ক্রীড়া ডেস্ক

  ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

রাগবির দেশে হোয়াইটওয়াশের মুখে মাশরাফির বাংলাদেশ

নেপিয়ারে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ। ক্রাইস্টচার্চে মাশরাফিদের যে আরো বড় পরীক্ষায় পড়তে হবে সেটা এক প্রকার অনুমিতই ছিল এবং হলোও তাই। কিউইদের সামনে এদিনও মাথা তুলতে পারল না টাইগাররা। হারের ব্যবধানটাও সেই একই, ৮ উইকেটে। নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কের পর ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালেও বাংলাদেশের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকলেন মার্টিন গাপটিল। সেঞ্চুরি তুলে নিলেন টানা দ্বিতীয় ওয়ানডেতে। ঠিক যেন প্রথম ওয়ানডের পুনর্মঞ্চায়ন হলো! ১৯ ফেব্রুয়ারি ডানেডিনে ধবলধোলাই এড়ানোর লড়াইয়ে নামবেন মাশরাফিরা।

রাগবির দেশে দ্বিতীয় ওয়ানডের ব্যাট-বলের যুদ্ধ শুরুর আগেই একবার হেরে বসেছে সফরকারীরা। মুদ্রা নিক্ষেপের লড়াইয়ে হেরে যান বাংলাদেশের অধিনায়ক ও প্রতিনিধি মাশরাফি বিন মর্তুজা। উইকেট ও কন্ডিশন বিবেচনায় অবধারিতভাবেই বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ব্যাট করতে নামা দলের দুই ওপেনার টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যর্থ হলেন। চেনা বিপর্যয় দিয়ে শুরু হলো টাইগারদের ব্যাটিং। গত ম্যাচের মতোই তামিম ইকবাল করেছেন ৫, লিটন দাশ ১ রান। ৫ রানে ভেঙেছে ওপেনিং জুটি। স্কোর বোর্ডে ১০০ রান না উঠতেই টপঅর্ডার ধসে পড়েছে, পড়েছে ৫ উইকেট। ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আবারও মোহাম্মদ মিঠুনের লড়াই, একটা ফিফটি। সেদিন মিঠুনের সঙ্গে সাইফুদ্দিনের ৮৪ রানের একটা জুটি হয়েছিল। কাল সেটা হয়েছে হয়েছে সাব্বির রহমানের সঙ্গে (৭৫) রানের। সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৪৮.৫ ওভারে অলআউট ২৩২ রানে। আজ ৪৯.৪ ওভারে ২২৬। প্রথম ওয়ানডের মতো কালও নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশের লক্ষ্যটা টপকে গেছে ৮ উইকেট হাতে রেখে।

মিল এখানেই শেষ নয়, গত ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন মার্টিন গাপটিল। কালও করলেন। পার্থক্যটা হচ্ছে প্রথম ওয়ানডেতে গাপটিল অপরাজিত ছিলেন ১১৭ রানে, দ্বিতীয়টিতে আউট হয়েছেন ১১৮ রানে। পার্থক্য আরো একটা আছে। প্রথম ম্যাচে গাপটিল বাংলাদেশের বোলারদের ভীষণ সমীহ করেছিলেন। কাল সেসব কিছু ছিল না। কিউই ওপেনার বুঝে গেছেন, নিউজিল্যান্ড কন্ডিশনে বাংলাদেশের বোলাররা নির্বিষ, বৈরী পরিবেশে তারা খুব একটা হুল ফোটাতে পারেন না! কাজেই কাল তাদের ওপর চড়াও হয়ে যায়। হয়েছেনও। ৭৬ বলে সেঞ্চুরি করেছেন। মুস্তাফিজুর রহমানের বাউন্সারটা জোর করে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে যখন লিটন দাশের ক্যাচ হলেন, নামের পাশে জমা হয়ে গেছে ৮৮ বলে ১১৮ রান। ১৪ চার আর ৪ ছক্কায় সাজানো ইনিংসটার স্ট্রাইকরেট ১৩৪.০৯। গাপটিল-উইলিয়ামসনের দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করা ১৪৩ রানের জুটি যে ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে, তা না বলে বলা ভালো ম্যাচটা আরো একপেশে করে দিয়েছে। নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের এই ম্যাচে বাংলাদেশের বোলারদের প্রাপ্তি বলতে মুস্তাফিজের দুই উইকেট। আর গত ম্যাচের চিত্রনাট্য মেনে এটিতেও ম্যাচসেরা গাপটিল।

টানা দুই ম্যাচ হেরে সিরিজও হাতছাড়া হয়ে গেছে বাংলাদেশের। ২০১০ সাল থেকে দুই দলের সিরিজে একটা অভিন্ন দৃশ্য হচ্ছে, যারা হারে তো হারতেই থাকে। যে দল সিরিজ জিতবে, তারা প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই করেই জিতবে। এবারও কী সেটিই হতে যাচ্ছে? অবশ্যই পুনরাবৃত্তি চাইবেন না মাশরাফিরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ : ৪৯.৪ ওভার ২২৬ (সৌম্য ২২, মুশফিক ২৪, মিঠুন ৫৭, সাব্বির ৪৩, মিরাজ ১৬, সাইফ ১০, মাশরাফি ১৩, মুস্তাফিজ ৫*; হেনরি ৩০/১, বোল্ট ৪৯/১, ডি গ্র্যান্ডহোম ২৫/১, ফার্গুসন ৪৩/৩, ৫২/২, নিশাম ২১/২)।

নিউজিল্যান্ড : ৩৬.১ ওভার ২২৯/২ (গাপটিল ১১৮, নিকোলস ১৪, উইলিয়ামসন ৬৫*

টেলর ২১*; ৪২/২।

ফল : নিউ জিল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী

সিরিজ : নিউজিল্যান্ড ২-০তে এগিয়ে

ম্যাচ সেরা : মার্টিন গাপটিল

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close