ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

সাকিবের জ্বলে ওঠার অপেক্ষায় সুজন

আগের বারের ঠিক বিপরীত অবস্থা ঢাকা ডায়নাইমাইটসের। সাকিবের দল গতবার রবিন লিগে দুই নম্বর হয়ে সোজা কোয়ালিফায়ার-১-এ খেলেছে। এক নম্বর হয়ে আসা তামিমের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৯৫ রানে হারিয়ে সবার আগে ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল খালেদ মাহমুদ সুজনের শিষ্যরা। আর এবার প্রথম দিকে দাপট দেখিয়ে ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে সবার ওপরে থাকলেও শেষ পর্যন্ত সেরা চারে জায়গা পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।

শেষ চার নিশ্চিত করতে রবিন লিগের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে ঢাকাকে। সেই ম্যাচে খুলনা টাইটান্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে অবশেষে সেমিতে সাকিবের দল। চার নম্বর হয়ে আসায় এলিমিনেটরে ঢাকার প্রতিপক্ষ ছিল তৃতীয় স্থানে থেকে শেষ চারে জায়গা পাওয়া চিটাগং ভাইকিংস।

সোমবার বিকেলে মুশফিকের ভাইকিংসকে ৬ উইকেটে হারিয়ে এলিমিনেটর পর্ব পার হয়ে কোয়ালিফায়ার-২-এ এখন ঢাকা। প্রতিপক্ষ কোয়ালিফায়ার-১-এ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে হেরে যাওয়া রংপুর রাইডার্স। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মাশরাফির রংপুরের সঙ্গে সেই অঘোষিত সেমির যুদ্ধ সাকিবের ঢাকার। বিজয়ী দল পৌঁছে যাবে ফাইনালে, ৮ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার বিপক্ষে লড়তে। আর পরাজিত দল বিদায় নেবে এবারের বিপিএল থেকে।

কাগজে-কলমের অন্যতম শীর্ষ দল ঢাকা চমৎকার সূচনার পরও একসময় অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিল। আর তুলনামূলক কম শক্তির চিটাগংও তুলনামূলক শক্তিশালী সিলেটকে পেছনে ফেলে চলে এসেছিল শেষ চারে। তাও তিন নম্বর হয়ে, কাগজে-কলমের অন্যতম সেরা দল ঢাকারও ওপরে থেকে।

তাই বিপিএলের শেষ দিকে এসে অনেকের মনেই প্রশ্ন, ‘আচ্ছা ঢাকা ডায়নামাইটস কি নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পেরেছে? কাগজে-কলমের ঢাকাকে কি মাঠে পাওয়া গেছে? এ প্রশ্ন অনেকেরই। অঘোষিত সেমিফাইনাল যুদ্ধের আগে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন দলটির কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন।

সুজনের কথার সারমর্ম হলো, তার দলের শুরুটা ভালো ছিল বেশ। কিন্তু মাঝখানে গিয়ে ছন্দপতন ঘটেছে। তখন বেশ কিছু ম্যাচের ফল প্রতিকূলেও গেছে। আবার থারাঙ্গা দলে যোগ দেওয়ার পর ঢাকা আবার ছন্দ ফিরে পেয়েছে।

বলার অপেক্ষা রাখে না শ্রীলঙ্কার হয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি মিলে পঞ্চাশটির ওপরে ম্যাচ খেলা থারাঙ্গার কাছে বেশ পরিচিত বাংলাদেশের উইকেট। এ কারণেই শেষ দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৪২ ও ৫১ রানের এক জোড়া কার্যকর ইনিংসও উপহার দিয়েছেন। শুরুতে যে কাজটি করেছেন হজরতউল্লাহ জাজাই। শুরুর তিন-চার ম্যাচে আফগান ওপেনারের ব্যাটে রানের ফলগুধারা বয়েছে। ঢাকাও ভালো খেলেছে। তখন সাকিবও স্বাচ্ছন্দ্যে খেলে রান করেছেন। ঢাকাও ছিল ছন্দে।

তবে ম্যাচ যত গড়িয়েছে, সাকিবের ব্যাট কেমন যেন ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। একইভাবে দুই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্দ্রে রাসেল আর কাইরন পোলার্ডও সেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি।

তবে কোচ সুজনের দাবি, ‘আমার বিশ্বাস আমরা এখন মোটামুটি ছন্দ ফিরে পেয়েছি। পুরো দল হারানো ছন্দে চলে এসেছে। এখন আমি দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট। আগামীকালের (বুধবার) অঘোষিত সেমিফাইনাল ম্যাচটিতে আমরা ভালো করার আশা করছি।’

অভিজ্ঞ সুজন মনে করেন, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পার্টনারশিপ খুব গুরুত্বপূর্ণ। জুটি অবিচ্ছিন্ন থাকলে রানের চাকা সচল থাকে। তাই মুখে এমন কথা তার, ‘আমি সব সময় চাই আগে বা পরে যখনই ব্যাটিং করি না কেন, বড় পার্টনারশিপ হোক। পার্টনারশিপ সচল থাকলে প্রতিপক্ষ বোলাররা চেপে বসার সুযোগ কম পায়। থারাঙ্গা আসায় আমরা শুরুতে এখন পার্টনারশিপ পাচ্ছি। সুনিল নারাইনও এখন মানিয়ে নিয়েছে।’

আসল জায়গায় অধিনায়ক সাকিবের ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠার অপেক্ষায় ঢাকা কোচ। তিনি বলেন, ‘সাকিব শুরুর কয়েকটা ম্যাচ খুব ছন্দে ছিল। যতক্ষণ উইকেটে সাবলীল ব্যাটিং করেছে। তাতে স্কোরবোর্ড সচল থেকেছে। দলও হয়েছে উপকৃত। কিন্তু হঠাৎ একটু ছন্দপতন হয়েছে। এটা একজন ক্রিকেটারের আসতেই পারে। তবে আমি জানি তার আত্মনিবেদনে কোনো ঘাটতি নেই। সে শতভাগ সিরিয়াস। আমি আশা করব আগামীকাল (বুধবার) সাকিব জ্বলে উঠবে।’

পরিসংখ্যানও তাই জানাচ্ছে। শুরুতে দারুণ ফর্মে থাকা সাকিব ৩০ জুন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে স্বাগতিক চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ৪২ বলে ৫৩ রানের ইনিংস খেলার পর শেষ তিন ম্যাচে কোথায় যেন হারিয়ে গেছেন। শেষ তিন ম্যাচে তার রান (৭+১+০) মাত্র ৮। অথচ শুরুতে সাকিব (২৩+১৩+৬১+৩৪+২০+২৫+৫৩=২২৯) ম্যাচে নিয়মিত রান করেছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close