ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

ঢাকার বিপদ বাড়াল কুমিল্লা

শেষ চার ম্যাচের চারটিতেই হার। ছয়টির মধ্যে পাঁচটিতে। অনায়েসের প্লে-অফের দিকে এগোতে থাকা ঢাকা ডায়নামাইটস এখন খাদের চূড়ান্ত কিনারে। কাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের কাছে শেষ বলে হেরে যাওয়ায় সুতোয় ঝুলে গেছে সাকিব আল হাসানদের ভাগ্য। শেষ ম্যাচে খুলনা টাইটানসকে হারাতে পারলে সমীকরণ মিলিয়ে হয় তো প্লে-অফ পর্বে যেতে পারে ঢাকা। কিন্তু টানা পঞ্চম হারে ঠিকই বিপদ বেড়ে গেল সাকিব অ্যান্ড কোংয়ের।

কুমিল্লাকে অনায়েসে হারিয়ে ঢাকা জয়ে ফিরবে এমনটাই ভাবা হচ্ছিল। তামিম-ইমরুলদের ১২৭ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল ঢাকার দুর্দান্ত বোলিং লাইন। কিন্তু মামুলি লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হলো তাদের। শেষ ওভারে ১৩ রানের কঠিন সমীকরণ মেলাতে পারেননি তারা। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে সাইফুদ্দিনকে ছক্কা মেরে অলৌকিক কিছুর আভাস দিয়েছিলেন আন্দ্রে রাসেল। কিন্তু শেষ বলে আর ছক্কা মারতে পারেননি। সাইফুদ্দিনের ইয়র্কার বলটা কোনোরকম ঠেকাতে গিয়ে মাটিতে পড়ে যান রাসেল। তার ব্যাট ও প্যাড ছুঁয়ে গালি দিয়ে চার হয়ে যায়। থ্রিলার ম্যাচে কুমিল্লা জিতল ১ রানে।

মামুলি লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ঢাকার শুরুটাই হয়েছিল বাজে। উপুল থারাঙ্গাকে উড়িয়ে এনে কাল ওপেনিংয়ে নামিয়ে দিয়েছিল ঢাকা; কিন্তু সফল হতে পারেননি অভিজ্ঞ এই শ্রীলঙ্কান। আউট হয়েছেন শূন্য রানে। তখন ঢাকার স্কোর বোর্ডে জমা পড়েছে মাত্র ছয় রান। শুধু থারাঙ্গা নয়, ঢাকার টপ অর্ডারই কাল পুরো ব্যর্থ। পাওয়ার প্লের শেষ বলে সাকিব চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন ফিরে গেলেন ঢাকার রান তখন ২৯! শুরুর এই চাপে পরবর্তী ব্যাটসম্যানরা আর স্বস্তিতে ব্যাট করতে পারেননি। মিডল অর্ডারে দারুণ একটা জুটি গড়ে লড়াই জমিয়ে তুলেছিলেন কাইরন পোলার্ড ও সুনিল নারাইন। পোলার্ড ৩৪ বলে করেন ৩৩ রান। নারাইনের ব্যাট থেকে আসে ২৪। কিন্তু অল্প বিরতিতে এই দুজন ফিরলে আবারও চাপে পড়ে যায় ঢাকা। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দলটির চাপ পাহাড়সম করে তুলেছিল রাসেলের স্বভাববিরোধী ব্যাটিং। প্রথম ১২ বলে মাত্র ২ রান করেছেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার। পরে শহিদ আফ্রিদিকে পরপর দুই ছক্কা হাঁকিয়ে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন রাসেল। কিন্তু আশা জাগিয়েও সুন্দর সমাপ্তি টানতে পারেননি তিনি।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ঢাকার প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। তরুণ সাইফুদ্দিনকে ছক্কা মেরে সমীকরণ ১ বলে ৬ রান করেন রাসেল। শেষ বলে ছক্কা মেরে ঢাকাকে শেষ চারে তুলতে পারেননি ক্যারিবীয়ান তারকা। সাইফুদ্দিনের নিখুঁত ইয়র্কারে শটই নিতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত রোমাঞ্চ ঠাসা ম্যাচে ১ রানের জয় নিশ্চিত হয়ে যায় কুমিল্লার। সাইফুদ্দিন চার ওভার বোলিং করে ২২ রান খরচায় তুলে নেন চার উইকেট। হয়েছেন ম্যাচ সেরাও।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লাকে ভালো সূচনা এনে দিয়েছিলেন তামিম। কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে থেকে তাকে সঙ্গ দিতে পারেনি কেউই। সাকিব, রুবেল, নারাইনদের তোপে কুমিল্লার টপ অর্ডার ধসে পড়ে।

শেষদিকে তরুণ স্পিনার মেহেদি হাসান ও পাকিস্তানি পেসার ওয়াহাব রিয়াজের সৌজন্যে কোনো রকম লড়াইয়ের পুঁজি পায় কুমিল্লা। তামিম ২০ বলে ৪টি চার ২টি ছক্কার সাহায্যে ৩৮ রান করেন। স্পিনার মেহেদি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান করেছেন। রিয়াজের ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ রান। ঢাকার পক্ষে ৩০ রানে চার উইকেট তুলে নিয়েছেন রুবেল হোসেন। এছাড়া দুটি করে স্পিনার শিকার নারাইন ও সাকিবের।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close