ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ১৬ জানুয়ারি, ২০২০

আনকোরা ফিলিস্তিনেই কাত বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ০ : ২ ফিলিস্তিন

ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে পরিষ্কার ফেভারিট বলেছিলেন বাংলাদেশের কোচ জেমি ডে। ম্যাচ শেষের স্কোরলাইনে জেমির কথা সত্যি হয়ে ধরা দিল। সেটা বাংলাদেশের জন্য অস্বস্তিকর, আর দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে আসা আনকোরা ফিলিস্তিনের জন্য তৃপ্তিকর। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের কছে ২-০ গোলে হেরেছে স্বাগতিকরা।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে কাল জামাল ভূঁইয়া-মামুনুল ইসলামরা আসলে খেই হারিয়েছে নিজেদের কৌশলের কাছে। শুরুটা নিয়ে অবশ্য খুব বেশি আপত্তি থাকার কথা নয় জেমির। লং থ্রো, সেট পিসে ফিলিস্তিনের রক্ষণকে বেশ কয়েকবার ঝামেলায় ফেলেছিল বাংলাদেশ। তবে সুযোগগুলো ছিল এলোমেলো। সেখান থেকে গোল পাওয়ার মতো শট করা হয়নি একবারও। উল্টো সুযোগটা পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে ফিলিস্তিন বাংলাদেশকে আক্ষেপে পুড়িয়েছে ২৮ মিনিটে। বাংলাদেশের বক্সের ভেতর ঢুকে গিয়েছিলেন প্রায় সবাই। রক্ষণে ছিলেন কেবল রহমত মিয়া। প্রথমে হেডে বল ক্লিয়ার করলেও একা আর সামাল দিতে পারেননি। ফিলিস্তিন মিডফিল্ডার অদায় খারুব বল পেয়ে গিয়েছিলেন। এরপর থ্রু পাসে বক্সের ঠিকানা খুঁজে পান খালেদ সালেম। তার ডান পায়ের আড়াআড়ি শটে বল জালে জড়ালে এগিয়ে যায় ফিলিস্তিন।

ওমানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ থেকে কালকের দলে তিনটি পরিবর্তন এনেছিলেন জেমি। মামুনুল ইসলাম, তপু বর্মণদের সঙ্গে নেমেছিলেন মতিন মিয়া। মামুনুল খেলেছেন ৪-১-৪-১ ফর্মেশনের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের ভূমিকায়। সেট পিস থেকে শুরুতে খানিকটা ঝলক দেখিয়েছিলেন তিনি। তবে পার্থক্যটা গড়ে দিতে পারতেন আসলে তপু। ৩১ মিনিটে তিনি যে গোল হাতাছাড়া করেছেন, তাতে তার আক্ষেপটাই বেশি হওয়ার কথা। রায়হানের লম্বা থ্রো ফিলিস্তিন ডিফেন্ডারের ফ্লিকের পর দূরের পোস্টে পেয়ে গিয়েছিলেন তপু। যে কাজটা সাধারণত ঠিকঠাক করেন, সেটাই এদিন গুলিয়ে ফেলেছেন। হেড মেরেছেন বাইরে দিয়ে। ফলে প্রথমার্ধে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকার সঙ্গে গোল হাতছাড়ার আফসোস নিয়ে মাঠ ছেড়েছে।

বিরতির পরও নিজেদের রক্ষণ সামলেই খেলছিল ফিলিস্তিন। তবে উচ্চতা আর শক্তিমত্তায় এগিয়ে থাকা অতিথি ডিফেন্ডারদের দ্বিতীয়ার্ধে আর পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। ম্যাচে ফেরার বদলে উল্টো ৫৮ মিনিটে আরেক গোল খেয়ে বসে। তাতে উজ্জীবনী শক্তিটুকুও জোটেনি জামালদের। এই গোলেও দায় এড়াতে পারবেন না তপু-ইয়াসিনরা। মোহাম্মদ দারুউইশের লম্বা বল তপুর মাথার ওপর দিয়ে গিয়ে পড়েছেন বাংলাদেশের বক্সের মাথায়। ইয়াসিন ধারে-কাছেও ছিলেন না। লায়িথ খারুবের জন্য সুযোগ ছিল সহজ। সময়ও ছিল অনেক। আশরাফুল ইসলাম রানাকে টপকালেন এক শটেই। ফিলিস্তিন ২, বাংলাদেশ ০।

জোড়া গোল হজমের পর ম্যাচে ফিরতে হলে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের নাটকীয় কিছু করতে হতো। মতিন মিয়া অনেক দিন পর একাদশে সুযোগ পেয়ে লুফে নেওয়ার মতো কিছু করতে পারেননি। ম্যাচের ঘণ্টাখানেক পার হওয়ার পর রবিউল হাসানের বদলি হয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন তিনি। সাদউদ্দিনও স্ট্রাইকারের ভূমিকায় খেলে গোলে শট করতে পারেননি একবারও।

আগেরবার যেভাবে শেষ হয়েছিল, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে বাংলাদেশের শুরুটা হলো সেখান থেকেই। ২০১৮-এর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপেও ফিলিস্তিনের কাছে বাংলাদেশ হেরেছিল একই ব্যবধানে, তবে সেবার বাংলাদেশ হেরেছিল সেমিফাইনালে।

রোববার গ্রুপ ‘এ’-তে নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। সেমিফাইনালে উঠতে সমীকরণ কী হবে সেটা অবশ্য এর আগেই জেনে যাবে বাংলাদেশ। গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে আগামীকাল শ্রীলঙ্কা ফিলিস্তিনের বিপক্ষে খেলবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close