ক্রীড়া প্রতিবেদক
দোলেশ্বর-শাইনপুকুরের সহজ জয়
নাটকীয় জয় বিকেএসপির
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের পঞ্চম রাউন্ডে এসে হারের বৃত্ত ভাঙল শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। কাল নবাগত উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাবকে ৮ উইকেটে হারিয়ে আসরের প্রথম জয় পেয়েছে আফিফ হোসেনের দল। ১৪৬ রানের লক্ষ্য ১৪৯ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় শাইনপুকুর। বড় জয় তুলে নিয়েছে প্রাইম দোলেশ্বরও। খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতিকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে তারা। খেলাঘরকে ২৫৮ রানে বেঁধে ফেলার পর কুড়ি বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয় দোলেশ্বর। লিগের চলতি আসরে এটা তাদের চতুর্থ জয়। সমান হার আবার খেলাঘরের।
অবশ্য দিনের অন্য দুই ম্যাচ একপেশে হলেও নাটকীয় জয় পেয়েছে বিকেএসপি। শেষ ওভারের নাটকে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ২ রানে হারিয়েছে তারা। ২৬৭ রান তাড়ায় ৯ উইকেটে ২৬৫ রান তুলতে সক্ষম হয় ব্রাদার্স ইউনিয়ন। ৫ উইকেট হাতে নিয়েও শেষ ২ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি তারা। ৪৯তম ওভারে মাত্র চার রান দিয়ে দুটি উইকেট তুলে নেন গতির ঝড় তোলা মুকিদুল। সুমনের করা পরের ওভারে প্রয়োজন ছিল ১২। সেই ওভারে ৯ রানের বেশি নিতে পারেননি ব্রাদার্স। ৫ ম্যাচে দ্বিতীয় জয় পেল বিকেএসপি। সমান ম্যাচে তৃতীয় ম্যাচে হারল ব্রাদার্স।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নামা বিকেএসপির শুরুটা ভালো হয়নি। ২৫ রানে টপ-অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়ে তারা। পরে আমিনুল ইসলামের সঙ্গে ৬৬ রানের জুটিতে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন শামিম হোসেন। দলকে এগিয়ে নেওয়া এই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানকে নাঈম ইসলাম জুনিয়র। ৯৬ বলে খেলা শামিমের ৭১ রানের ইনিংস গড়া নয়টি চার ও একটি ছক্কায়। এরপর আকবর আলীর সঙ্গে পারভেজ হোসেনের ৯০ রানের জুটিতে এগিয়ে যায় বিকেএসপি। ৬০ বলে ৫৬ রান করা আকবরকে ফিরিয়ে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ শরীফ। শেষদিকে বিকেএসপির রানের চাকা এগিয়ে নিয়েছেন পারভেজ। ৫৪ বলে ৫ ছক্কা ও ৩ চারে তিনি খেলেন ৬৯ রানের ঝড়ো এক ইনিংস।
বিকেএসপিকে জবাব দিতে নেমে শুরুতেই মিজানুর রহমান ও ফজলে মাহমুদকে হারায় ব্রাদার্স। পরে জানির সঙ্গে ৯৩ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান জুনায়েদ সিদ্দিক। তিন চারে ৫২ রান করা এই ওপেনারকে ফেরান শামিম। ইয়াসির আলী চৌধুরীর সঙ্গে ৭৪ ও শরিফউল্লাহর সঙ্গে ৫৬ রানের দুটি জুটিতে দলকে কক্ষপথে রাখেন জানি। অফ স্পিনার শামিমকে ছক্কায় উড়িয়ে তিন অঙ্ক ছুঁতে চেয়েছিলেন ভারতীয় এই ব্যাটসম্যান। টাইমিং করতে না পেরে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার ১২০ বল স্থায়ী ৯৬ রানের লড়াকু ইনিংস।
জানির বিদায়ের পরও ম্যাচটা হেলে ছিল ব্রাদার্সের দিকে। গতিময় শর্ট বল আর সেøায়ারের মিশেলে ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করে মকিদুল ফিরিয়ে দেন জাহিদুজ্জামান ও শরীফকে। শেষ ওভারের প্রথম বলটি ‘নো’ করেন সুমন। ফ্রি-হিট কাজে লাগাতে পারেননি ইবাদত হোসেন। তৃতীয় বলে ২ রান নেওয়ার চেষ্টায় রান আউট হয়ে ফিরে যান তিনি।
চতুর্থ বলে দুই রান নেন শরিফউল্লাহ। ক্যাচ দিয়েও বাউন্ডারি পেয়ে যান এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ৩ রান। কিন্তু সুমনের শর্ট বলে ব্যাটই ছোঁয়াতে পারেননি তিনি। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নেয় বিকেএসপি। ৩৪ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থেকে যান শরিফউল্লাহ। ৬২ রানে চার উইকেট নেন তরুণ পেসার মুকিদুল। শামিম ২ উইকেট নেন ৪৩ রানে। অলরাউন্ড নৈপুণ্যের জন্য ম্যাচসেরা হয়েছেন এই তরুণ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বিকেএসপি-ব্রাদার্স ইউনিয়ন
বিকেএসপি : ৫০ ওভার, ২৬৭/৯ (মাহমুদুল ১০, আমিনুল ২৩, শামিম ৭১, আকবর ৫৬, পারভেজ ৬৯, সুমন ১২*; ইবাদত ২/৫৭, শরীফ ৩/৬৫, শরিফউল্লাহ ১/২৯, জানি ১/৫১, নাঈম জুনিয়র ১/৪৫)
ব্রাদার্স ইউনিয়ন : ৫০ ওভার, ২৬৫/৯ (মিজানুর ২৩, জুনায়েদ ৫২, জানি ৯৬, ইয়াসির ৩৮, শরিফউল্লাহ ৪২*; মুকিদুল ৪/৬২, শামিম ২/৪৩, ইকবাল ১/৪৬)
ফল : বিকেএসপি ২ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা : শামিম হোসেন
খেলাঘর-প্রাইম দোলেশ্বর
খেলাঘর : ৫০ ওভার, ২৫৭/৯ (রবি ১৭, সাদিকুর ৫৮, মাহিদুল ৮৬, মেনারিয়া ২১, অমিত ১৮, মইনুল ২১, মাসুম ১১; রেজা ৩/৫২, আবু জায়েদ ২/৫৩, সানি ১/৩৫, সৈকত ২/৪৩)
প্রাইম দোলেশ্বর : ৪৬.৪ ওভার, ২৫৮/৩ (সৈকত ১৪, সাইফ ১৩২*, মাহমুদুল ২৪, মার্শাল ৪০, নাসিম ৩৪*; রবি ১/২৭, ইফরান ১/৬৭, ইফতেখার ১/১৮)
ফল : প্রাইম দোলেশ্বর ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা : সাইফ হাসান
উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাব-শাইনপুকুর
উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাব : ৪৪.৪ ওভার, ১৪৫ (তানজিদ ২৫, আনিসুল ১৩,
মোহাইমিনুল ২১, মিনহাজুল ৫১*; শরিফুল ১/২৯, দেলোয়ার ১/২৪, শুভ ১/২৪, সাব্বির ৩/২৭, রকিবুল ২/১৮)
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব : ২৫.১ ওভার, ১৪৯/২ (সাদমান ৩৮, সাব্বির ৯৯; জাহাঙ্গীর ১/২৪, নাইনুল ১/৪৭, তানজিদ ০/৪)
ফল : শাইনপুকুর ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা : সাব্বির হোসেন
"