ক্রীড়া ডেস্ক

  ০৯ মে, ২০১৯

অসম্ভবকে সম্ভব করে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে লিভারপুল

ঢাল-তলোয়ার ছাড়া কাল অ্যানফিল্ডে যেন নিধিরাম সর্দার হয়েই নেমেছিলেন ইয়ুর্গেন ক্লপ। তিন গোলে পিছিয়ে থাকা জার্মান কোচের হাতে এদিন ছিল না সালাহ-ফিরমিনোর মতো দুই তুরুপের তাস। তবে যা ছিল তা হলো ঘরের মাঠের প্রবল জনসমর্থন, দলের ১১ জন ফুটবলার আর তার প্রখর ফুটবল মস্তিষ্ক। সম্ভবত এই তিনেই অসম্ভবকে সম্ভব করলেন তিনি।

প্রথম লেগে ন্যু ক্যাম্পে বার্সেলোনার কাছে ০-৩ গোলে পিছিয়ে থাকা দলটাই ফিরতি লেগে বাজিমাত করে গেল ৪-০ গোলে। একই সঙ্গে টানা দ্বিতীয়বারের জন্য চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে প্রবেশ করল পাঁচবারের ইউরোপ সেরা লিভারপুল। অ্যানফিল্ডে রেডসরা যে মরণকামড় দেবে, সে সম্পর্কে অবগত ছিলেন ফুটবল অনুরাগীরা। কিন্তু টের পায়নি কাতালান ক্লাবটি। নইলে হয়তো গত চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টারে রোমার কাছে অপ্রত্যাশিত হার থেকে শিক্ষা নিতেন পিকে-বুসকেটসরা।

মহাগুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচে দলের দুই সেরা তারকা মোহামেদ সালাহ এবং রবার্তো ফিরমিনোকে ছাড়াই খেলতে নেমেছিল অলরেডরা। কিন্তু তাদের অভাব বুঝতে দেননি ডিভক অরিগি এবং জর্জিনিও উইজনাল্ডুম। দুজনই করেছেন জোড়া গোল, ফাইনালে পৌঁছে দিয়েছেন দলকে।

এ ম্যাচে না থাকলেও, গায়ে ‘নেভার গিভ আপ’ অর্থাৎ ‘কখনো হার মেনো না’ লেখা টি-শার্ট পরে গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন সালাহ। তার দেওয়া এ অনুপ্রেরণা কাজে লাগিয়েছে লিভারপুল। ম্যাচের পুরোটা সময় নিয়ন্ত্রণ করেই বার্সার জালে হালি গোল দিয়েছে।

যার শুরুটা হয় ম্যাচের ৭ মিনিটের মাথায়। সালাহর পরিবর্তিত খেলোয়াড় অরিগিই প্রথম আঘাত হানেন বার্সার জালে। লিভারপুল অধিনায়ক হেন্ডারসনের প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক টের স্টেগান। কিন্তু ফিরতি বলে সেটি জালে জড়ান অরিগি।

শুরুতেই লিড পেয়ে তেঁতে ওঠে লিভারপুল। তবে গোল শোধ দিতে মরিয়া হয়ে ওঠে বার্সেলোনাও। প্রথমার্ধেই লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ এবং জর্দি আলবার সামনে আসে পুরো চারেক সুযোগ। কিন্তু একটিও কাজে লাগাতে পারেননি তারা। ফলে ০-১ গোলে পিছিয়েই বিরতিতে যায় বার্সা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে রবার্টসনের বদলে জর্জিনিও উইজনাল্ডুমকে নামিয়ে খেলা শুরু করেন লিভারপুল কোচ ক্লপ। কোচের আস্থার প্রতিদান দিতে তিনি সময় নেন মাত্র ১০ মিনিট। তাও মাত্র ৩ মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করে দুই লেগ মিলে ৩-৩ গোলের সমতা নিয়ে আসেন উইজনাল্ডুম।

ম্যাচের ৫৪তম মিনিটে আলবার ভুল থেকেই ডি-বক্সের মাঝ বরাবর বল পেয়ে যান উইজনাল্ডুম। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে সহজেই স্টেগানক পরাস্ত করেন তিনি। এ গোলের ১২২ সেকেন্ডের মাথায় জার্দান শাকিরির ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে গোল ব্যবধান ৩-০ করেন এ ডাচ তারকা।

তখনো লিভারপুলের ফাইনালের টিকিট পেতে হলে করতে হতো অন্তত ১ গোল। সে কাজটি করেন অরিগি। তবে এ ক্ষেত্রে আলেক্সান্ডার আর্নল্ডের সুযোগ সন্ধানী ভাবনারই মূল কৃতিত্ব।

কর্নার কিকটি তিনি সতীর্থ খেলোয়াড়কে দেওয়ার ভান করে বার্সা খেলোয়াড়দের মনোযোগ সরান অন্যদিকে। সে সুযোগ ফাঁকায় বল পেয়ে যান অরিগি। গোললাইন করে ফেলেন ৪-০, যা পরে আর শোধ করতে পারেনি বার্সেলোনা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close