ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ১৭ আগস্ট, ২০১৯

অবসর নিয়ে ধোঁয়াশা

কী ভাবছেন মাশরাফি?

ঈদের ছুটি শেষে আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে টাইগারদের কন্ডিশনিং ক্যাম্প। আসন্ন আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ সামনে রেখে ৩৫ ক্রিকেটারকে নিয়ে শুরু হবে এ কন্ডিশনিং ক্যাম্প। তবে এই ক্যাম্পে যুক্ত হচ্ছেন না বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু মাশরাফির যোগ না দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ দলের প্রায় সব কন্ডিশনিং ক্যাম্পেই মাশরাফি ছিলেন। তবে এবার ক্যাম্পে যোগ না দেওয়ার খবরে ফের তার অবসর নিয়ে আলোচনার বিষয়টি চাঙ্গা হয়ে ওঠেছে। বিশ্বকাপের পর থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় খবরও এটিই। কবে অবসরে যাচ্ছেন নড়াইল এক্সপ্রেস?

যদিও নিজের অবসর ভাবনা নিয়ে এখন পর্যন্ত মুখ খোলেননি মাশরাফি। এমনকি বোর্ডের সঙ্গেও এ বিষয়ে কোনো আলোচনা করেননি। যে কারণে কদিন ধরেই গুঞ্জন চলছে, অধিনায়কের বিদায়ী মঞ্চ সাজানোর পরিকল্পনা করছে বিসিবি। ম্যাশকে বীরের বেশে বিদায় জানাতে ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটা ওয়ানডে আয়োজন করতে পারে বোর্ড। যদিও সে গুঞ্জন দানা বাঁধতে শুরু করেনি। মাশরাফির অবসরে যাওয়া নিয়ে যখন এমন ধোঁয়াশা চলছে, তখন এ বিষয়ে খোদ মাশরাফি কী ভাবছেন, সেটিই জানতে চেয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

বিসিবি চায়, অধিনায়ক নিজেই বলুক তিনি এ বিষয়ে কী ভাবছেন। বৃহস্পতিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে এসেছিলেন বিসিবি বস। সেখানে মাশরাফির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অবসর নিয়ে মাশরাফির সঙ্গে কোনো কথা হয়নি আমাদের। আগে অবসর নিয়ে ওর সঙ্গে কথা বলে নিই, তারপর বোঝা যাবে আসলে মাশরাফি কী চায়?’ ঈদের ছুটি কাটিয়ে এলে খুব তাড়াতাড়ি মাশরাফির সঙ্গে এ বিষয়ে বলবেন বলে উল্লেখ করেন বিসিবি সভাপতি।

এর আগে কন্ডিশনিং ক্যাম্পে মাশরাফিকে না রাখার বিষয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন জানিয়েছিলেন, ‘জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে আয়োজনের বিষয়টি এখনো ঝুলে আছে। যেহেতু সে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি খেলে না। তাই আপাতত কন্ডিশনিং ক্যাম্পে তাকে না রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’ তবে মাশরাফির এ ক্যাম্পে থাকার কথা ছিল জানিয়ে নান্নু যোগ করেন, ‘এটা ঠিক, ওর থাকার কথা ছিল। এখন ওকে আর রাখছি না। যদি ওয়ানডে সিরিজ হতো তা হলে রাখতাম। ওয়ানডে হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না।’

উল্লেখ্য, বর্তমানে ক্রিকেট থেকে অনেকটাই দূরে রয়েছেন মাশরাফি। ইদানিং ঢাকায় খুব একটা আসছেন না। আসলে ও বেশিদিন অবস্থান করছেন না। এই মুহূর্তে নড়াইলে নিজ নির্বাচনী এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন সংসদ সদস্য মাশরাফি। জানা গেছে, আগামী দু-তিন দিনের মধ্যেই ঢাকায় ফিরবেন তিনি।

প্রসঙ্গত, বিশ্বকাপের সময় থেকে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে ভুগছেন দেশসেরা পেসার। চোট নিয়েই বিশ্বকাপ শেষ করেছেন। তার নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কা সফরেও যাবার কথা ছিল টাইগারদের। কিন্তু কলম্বোর বিমানে ওঠার আগের দিন সন্ধ্যায় অনুশীলন করতে গিয়ে পুরোনো চোট নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।

ফলে শেষ মুহূর্তে ছিটকে যান ম্যাশ। সে সময় বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী জানিয়েছিলেন, ‘চোট থেকে সেরে ওঠতে মাশরাফির ছয় সপ্তাহ সময় লাগবে। আগস্টের শেষে আবারও পুরোদমে বোলিং করতে পারবেন।’ প্রত্যাশামাফিক, মাশরাফি সুস্থ হয়ে ওঠেছেন। আর তাই এবারের কন্ডিশনিং ক্যাম্পে দেশের সফলতম অধিনায়কের থাকাটা আরো বেশি জরুরি ছিল বলে মত দিয়েছেন ক্রীড়া বিশেষজ্ঞরা।

মাশরাফি কবে নাগাদ খেলায় ফিরবেনÑ কোটি কোটি ভক্তের মাথায় যে প্রশ্নটা অনেক দিন হলো ঘুরপাক খাচ্ছে, সেটার সদুত্তর দিয়ে ভক্তদের শান্ত করতে পারেন কেবল মাশরাফিই। আপাতত সেই উত্তরের অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close