত-আট বছর ধরে খেলছি। কম-বেশি প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ই জানেন তাদের কী করতে হবে। এখানে কোচ সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেন আত্মবিশ্বাস জুগিয়ে। তিনি একজন কিংবদন্তি, তার অভিজ্ঞতাগুলো আমাদের সঙ্গে যেভাবে ভাগভাগি করেন, আমরা অনেক উপকৃত হচ্ছি।’

অনুপ্রেরণার বাইরে টেকনিক্যালিও ওয়ালশের কাছ থেকে শিখেছেন রাব্বি। ৮-৯ বছর ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে ঢুকেছেন জাতীয় দলে। ওয়ালশের সঙ্গে এই কয়েক মাস কাজ করেই যোগ করেছেন নতুন অস্ত্র।

‘ওয়ালশের সঙ্গে কাজ করে আমার ব্যালান্সে অনেক উন্নতি হয়েছে। বোলিং ব্যালান্সটা ভালো হয়েছে আগের চেয়ে। সুইং ভালো হয়েছে। আমি আগে ইনসুইং পারতাম না, এখন এটা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।’

আপাতত স্পট বোলিং দিয়ে এবারের বোলিং সেশন শুরু করেছেন রাব্বি। তবে নতুন কিছুর চেয়ে পুরনো অস্ত্রগুলোকেই বেশি শানানোতে মনোযোগ দিচ্ছেন তিনি, ‘ওয়ালশ এখন আমাদের স্পট বোলিং নিয়ে কাজ করছেন। কন্ডিশন ক্যাম্পের পর ফুল রিদমে এখনো বোলিং শুরু করা হয়নি। আস্তে আস্তে হবে। নতুন কিছু নয়, আমি এখন যে জিনিসগুলো জানি, সেসব জিনিস আরো নিখুঁত করতে চাই। আপাতত আমার লক্ষ্য এটিই।’

রিভার্স সুইং করতে পারেন বলে ঘরোয়া ক্রিকেটে আলাদা কদর আছে রাব্বির। জানালেন, এটি আরো নিখুঁত করা নিয়ে কাজ করবেন তিনি, ‘রিভার্স সুইং অনেক দরকারি। ভালো জায়গায় বল রেখে রিভার্স করানোটা গুরুত্বপূর্ণ, যেটা ব্যাটসম্যানকে বিপাকে ফেলে। আগেও পারতাম রিভার্স সুইং। এখন চেষ্টা করছি ভালো জায়গায় রেখে রিভার্স করাতে। হয়তো ৭০-৭৫ ভাগ সময় ভালো জায়গায় রাখতে পারতাম। সেটা ৯০-৯৫ ভাগ হলে ভালো হয়। আমি এই সময়ে এই কাজগুলো গুরুত্বসহকারে শিখতে চাই।’

আউটসুইঙ্গারটা তার সহজাত। ইনসুইঙ্গার শিখছেন ওয়ালশের হাত ধরে। সঙ্গে রিভার্স সুইংটাও পুরোপুরি আয়ত্ত করতে পারলে রাব্বি হয়ে উঠতে পারেন দলের সম্পদ।

এ ছাড়া টেস্টে লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিংয়ে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন রাব্বি। গত নিউজিল্যান্ড সফরেই টপঅর্ডার যেখানে ব্যর্থ ছিল, সেখানে নিজের ব্যাটিংস্বত্বার জানান দেন এই পেসার। তাই কিউইদের বিপক্ষে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে আরো ভালো করার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে রাব্বির।

কথা বলেন নিজের ব্যাটিং নিয়েও, ‘খেলাধুলা যখন শুরু করি, তখন ব্যাটিং ভালোই করতাম। কিন্তু ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেতাম না, আর পেলেও সেটা ছিল শেষের দিকে। এখন ব্যাটিং করতে নামলেই আত্মবিশ্বাস ফিরে পাই। দলের সবাই জানে আমি ব্যাটিং করতে পারি।’

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো ব্যাটিং করার পর থেকেই হাথুরুসিংহের আস্থা অর্জন করেছেন রাব্বি। তাই ব্যাটিং নিয়ে আরও কাজ করতে চান তিনি, ‘আমার ওপর কোচের আস্থা জন্মেছে। তার বিশ্বাস জন্মেছে যে, নাইটওয়াচ ম্যান হিসেবে আমাকে ব্যাটিংয়ে নামালে আমি কিছু করতে পারব। এই বিষয়গুলো আমাকে আরো আত্মবিশ্বাসী করেছে। তাই আমি ব্যাটিং নিয়ে আরো কাজ করতে চাই।’

হাথুরুসিংহের ক্লাসে শর্ট বলগুলোকে মোকাবিলা করতে হয়। এমনকি নেটেও সেভাবে প্রস্তুতি নিতে হয় বলে জানালেন এই পেসার, ‘নেটে আমাকে অনেক শর্ট বল খেলতে হয়। কিভাবে বল ছাড়তে হবে, কিভাবে সোজা ব্যাটে খেলতে হবে-সেসব কোচ খুব ভালোভাবে বুঝিয়ে দেন। সবমিলিয়ে কোচের সঙ্গে ব্যাটিং নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। আশা করছি ভবিষ্যতেও হবে।’রাব্বির আশাটা পূরণ হোক এটাই প্রত্যাশা ভক্তকূলের।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist