ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৯ মে, ২০২০

মনোবল বাড়ানোতেই করোনা জয়

ধ্যানের মাধ্যমে মানসিক শক্তি বাড়িয়ে করোনাকে জয় করলেন ক্রিকেট কোচ আশিকুর রহমান। হাসপাতালে ৮ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তার করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে। গত ১২মে ভাইরাসে পজিটিভ হলে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।

গণমাধ্যমকে সুখবরটি আশিক নিজেই দিয়েছেন। তবে আরেকবার তার নমুনা নেওয়া হয়েছে। তৃতীয় দফা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসলেই হাসপাতাল ছেড়ে সবুজবাগে নিজ বাসায় যেতে পারবেন। পরে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে আশিককে।

গত ১২মে কাশি ও তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন আশিক। অবস্থা জটিল হওয়ায় কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন দেওয়া হয়। তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের নমুনা নেওয়া হয় সঙ্গে সঙ্গেই। তাদের ফল নেগেটিভ আসে।

মুগদা জেনারেল হাসপাতালের ১২১৫ নম্বর কেবিনে দুই সপ্তাহ ধরে আছেন আশিক। সেখানে নিয়মিত মেডিটেশন বা ধ্যান করছেন। এই ক্রিকেট প্রশিক্ষক বললেন, ‘করোনা জয় করতে মনোবল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মনের শক্তি বাড়ানোর উপায় হলো ধ্যান। যখন অক্সিজেন চলত তখনও ধ্যান করতাম। এটি খুব কাজে দিয়েছে। যার ভেতরে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করবে, সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ আশিক আরো বলেন, ‘হাসপাতালে কিছু আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাও চলেছে। এলাচ, দারুচিনি, কালিজিরা, লবঙ্গ ও আদা কেটলির পানিতে ছেড়ে গরম করে খেয়েছি। এটিও খুব কাজে দিয়েছে।’

পুরো মুগদা হাসপাতালে ভর্তি প্রায় আড়াইশ কোভিড-১৯ রোগী। আশিকের কেবিনে রয়েছেন ১২জন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ওয়ার্ডের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে সবাইকে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, ধ্যান ও যোগব্যায়াম করিয়েছেন তরুণ এ কোচ। অন্যান্য ওয়ার্ড থেকে মৃত্যুর খবর এলেও আশিক থাকাকালীন তার ওয়ার্ডে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যাননি।

আশিক বললেন, ‘মানসিক শক্তি বাড়াতে ধ্যানের বিষয়টি আমি ছড়িয়ে দিতে চাই ছোটদের মাঝে। স্কুলে স্কুলে গিয়ে ক্যাম্পেইন করাতে চাই। এখন যারা বয়সভিত্তিক দলের ক্রিকেটার তাদের নিয়ে কাজ করতে চাই। অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটারও স্নায়ুচাপে ভুগে নিজেকে প্রত্যাশিত গন্তব্যে নিয়ে যেতে পারে না। ছোট থাকতেই ওদের নিয়ে কাজ করতে পারলে লাভবান হবে দেশের ক্রিকেট। কারণ কয়েক বছর পর বয়সভিত্তিক দলের খেলোয়াড়রাই জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করবে।’

লকডাউনের শুরু থেকেই সবুজবাগে নিজের বাসায় অবস্থান করছিলেন আশিক। কিছুদিন পর অসহায় মানুষকে সাহায্য করতে বেরিয়ে পড়েন। নিজের বাসার আশেপাশের দুস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শুরু করেন। এর কিছুদিন পর বুকে ব্যথা অনুভব করেন। জ্বর ও কাশি দেখা দেওয়ায় পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যান। পরবর্তীতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে ভর্তি হন হাসপাতালে।

আশিক বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলেছেন। দীর্ঘকায় এ ডানহাতি পেসার ছিলেন দারুণ সম্ভাবনাময়। কিন্তু চোটজর্জরিত ক্যারিয়ারটা দীর্ঘায়িত করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত কোচিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগে অস্থায়ী কোচ হিসেবে নিয়োজিত আছেন আশিক। এর আগে জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের সহকারী কোচের দায়িত্বও পালন করেছেন। এছাড়া ঘরোয়া যত লিগ আছে সবখানেই কোচ হিসেবে বিচরণ রয়েছে তার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close