ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ১১ জুলাই, ২০২০

বাফুফের মেডিকেল গাইডলাইন প্রস্তুত

এক, দুই, তিন করে চার মাস কেটে গেল। আর কত? আর সব ক্রীড়াবিদের মতো প্রশ্নটা এখন ফুটবলারদেরও মুখে মুখে। করোনা মহামারির মধ্যেও সবকিছু যখন খুলে দেওয়া হয়েছে, তখন ফুটবলের দুয়ার খুলতে সমস্যা কোথায়?

বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এরই মধ্যে বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব শুরু করার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। এই বাছাই পর্ব বাংলাদেশের জন্য আবার এশিয়ান কাপে নাম লেখানোরও প্রক্রিয়া! এ অবস্থায় করোনার ভয়ে আরো কিছুদিন ঘরবন্দি থাকা মানে দেশের ফুটবলেরই ক্ষতি। ব্যাপারটা ভালোভাবেই আঁচ করতে পেরেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বকে সামনে রেখে ফুটবলীয় কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে তাই গাইডলাইন তৈরির কাজ শেষ করেছে দেশের ফুটবলের অভিভাবক সংস্থাটি। ফিফার গাইডলাইন মেনেই ফেডারেশনের মেডিকেল কমিটি এটি প্রস্তুত করেছে। এতে করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলে জাতীয় ফুটবল দলের মাঠে ফেরার প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে বাস্তবে পরিণত হচ্ছে।

বাফুফে মেডিকেল কমিটির উপ-চেয়ারম্যান ডাক্তার আলী ইমরান এরই মধ্যে অনুশীলন ক্যাম্পে জামাল ভূঁইয়া-মামুনুল ইসলামদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গাইডলাইন জমা দিয়েছেন। আগামী ৮ অক্টোবর সিলেটে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। সেজন্য আগস্টের শেষ দিকে প্রস্তুতি শুরু করার কথা রয়েছে জেমি ডের দলের।

ডাক্তার আলী ইমরান গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘যদি আমরা চারপাশের নেতিবাচক প্রভাবগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি এবং খেলোয়াড় ও অফিশিয়ালরা মাস্ক-গ্লাভস পরে, সাবান-স্যানিটাইজার দিয়ে নিয়মিত হাত পরিষ্কার করে, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলে ও ভিড়ের মধ্যে না যাওয়ার মতো নির্দেশনাগুলো মেনে চলে; তবে কোভিড-১৯ মুক্ত পরিবেশ পাওয়া সম্ভব।’

সকল ফুটবলার, কোচ, কর্মকর্তা ও সাপোর্ট স্টাফের পাশাপাশি ক্যাটারিং সার্ভিস, স্টেডিয়াম ও ডরমেটরির স্টাফদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করানোর সুপারিশও করেছে মেডিকেল কমিটি। এছাড়া ফুটবলারদের বহনকারী যানবাহনের চালক ও সহকারীদের করোনা পরীক্ষা করানোর প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়ে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) এলিট প্যানেলের এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা যোগ করেছেন, ‘কোনো আক্রান্ত ফুটবলার কিংবা কোনো আক্রান্ত ব্যক্তি জাতীয় দলের সঙ্গে থাকলে পুনরায় প্রশিক্ষণ শুরু করার কোনো সুযোগ নেই।’

তিনি আরো জানিয়েছেন, ফিফা তাদের নিজস্ব গাইডলাইন চূড়ান্ত করার আগে ছয়টি কনফেডারেশন, মেডিকেল অফিসার ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে। ফুটবলের শীর্ষ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি স্পষ্টভাবে বলেছে যে, নিজ নিজ দেশের মহামারি পরিস্থিতি ও বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবার ভিত্তিতে ফেডারেশনগুলো তাদের গাইডলাইন প্রণয়ন করবে।

পুরো দলের একসঙ্গে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানোর পরিবর্তে অনুশীলন ক্যাম্প শুরুর কমপক্ষে ৭২ ঘণ্টা আগে ছোট ছোট দলে ভাগ করে খেলোয়াড়দের পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তার আলী ইমরান। যেখানে অনুশীলন হবে, সেখানে ভ্রমণ করার আগে ফুটবলারদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার পক্ষপাতী তিনি। তার মতে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যেতে পারে এবং বাফুফে চাইলে ওই দিনেই রিপোর্ট পাওয়া যেতে পারে।

মেডিকেলে কমিটি তাদের গাইডলাইনে আরেকটি সুপারিশ করেছে। সেটি হলো কারো শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অবশ্যই তাকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। সব ঠিকঠাক থাকলে পাঁচ মাসের করোনা-নির্বাসন কাটিয়ে আগস্টে ফিরবে দেশের ফুটবল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close