ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮

ব্যাটসম্যানদের আফসোসের দিন

আগের দিন সেঞ্চুরি করেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল এবং রনি তালুকদার। দ্বিতীয়জন ডাবল সেঞ্চুরির আভাস দিয়ে দিন শেষ করেছিলেন। কিন্তু পারলেন না তিনি। শতকের ইনিংস নিয়ে বেশিদূর এগোতে পারেননি আশরাফুলও। দুজনকেই আফসোস নিয়ে ফিরতে হলো। ৫০০ রানের পাহাড়েও তাই চড়া হয়নি পূর্বাঞ্চলের। কাল দ্রুতই গুটিয়ে দিয়েছে উত্তরাঞ্চল। পূর্বাঞ্চল থেমেছে ৪৬৬ রানে। সঞ্জামুল ইসলাম ৫ উইকেট তুলে নিয়ে স্বস্তি উপহার দেন উত্তরাঞ্চলকে। জবাব দিতে নেমে প্রথম ইনিংসে শুরুটা দারুণ করেছে উত্তরাঞ্চলও। ২ উইকেটে ১৭৮ রানে দিনের খেলা শেষ করেছে তারা। দারুণ এই শুরুর রূপকার জহুরুল ইসলাম এবং জুনায়েদ সিদ্দিকি। হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন দুজনই।

পরশু বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের এই রাউন্ডের প্রথম দিনের খেলায় ৩ উইকেটে ৩৫৪ রান করেছিল পূর্বাঞ্চল। ১৮৩ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করেছিলেন রনি, ১০৭ রান নিয়ে আশরাফুল। ক্যারিয়ারের চতুর্থ ডাবল সেঞ্চুরির আশায় থাকা রনিকে দিনের তৃতীয় ওভারেই ফেরান এবাদত। এই ওপেনার যোগ করতে পেরেছেন কেবল আর ৪ রান। ভাঙে ২৪৪ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি।

এরপর সুবিধা করতে পারেননি তাসামুল হক, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনরা। আশরাফুলকে ১৩৬ রানে থামান সঞ্জামুল। তাদের ৪৫০ ছোঁয়া নিয়েই তখন টানাটানি। ৯ নম্বরে নেমে ৭ চারে ৩৪ বলে ৩৮ রান করে দলকে ৪৬৬ পর্যন্ত নিয়ে যান তাইজুল ইসলাম। তাকে ফিরিয়েই সঞ্জামুল পূর্ণ করেন ৫ উইকেট। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি তার ১৬তম ৫ উইকেট।

বোলিংয়ের ঘুরে দাঁড়ানোয় উজ্জীবিত উত্তরাঞ্চল দারুণ শুরু করে ব্যাট হাতেও। জহুরুল ও জুনায়েদ উদ্বোধনী জুটিতে তোলেন ৯৮ রান। ৫১ রানে জুনায়েদকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আবু জায়েদ। জহুরুল দলকে এগিয়ে নেন আরো কিছু দূর। ৬৫ রানে তাকে থামান এনামুল হক জুনিয়র। এরপর এ দিন দলকে আর কোনো উইকেট হারাতে দেননি দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ফরহাদ হোসেন ও নাঈম ইসলাম।

ব্যাটসম্যানদের দিনে হেসেছে এনামুল হক, ফজলে মাহমুদ রাব্বি এবং তুষার ইমরানও। কাল বিসিএলের অন্য ম্যাচে তিনজনই ব্যক্তিগত সংগ্রহ ছাড়িয়েছেন ৭০ রান। কিন্তু আফসোস নিয়ে ২২ গজ ছাড়তে হয়েছে প্রত্যেককেই। শতক তো দূরের কথা, আশিও ছুঁতে পারেননি কেউ। এ যেন সেঞ্চুরি এবং ডাবল সেঞ্চুরি মিসের প্রদর্শনীই হলো বিসিএলের দ্বিতীয় দিনে।

সতীর্থ তিন ব্যাটসম্যান ফিরে যাওয়ার পর অপরাজিত হাফসেঞ্চুরি করেছেন আবার রকিবুল হাসান। কাল চট্টগ্রামে চার হাফসেঞ্চুরির ওপর দাঁড়িয়ে মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে লিড নিয়েছে দক্ষিণাঞ্চল। প্রথম ইনিংসে মধ্যাঞ্চলের ২৩৪ রানের জবাবে দক্ষিণাঞ্চল দ্বিতীয় দিন শেষে ৫ উইকেটে করেছে ৩০৯ রান।

কাল ৮ উইকেটে ২৩৪ রানে দিনের খেলা শুরু করেছিল মধ্যাঞ্চল। তাইবুর রহমানের সৌজন্যে এ দিন যোগ করে তারা আর ২৭ রান। এর ২৫ রানই করেন তাইবুর। ৪৩ রানে দিন শুরু করা ব্যাটসম্যান ৬৮ রান করে আউট হন সবার শেষে। দক্ষিণাঞ্চল ব্যাটিংয়ে নেমে তৃতীয় ওভারেই হারায় অভিজ্ঞ শাহরিয়ার নাফিসকে। দ্বিতীয় উইকেটে ১৪৬ রানের জুটি গড়েন এনামুল ও ফজলে মাহমুদ। ফজলে খেলছিলেন ওয়ানডের গতিতে। ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৪ রান করা ব্যাটসম্যানকে থামান আরাফাত সানি। সঙ্গীকে হারানোর পর বেশিদূর এগোতে পারেননি এনামুলও। ১০ চারে এই ওপেনার করেছেন ৭৭ রান। সানির শিকার তিনিও। এরপর চারে নামা আল আমিনকেও দ্রুত ফিরিয়ে দেন সানি। পঞ্চম উইকেটে আরেকটি শতরানের জুটিতে দক্ষিণাঞ্চল পেয়ে যায় লিড। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান তুষার ও রকিবুল যোগ করেন ১৩১ রান। জুটি ভাঙেন তরুণ পেসার ইয়াসিন আরাফাত। ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৭৮ রানে আউট হয়েছেন তুষার। ৫৪ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন রকিবুল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

মধ্যাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চল

মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস : ২৬১

দক্ষিণাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৮২.১ ওভার, ৩০৯/৫ (এনামুল ৭৭, ফজলে মাহমুদ ৭৪, তুষার ৭৮, রকিবুল ৫৪*; ইয়াসিন ২/৪২, সানি ৩/১০৪)।

পূর্বাঞ্চল-উত্তরাঞ্চল

পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস : ১২০.১ ওভার, ৪৬৬ (আগের দিন ৩৫৪/৩) (রনি ১৮৫, আশরাফুল ১৩৬, তাসামুল ১৯, তাইজুল ৩৭; এবাদত ২/৯৫, এনাম ১/৬৫, সোহাগ ২/৭৪,

সানজামুল ৫/১১৫)

উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৫৪ ওভার, ১৭৮/২ (জহুরুল ৬৫, জুনায়েদ ৫১, ফরহাদ ৩৪*,

নাঈম ১৮*; আবু জায়েদ ১/৩

এনামুল জুনিয়র ১/১৬)।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close