ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ১৮ অক্টোবর, ২০১৯

‘বাংলাদেশিদের বসবাস ফুটবলের সঙ্গে’

২১১টি ফুটবল খেলুড়ে জাতি নিয়ে গঠিত সংস্থার শীর্ষপদস্থ কর্তা তিনি। বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তিও। অথচ প্রথমবার বাংলাদেশে পা রেখে অবাক ও বিস্ময় জাগানিয়া চেহারাটা লুকানোর কোনো চেষ্টাই করলেন না জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। ১২ ঘণ্টারও কম সময় হাতে গতকাল ভোরে ঢাকায় এসেছিলেন ফিফা প্রেসিডেন্ট। তবে কয়েক ঘণ্টার এই সফরেই ইনফান্তিনো যা দেখলেন-যা বুঝলেন, তাতেই বেড়ে গেল বাংলাদেশ ফুটবল সম্পর্কে তার চিন্তা-ভাবনার পরিসর।

সংক্ষিপ্ত সফরে ফিফা বসের শেষ কর্মসূচি ছিল সংবাদ সম্মেলন। গতকাল বিকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে সেই সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই ইনফান্তিনো বলেছেন, ‘এখানে আসার আগে অন্য কিছু শুনেছিলাম। কিন্তু এখানে এসে নিজ চোখে যা দেখছি তাতে আমি অবাক। সত্যি বলতে কী আমি এটা আশাও করিনি। আমি ভেবেছিলাম এমন এক দেশে এসেছি, যেখানকার মানুষের ফুটবল নিয়ে আগ্রহ একটু কম। তবে শুনেছিলাম ঠিক ফুটবল নয়; অন্য একটা খেলা, আমি সেই খেলাটার নামও উচ্চারণ করতে চাই না (ক্রিকেটকে বুঝিয়েছেন)Ñ এখানকার স্থানীয় মানুষের সংস্কৃতির অংশ। কিন্তু আমি এখানে এসে দেখলাম ভিন্ন কিছু। এদেশের মানুষ শুধু ফুটবল খেলে না, ফুটবল শুধু তারা ভালোবাসেই না; তারা তো ফুটবলের সঙ্গেই বাস করে। আর আপনারা সবাই জানেন নতুন ফিফার নতুন সেøাগানই হচ্ছে ফুটবলের সঙ্গে বসবাস!’

শুধু বলার জন্য বলা নয়, সত্যিকার অর্থেই কাজ করে দেখানোর আদর্শে বিশ্বাসী ফিফা বস। নতুন ফিফার নতুন দর্শনের সেই ব্যাখ্যা ইনফান্তিনো দিলেন এভাবে, ‘দক্ষিণ এশিয়ার এই অংশে ফুটবল উন্নয়নে ফিফা কাজ করে যাচ্ছে। সেই কাজে আরো বেশি গতি আনা হবে। বাংলাদেশে মাত্র কয়েক ঘণ্টার সফরে আমি যা জানতে পেরেছি তা সত্যিকার অর্থেই অনন্য। আমি এই সফর শেষ করে যখন ফিরছি তখন আমার এক চোখে অশ্রু, কিন্তু অন্য চোখে হাসি। এই অঞ্চলে ফুটবলের উন্নয়ন ঘটাতে আমি আত্মবিশ্বাসী এবং আশাবাদী।’

মাইক্রোফোনের পাশে রাখা একটি ফুটবল হাতে নিয়ে ফিফা সভাপতি তাতে আদরের হাত বুলিয়ে বলেন, ‘এই ফুটবল যখন স্কুলের ছোট্ট শিশুদের হাতে তুলে দিতে পারি তখন দেখি তাদের চোখে-মুখের রাজ্যের প্রশান্তি। আমরা তাদের সেই হাসি এবং আশার দিগন্ত রঙিন করে দিতে চাই। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।’

ঢাকা সফরে খুব বেশি কর্মসূচি ছিল না জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে কাল ভোরে ঢাকায় পৌঁছান তিনি। বিকালে ঢাকা ছাড়ার আগে বলতে গেলে তার কর্মসূচি ছিল তিনটি। সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, দুপুরে বাফুফে কার্যালয় পরিদর্শন ও সেখানে কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক এবং মধ্যাহ্নভোজ শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নেওয়া। এরপরই নিজস্ব বিমানে করে লাওসের উদ্দেশে লাল-সবুজের দেশ ছাড়েন ৪৯ বছর বয়সি ফুটবল সংগঠক। বাংলাদেশে প্রথমবার এসে ইনফান্তিনো ফুটবল সম্পর্কে যে ধারণা নিয়ে গেলেন তার নাম ভালোবাসা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close