ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৪ এপ্রিল, ২০২০

নিউজিল্যান্ড এক ভালোবাসার নাম

বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মুষ্টিমেয় দেশগুলোর একটি নিউজিল্যান্ড। সময় যতই গড়াচ্ছে ততই বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে দেশটির ক্রিকেট। ক্রিকেট খেলুড়ে প্রায়সব দেশেই তৈরি হয়েছে কিউইদের সমর্থকগোষ্ঠী। প্রায় সবাই এখন ভালোবাসে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলকে। এই ভালোবাসা দিনে দিনান্তরে সৃষ্টি হয়নি। নির্দিষ্ট কোনো কারণেও হয়নি। নেপথ্য কারণ আছে অসংখ্য। কেন নিউজিল্যান্ডকে সবাই ভালোবাসে এর নেপথ্য বিশ্লেষণ প্রতিদিনের সংবাদের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো

নিউজিল্যান্ডের মোট জনসংখ্যা ৫০ লাখেরও কম। এর চেয়ে বেশি লোকের বসবাস বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের রাজধানীতে। রাগবির দেশটিতে ক্রিকেট কখনোই জনপ্রিয় ছিল না। এখনো জনপ্রিয়তার শীর্ষে ওঠতে পারেনি ব্যাট-বলের খেলাটি। কিন্তু দেশের বাইরে এখন কেন উইলিয়ামসন-রস টেলররা এখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। ক্রিকেট নিউজিল্যান্ডে সাধারণ একটা খেলা হলেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে তুমুল জনপ্রিয়। এ কারণেই এখানকার শিশু-কিশোররা সাকিব আল হাসান, বিরাট কোহলি, শহীদ আফ্রিদি হওয়ার স্বপ্ন দেখে।

নিউজিল্যান্ডের শিশু-কিশোররাও স্বপ্ন দেখে একজন কেন উইলিয়ামসন হওয়ার। কিন্তু সংখ্যাটা খুব নগণ্য। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার শিশু-কিশোর-তরুণরা শুধু কোহলি-সাকিবই নয়, হতে চান উইলিয়ামসনও। এই সংখ্যাটা নিউজিল্যান্ডের স্বপ্নাতুর সংখ্যাটার চেয়ে যোজন যোজন বেশি। কেননা উইলিয়ামসন-সাউদিরা শুধু একেকজন ক্রিকেটারই নন, এই প্রজন্মের অনেক ক্রিকেটপ্রেমীর কাছে তারা নম্রতার আরেক নাম।

বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত দুবার ফাইনালসহ মোট ১০ বার সেমিফাইনাল খেলেছে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু স্বপ্নটা শেষ অবধি অধরা হয়ে আছে তাদের। এই তো গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে শিরোপা নিঃশ্বাস দূরত্বে রেখে আসতে হয়েছে তাদের। দায়টা অবশ্য উইলিয়ামসন-গাপটিল-বোল্টদের নয়। ভাগ্য খেলেছে তাদের নিয়ে। আম্পায়ারদের কয়েকটা ভুল সিদ্ধান্তও গেছে কিউইদের বিরুদ্ধে। তবু প্রতিবাদী হয়নি দলটা।

লর্ডসের ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হারেনি নিউজিল্যান্ড। সেদিন বরং কিউইদের কাছে হেরেছে ক্রিকেট ও চেতনা। দলীয় ইনিংস এবং সুপার ওভারে ইংলিশদের সমান রান করেও আইসিসির অদ্ভুত এক নিয়মের বলি হয়েছে কিউইদের সোনালি স্বপ্ন। বেশি বাউন্ডারির নিরিখে ইংল্যান্ডের হাতে তুলে দেওয়া হয় শ্রেষ্ঠত্বের রাজদ-। মহানাটকীয় ফাইনাল শেষে ইংলিশরা শিরোপা জিতেছে ঠিকই, কিন্তু নিউজিল্যান্ড হৃদয় জিতে নিয়েছে সারা বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীদের।

এছাড়া গাপটিল-ল্যাথামরা ভালোবাসার আরেক নাম হয়ে ওঠার কারণ তাদের আচরণ। ক্রিকেটকে যে আজও ভদ্রলোকের খেলা বলা হয়, তা যেন কিউই ক্রিকেটারদের নম্রতা-কোমলতার কারণেই। ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত ক্রিকেটারদের তালিকাতেও কিউইদের নাম নেই বললেই চলে। তাদের বোর্ড পরিচালকরাও যথেষ্ট নিষ্ঠাবান। কিউইরা সর্বশক্তি দিয়ে, নিজেদের নিংড়ে দিয়ে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়াই করে ঠিকই, তবে নিয়ম-নীতির বাইরে কিছুই করে না। যার প্রমাণ, আইসিসি অ্যাওয়ার্ড চালু হওয়ার পর সবচেয়ে বেশিবার স্পিরিট অব ক্রিকেট (ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড) জয়ের রেকর্ড।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close