খেলা ডেস্ক
তামিমের ‘অভিষেক’ আজ
নিউজিল্যান্ড সফরের অন্তিম প্রহরে চোটের মিছিল লেগে গেছে বাংলাদেশ দলে। ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম ছিটকে গেছেন ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট থেকে। আজ থেকে শুরু হওয়া কিউইদের সঙ্গে টাইগারদের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে অধিনায়কত্ব করবেন তামিম ইকবাল। মুশির ইনজুরিই মূলত অগ্নিপরীক্ষায় ফেলে দিচ্ছে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ককে।
কাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে দলপতির চাপের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই একগাল হেসে দিলেন তামিম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় দশ বছর হয়ে যাওয়া টাইগার ওপেনার অবশ্য ‘চাপ’ শব্দটাকে সেভাবে পাত্তাই দিলেন না। কিন্তু এত দিন পর এসে অন্য রকম এক পরীক্ষার সামনে তিনি। এই প্রথম যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হবে। সেটিও টেস্টে। অথচ এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তিন তারকা ক্রিকেটারকে দলে পাচ্ছেন না তিনি। মুখে চাপের কথা স্বীকার না করলেও তামিম যে চাপে আছেন এটা বলাটা একেবারেই অমূলক হবে না।
তামিম অবশ্য দায়িত্বটা ঠিকঠাক পালন করার প্রতিশ্রুতি দিলেন, ‘চাপের কিছু নেই। প্রথমে আমাকে সহ-অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এটা ভেবেই, অধিনায়কের কিছু হলে আমাকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমার যে দায়িত্ব, ঠিকমতো করতে পারলে তা সবার জন্য ভালো হবে। আমার দিক দিয়ে চেষ্টা করব সবকিছু ঠিকভাবে করা। একটা পরিকল্পনা তো থাকবেই। পাশাপাশি ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ীও পরিকল্পনা করতে হবে। সব সময় আমার পরিকল্পনা কাজে দেবে না এমনও নয়। তবে ঠিক উদ্দেশ্য নিয়ে আমি পরিকল্পনা করেছিলাম কি না, সেটাই আমার কাছে গুরুত্ব¡পূর্ণ।’
ঘরোয়া ক্রিকেটে অবশ্য অনেক দিন ধরেই অধিনায়কত্ব করেছেন। গত প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তার নেতৃত্বে। বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসেরও নেতৃত্ব দেন। যদিও অধিনায়ক তামিম কখনোই সেভাবে আলোচনায় আসেননি। প্রয়োজনও পড়েনি। কিন্তু এবার এমন এক সময়ে তামিমের অধিনায়ক সত্তাটার ডাক পড়ল, দল আসলেই যখন সংকটে। তিনজন খেলোয়াড়কে হারিয়ে ফেলার একটা মানসিক ধাক্কা তো আছেই, সফরটাকে লম্বা লাগছে এখনো একটা ম্যাচও বাংলাদেশ জেতেনি বলে। তা ছাড়া সফরের শেষ ম্যাচ। এটাও মানসিকভাবে চ্যালেঞ্জের।
এত এত চ্যালেঞ্জ ছুটে আসছে। তবে তামিম ভালো করে জানেন, অ্যাটাক ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স। ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে আক্রমণাত্মক এক অধিনায়ককেই সবাই দেখবে বলে জানালেন, ‘আমার জন্য এটা সুযোগ নিজের অধিনায়কত্ব কেমন তা প্রমাণের। আমি চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। তবে আমি যে রকম অধিনায়কত্ব করি, সব পরিকল্পনা ঠিকমতো কাজে লাগলে দেখতে ভালো লাগে। পরিকল্পনা কাজে না লাগলে অন্য রকম হয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব আমার জন্য নতুন, ঘরোয়া ক্রিকেটে যদিও অনেক দিন করেছি। আমার জন্যও এটা শেখার সুযোগ। আমার মানসিকতা আক্রমণাত্মক। ব্যাটিং ওভাবেই করতে পছন্দ করি। অধিনায়ক হিসেবেও আমি যতটা সম্ভব ইতিবাচক থাকতে চাই।’
এক দিক দিয়ে অবশ্য টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে ‘ওয়ার্ম আপ’ হয়ে গেছে তার। গত টেস্টে দীর্ঘ সময় নেতৃত্ব দিয়েছেন, যদিও কাগজে-কলমে ম্যাচটির অধিনায়ক হিসেবে মুশফিকের নামই লেখা থাকবে। অধিনায়ক তামিম এবার তুলনামূলক বেশি সময় পাচ্ছেন পরিকল্পনা করার। তিনিও নিজেও একটা ছাপ রেখে যেতে চান, ‘ম্যাচের মাঝখানে অধিনায়ক হয়ে গেলে পরিকল্পনা সাজানো কঠিন হয়। যখন আপনি বুঝতে পারবেন পরের ম্যাচে অধিনায়ক, কাজগুলো সহজ হয়ে যায়। আমরা টিম মিটিংয়ে যেসব পরিকল্পনা করছি, চিন্তা করছি, খেলা শুরু হওয়ার আগেও করব, ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারলে তবে ভালো ফল আসবে। আমি অধিনায়ক হলেও সবার সহযোগিতা তো লাগবে। আমি পরিকল্পনা বললাম, বোলার অন্যভাবে বল করল, তাহলে তো হবে না। সবাই এক পথে হাঁটতে হবে। তাহলে আমার কাজটা সহজ হয়ে যাবে, বাকি দশজনেরও জন্যও।’
"