ক্রীড়া ডেস্ক
সমঝোতার ইঙ্গিত অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে
অচলাবস্থা নিরসনের সব সম্ভাবনায় যেন একে একে শেষ হয়ে যাচ্ছিল। এর মধ্যেই আলো হয়ে সামনে এলো টানা দুদিন ধরে আলোচনার খবর। তবে কি শেষ পর্যন্ত শান্তি ফিরতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড আর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের সংগঠন-এসিএর প্রধান নির্বাহী অ্যালিস্টার নিকোলসনের মধ্যেকার এক বৈঠক যেন সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। টেবিলের দুই দিকে মুখোমুখি অবস্থানে এই দুজনের বসার ফলটা অবশ্য ভালোই হতে যাচ্ছে বলে শোনা গেছে। সেই সঙ্গে গত কিছুদিন ধরে জমতে থাকা বরফও গলতে শুরু করেছে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা বোর্ড-ক্রিকেটার দ্বন্দ্ব মিটে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অবশ্য দুই পক্ষের সমঝোতা চুক্তি কবে হবে, সেটি এখনো জানা যায়নি।
গত ৩০ জুনের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ২৩০ জন শীর্ষ ক্রিকেটার ‘বেকার’। কেন্দ্রীয় চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর লভ্যাংশ ইস্যুতে সমঝোতা না হওয়ায় দুই পক্ষের মধ্যে নতুন চুক্তি করা সম্ভব হয়নি। তবে এতে ক্ষতির মুখে পড়েছে খেলোয়ারড়রাও। সেই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার প্রায় এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর নতুন করে আলোচনা শুরু করে দুই পক্ষ। তপ্ত আবহাওয়ায় এক পশলা শীতল বৃষ্টির মতো এই বৈঠকে অন্তত দুই পক্ষ ঠান্ডা মাথায় বসে নিজেদের অবস্থানটা একে অন্যের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছে। সাদারল্যান্ড ও নিকোলসন এ বৈঠকে যোগ দেওয়ায় এটিকে আগেরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি ফলপ্রসূ মনে হচ্ছে।
বৈঠকে নাকি ক্রিকেটারদের পক্ষ থেকে দাবি করা লভ্যাংশের অঙ্কটা কমিয়ে নিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে। এ তথ্য তো অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের জন্য একটা সুখবরই। অস্ট্রেলীয় গণমাধ্যমগুলোও জানাচ্ছে, শিগগিরই এসব নিয়ে সমঝোতার একটা সম্ভাবনা আছে। দুই পক্ষই ‘এক চুলও ছাড় দেব না’ এমন অবস্থান থেকে অন্তত সরে এসেছে।
ইতিবাচক ইঙ্গিতটা দিয়েছেন এসিএর প্রধান নির্বাহী নিকোলসন, ‘সাদারল্যান্ডের সঙ্গে এ বৈঠকটাই আশা দেখাচ্ছে। দুই পক্ষই আশা করি একটা আস্থার জায়গায় নিজেদের নিয়ে যেতে পারবে।’
সাদারল্যান্ড ছাড়াও আরো কয়েকজন পুরো বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় আশার সঞ্চার হয়েছে। এদের মধ্যে আছেন নব্বইয়ের দশকে নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে খেলা পেসার নিল ম্যাক্সওয়েল ও সাবেক অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক মার্ক টেলর। এই দুজন দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছেন।
এদিকে সমঝোতা চুক্তি সই না করাতে বেকার হয়ে গেছেন স্টিভেন স্মিথ-ডেভিড ওয়ার্নাররা। আর তাতেই ১২ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার হারিয়েছেন অসি ক্রিকেটাররা! যা বাংলাদেশি টাকায় সাড়ে সাত কোটির বেশি! মাত্র দুই সপ্তাহেই এই টাকা হারিয়েছেন ধর্মঘটে যাওয়া অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটাররা। যদিও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কিন্তু সেই অর্থ অপচয় করেনি। তৃণমূল পর্যায়ের ক্রিকেট উন্নয়নে কাজে লাগাতে ব্যয় হয়েছে সেই অর্থ। এখন সবকিছু ভুলে কখন সমস্যা সমাধান করে মাঠে ফিরে আসেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা তাই দেখার অপেক্ষা।
"