শেন ওয়ার্ন-আফ্রিদির পর লেগস্পিনে দাপট দেখিয়ে চলেছেন ইমরান তাহির, রশিদ খান, আদিল রশিদ, কুলদিপ যাদব, শাদাব খান ও জাহির খানরা। দিনের পর দিন ব্যাটসম্যানদের কাঁপন ধরিছেন এই লেগিরা। এখন একজন লেগস্পিনার খুঁজছিল বাংলাদেশ। কিন্তু কিছুতেই যেন পাওয়া যাচ্ছিল না ওই ‘রত্ন’কে। নেপালের মতো দলে সন্দিপ লামিচ্যানের মতো একজন লেগস্পিনার থাকলেও কেন জানি লেগস্পিনারই খুঁজে পাচ্ছিল না বাংলাদেশ। তবে অপেক্ষার পালা বোধহয় শেষ হলো। এবার হয়তো পেল।

যদিও এখনই বলে দেওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ হবে যে, বহুলাকাক্সিক্ষত সে ‘লেগস্পিনার’ পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। তবে তরুণ আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের মধ্যে দারুণ এক সম্ভাবনা যা আছে, সেটা বলে দেওয়াই যায়। আগ বাড়িয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তো বলেই দিলেন, ‘এই ছেলে এক্স-ফ্যাক্টর হবে’।

এইচপি দল থেকে সরাসরি জাতীয় দলে ডাক পান আমিনুল। পরশু ত্রিদেশীয় সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেকও হয়ে গেল তার। অভিষেকেই বুঝিয়ে দিলেন, একজন লেগস্পিনারের খোঁজে তাকে এইচপি দল থেকে ডেকে এনে মাঠে নামিয়ে দিয়ে কোনো রকম ভুল করেননি নির্বাচকরা।

প্রথম ম্যাচেই ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৮ রান খরচায় ২ উইকেট তুলে নেন বিপ্লব। রাজসিক অভিষেক বলতেই হবে। ২ উইকেটের মধ্যে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার উইকেটটি যেভাবে পেলেন সেটা ছিল দেখার মতো। তার নিচু হওয়া গুগলি ধরতেই পারেননি জিম্বাবুয়ান অধিনায়ক। ব্যাট ফাঁকি দিয়ে প্যাডে আঘাত করে বলটি। ফলাফল, ক্লিয়ার লেগ বিফোর হয়ে ফেরেন মাসাকাদজা।

বিপ্লবের অভিষেক ম্যাচের ৪ ওভার বোলিং দেখে যা মনে হলো- তার বলে খুব বেশি টার্ন নেই, গতিও বেশি নয়। তবে লাইন-লেংথ ঠিক রেখে ধারাবাহিক বোলিং করে যাওয়ার দুর্দান্ত ক্ষমতা আছে তার। সেইসঙ্গে অভাবনীয় সাহস। টেস্ট ক্রিকেটে যেটা দারুণ কাজে লাগতে পারে। রঙিন পোশাকেও যে তার বল কার্যকরী হবে, সেটা তো এদিনই বুঝিয়ে দিলেন নতুন এই বিপ্লব।

পরশু রাতে ম্যাচ শেষে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলছিলেন, ‘এই ছেলেটাকে অনেক সম্ভাবনাময় মনে হচ্ছে। দলের সবাই মিলে অনেক উৎসাহ দিয়েছি তাকে। উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আছে ছেলেটার।’

অথচ বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে মূলত একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলে এসেছেন বিপ্লব। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে দারুণ সফলও হন। ফিল্ডিংয়েও দুর্দান্ত। ফলে আমিনুলকে আপাতত ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’ই ভাবা হচ্ছে।

এখন শুধু দেখার অপেক্ষা, বিপ্লব নিজেকে রতেœ পরিণত করেতে পারেন কি-না।

"