ক্রীড়া ডেস্ক

  ১৬ জুলাই, ২০১৯

ক্রিকেট মহলে প্রশ্ন

কোন যুক্তিতে হারল নিউজিল্যান্ড?

এর আগেও লর্ডসের মাঠ একাধিক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী থেকেছে। সেই লর্ডসেই ছিল ২০১৯-এর ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল। পঞ্চমবারের জন্য বিশ্বকাপ ফাইনাল অনুষ্ঠিত হলো লর্ডসে। তবে এবারের বিশ্বকাপের ফাইনালের মতো টানটান উত্তেজনার আর কখনো দেখেনি ক্রিকেটবিশ্ব। যে ম্যাচে ক্রিকেট জনতা দেখল অদ্ভুত এক জয়। সাধারণ দর্শকের সময়ও লাগল কোন নিয়মে জয়, তা বুঝতে। অনেকে ভাবলেন লিগ টেবিলে নিউজিল্যান্ডের চেয়ে ওপরে থাকার জন্য কাপ জিতল ইংল্যান্ড। বিষয়টি বোধগম্য হয় কিছুক্ষণ পরে। জানা যায়, ম্যাচে কিউইদের চেয়ে বেশি বাউন্ডারি মারায় জিতেছে ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপ জয়ের এক আলাদা তৃপ্তি আছে। কিন্তু প্রথমবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদে একটু হলেও যেন চোনা পড়ে গেল ইংল্যান্ডের। ১০০ ওভারের ম্যাচ শেষ হয় সমান সমান অবস্থায়। সুপার ওভারও শেষ হয় অমীমাংসিতভাবে। এই অবস্থায় কী করে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে শুধু বাউন্ডারি মারার সংখ্যা? এই প্রশ্নই ঘুরছে ফ্যান থেকে নেটিজেনদের মধ্যে। চার বছরের অপেক্ষা। ১০ দলের লড়াই। ৪৪ দিন ধরে চলা মেগা টুর্নামেন্ট। একাধিক টানটান ম্যাচ। সেই টুর্নামেন্টের মীমাংসা হলো কি-না দুদলের মধ্যে কে বেশি চার মেরেছে তা দিয়ে। ক্রিকেটে কি তাহলে শুধু বেশি বাউন্ডারি মারাই প্রধান লক্ষ্য? ‘জেন্টলম্যানস গেম’ বলা হয় ক্রিকেটকে। বোলাররা বুদ্ধি খাটিয়ে বল করে উইকেট নেন। ধীরে ধীরে সিঙ্গেল নিয়ে ইনিংস গড়েন ব্যাটসম্যান। কত রকমের মাইন্ড গেম চলে। একের পর এক উইকেট হারানোর পরে ব্যাটসম্যান দাঁত কামড়ে পড়ে থেকে ইনিংস গড়েন, বোলারের মারাত্মক বাউন্সারের ছোবল সহ্য করেও ব্যাট করে চলার তো তাহলে কোনো মূল্য রইল না। বিশ্বকাপ ফাইনালের পরে এসব প্রশ্ন উঠছে। একটা ফাইনাল কত বিতর্ক তৈরি করে দিয়ে গেল। লর্ডসের হার নিউজিল্যান্ড শিবিরকে ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়ার কথা। গতবারের হারের থেকেও এই হার যে বেশি যন্ত্রণার। কেন উইলিয়ামসন কি কোনো দিন ভুলতে পারবেন এই হার?

৫০ ওভারে ২৪১ রান করে দুদলই। কিন্তু সেই রান তুলতে নিউজিল্যান্ডের থেকে বেশি উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। কিউয়ি ফ্যান তো বটেই, ক্রিকেটবিশ্বের একটা বড় অংশের দাবি, কেন সেই বিষয়টা গ্রাহ্য করা হবে না? অনেকে আবার মনে করেন, এই অবস্থায় যুগ্ম বিজয়ী ঘোষণা করাই যেত। ১০০ ওভারের শেষে দুটো দেশেরই রান সংখ্যা সমান। সুপার ওভারেও রান সমান সমান।

অর্থাৎ চ্যাম্পিয়ন দল ইংল্যান্ড ক্রিকেটীয় বিচারে কোনো অবস্থাতেই ফাইনালে হারাতে পারেনি কিউইদের। অগত্যা আর কী। যে বেশি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছে, সেই দলকেই চ্যাম্পিয়ন করে দেওয়া হোক। বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো মহা মঞ্চে এভাবে হারটা মেনে নিতে পারছেন না কেউই। উইলিয়ামসনদের সমবেদনা জানাচ্ছেন সাবেকরাও। ভারতের সাবেক কিংবদন্তি সচীন টেন্ডুলকার টুইট করে বলেন, ‘প্রথম বল থেকে ৬১২ বল অবধি টানটান উত্তেজনার খেলা, খারাপ লাগছে নিউজিল্যান্ডের জন্য। তারা সবই করেছে ইংল্যান্ড যা করেছে, কিন্তু বিশ্বকাপ জেতার জন্য সেটাও যথেষ্ট হলো না।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close