ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৫ জুন, ২০২০

দৌড়ে এগিয়ে দুই স্বদেশি

নারী ক্রিকেট দলের হেড কোচ নিয়োগ

গত মার্চে নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ হতেই জাতীয় দলের হেড কোচ অঞ্জু জৈনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এত দিন নতুন কোচ নিয়োগে তাড়াহুড়ো ছিল না বোর্ডের। কিন্তু লকডাউন শিথিল হতেই সালমা খাতুন-জাহানারা আলমদের নতুন গুরু খুঁজে বের করার কাজে লেগে পড়েছে বিসিবি। পরিস্থিতির উন্নতি হলে মাস খানেকের মধ্যে নিয়োগ চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থাটি।

জানা গেছে, অভিজ্ঞ আটজন বিদেশি কোচের পাশাপাশি স্থানীয় দুই কোচ বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের দায়িত্ব নিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বিসিবির কাছে বায়োডাটাও পাঠিয়েছেন তারা। করোনা পরিস্থিতির কারণে সব ধরনের ক্রিকেট বন্ধ থাকায় কিছুটা সময় নিয়েই ১০ জন থেকে হেড কোচ চূড়ান্ত করবে বিসিবি। এবার দীর্ঘমেয়াদে নিয়োগের কথাই ভাবা হচ্ছে।

নারী দলের কোচের চাকরি পেতে অতীতে এত সাড়া পড়েনি। তবে জাহানারা-রুমানারা এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর তাদের ক্রিকেট নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে সবার। বিদেশি কোচদের মধ্যে যারা আবেদন করেছেন, তাদের প্রত্যেকেরই জাতীয় দলের হেড কোচ হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। অবশ্য দেশি দুই কোচ সম্পর্কে ধারণা দিতে সম্মত হননি কেউই।

যদিও নারী ক্রিকেটের শুরুর দিকে ছিলেন দেশি কোচরাই। আন্তর্জাতিক মঞ্চে টিম টাইগ্রেসের পথ চলার শুরুর দিনগুলোতে কাজ করেছেন জাফরুল এহসান। ২০১৬ সালে আরেক অভিজ্ঞ কোচ সারোয়ার ইমরান কাজ করেছেন মেয়েদের সঙ্গে। তার আগে ২০১১ সালে এক মাসের জন্য ফিল্ডিং কোচ হিসেবে কাজ করেছিলেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। তার অধীনে অল্পদিনেই দারুণ উন্নতি করেছিল বাঘিনিরা।

এ ব্যাপারে ওয়ানডে দলের অধিনায়ক রুমানা আহমেদ কাল গণমাধ্যমকে বললেন, ‘দেশি-বিদেশি কোচের মধ্যে তেমন পার্থক্য দেখি না। একেকজন কোচ একেক থিওরি নিয়ে কাজ করেন। দেশি কোচ হলে যেটা হয় তারা আমাদের ভালো বোঝেন। আমাদের সক্ষমতা ও স্ট্যামিনা সম্পর্কে ধারণা রাখেন। বিদেশি কোচের ক্ষেত্রে নতুন করে সব শুরু করতে হয়। কারণ অতটা ধারণা তাদের থাকে না। প্র্যাকটিস এবং ম্যাচ দেখে বুঝতে পারেন কে কেমন। আমাদের নতুন করে প্রমাণ করতে হয়।’

পুরুষদের ক্রিকেটের মতো নারীদের বেলাতেও দেখা যাচ্ছে কোচ বদলের হিড়িক। গত ৬ বছরে তিনজন বিদেশি ও একজন দেশি হেড কোচ কাজ করেছেন সালমা-রুমানাদের সঙ্গে। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কান কোচ চম্পকা গামাগে দায়িত্ব নেন। ২০১৬ সালের মে মাসে ২ বছরের মেয়াদ শেষ হলে আর চুক্তি বাড়ায়নি বিসিবি। অন্তর্বর্তী কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন সারোয়ার ইমরান। আয়ারল্যান্ড সফরে বাঘিনিদের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার ডেভিড ক্যাপেল কাজ করেন দেড় বছর। ২০১৮ সালের মে মাসে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ছিল তার শেষ অ্যাসাইনমেন্ট। পরে নিয়োগ দেওয়া হয় ভারতীয় নারী দলের সাবেক ক্রিকেটার অঞ্জুকে। প্রথম অ্যাসাইনমেন্টেই বাজিমাত করেন তিনি। তার অধীনে মালয়েশিয়ার মাটিতে বাংলাদেশ পায় স্বপ্নের এশিয়া কাপ শিরোপা। অথচ এশিয়া কাপের আগে দলকে খুব বেশি অনুশীলন করানোর সময় পাননি অঞ্জু। খেলোয়াড়দের দাবি, ক্যাপেলের পরিশ্রম ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো কঠিন কন্ডিশনে খেলে আসার কারণেই এশিয়া কাপে ভালো করেছে দল।

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টিম টাইগ্রেসের জয়হীন থাকার পেছনে কোচের যথাযথ পরিকল্পনার ঘাটতি ছিল, এমন তথ্য ছিল বিসিবির কাছে। বাংলাদেশ নারী দলের চাকরি হারানো অঞ্জু এখন যোগ দিচ্ছেন ভারতের বারোদা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের নারী দলের হেড কোচ হিসেবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close