ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৩ নভেম্বর, ২০১৯

গোলাপি বিষে নীল বাংলাদেশ

১৯ বছর আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এই ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই টেস্ট আঙিনায় পথচলা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের। অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটিং পরিপক্কতা দেখে মনে হয়েছিল, অচিরেই ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণে দাপট দেখাবে টাইগাররা। প্রায় দুই দশক আগের সেই স্মৃতি আজও দেশের ক্রিকেট অনুরাগীদের মস্তিষ্কে তরতাজা।

সেলুনগুলোতে তখনও ছিল সাদা-কালো টেলিভিশনের আধিক্য। কালের বিবর্তনে সেই সেলুনগুলোতে যুক্ত হয়েছে এয়ার কন্ডিশনার (এসি), সাদা-কালো টিভির বদলে শোভা পেয়েছে লাইট-এমিটিং ডায়োডের (এলইডি) ‘জীবন্ত দূরদর্শন’। ১৯ বছরে বদলেছে এমন অনেক কিছুই, বদলায়নি কেবল দেশি ব্যাটসম্যানদের ব্যাঙ্গাত্মক কার্যকলাপ। ব্যাটসম্যানদের দাপট কেবল দুর্বল জিম্বাবুয়ে আর ঘুণেধরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঝেই সীমাবদ্ধ। অথচ ১৯ বছর আগের সেই ভারত এখন সাফল্যের শিখরে। টেস্টের নাম্বার ওয়ান দলটা হয়তো ১৯ বছর আগের পাওনা মিটিয়ে দিতেই গোলাপি বলের অভিষেকে বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ তার প্রতিদান দিতে পারল কই?

ক্রিকেটের নন্দন কানন ইডেন গার্ডেন্সে যে গোলাপি বলটাকে বিষ বানিয়ে গিলে ফেললেন মুশফিকুর রহিম-মুমিনুল হকরা। দুই দেশের জন্যই প্রথম হলেও বাংলাদেশের জন্য এক দুঃস্বপ্নই হয়ে থাকল গোলাপি বলের দিন-রাতের টেস্টের প্রথম দিনটা। বোলারদের সঙ্গে ব্যাটসম্যানদের দাপটে শুরুর দিনেই ম্যাচের শেষ রেখা প্রায় টেনে রাখল ভারত। বাংলাদেশকে ১০৬ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৬৮ রানের লিড নিয়েছে স্বাগতিকরা। ৩ উইকেটে ১৭৪ রানে দিন শেষ করেছে কোহলিরা।

শুক্রবার বাংলাদেশের মতো ভারতীয় ইনিংসের শুরুটাও ভালো হয়নি। আল-আমিন, এবাদত ও রাহিদের বল খেলতে অসুবিধা হয় ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। যার রেশ ধরে ২৬ রানের মাথায় সাফল্য পেয়ে যায় বাংলাদেশ। আল-আমিনের বলে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি চলতি বছর টেস্টে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।

পরে বাংলাদেশকে আরও স্বস্তি এনে দেন এবাদত হোসেন। সবশেষ টেস্ট সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে যিনি ব্যাট হাতে দুরমুশ করেছেন, সেই রোহিত শর্মাকে ফেরান এ পেসার। তার অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে ইনসুইং করে ভেতরে ঢোকা বল আটকাতে ব্যর্থ হন রোহিত। আবেদনে সাড়া দিয়ে তর্জনী তুলে দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি ‘হিটম্যান’। ফেরার আগে তার নামের পাশে জমা হয় ২১ রান।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে বাংলাদেশকে পাল্টা দেন চেতশ্বর পূজারা ও বিরাট কোহলি। দুজনের ৯৪ রানের জুটি শক্ত অবস্থানে নিয়ে যায় ভারতকে। ক্যারিয়ারের ২৪তম হাফ সেঞ্চুরি তোলার পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি পূজারা। এবাদতের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ফিরতে হয় তাকে। স্লিপে সাদমান ইসলামের হাতে বল জমা হতেই সাজঘরে হাঁটা দেন পূজারা, স্বভাবসুলভ স্যালুট দেন এবাদত।

যদিও লম্বা সময়ের সঙ্গীকে হারিয়েও ক্রিজে অবিচল কোহলি। সঙ্গে পেয়েছেন টেস্টের তারকা ব্যাটসম্যান অজিঙ্কা রাহানেকে। দুজনে ৩৭ রানের জুটি গড়ে অবিচ্ছিন্ন তারা। ক্যারিয়ারের ২৩তম ফিফটি তুলে কোহলি অপরাজিত ৫৯ রানে। আর রাহানের রান ২৩। ১১ ওভার বাকি থাকতেই ঐদিহাসিক দিনের ইতি টানেন দুই অনফিল্ড আম্পায়ার মারাইস এরাসমাস ও জোয়েল উইলসন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close