ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৫ ডিসেম্বর, ২০১৮

সংসদ নির্বাচনে মাশরাফি

সিরিজ শেষে রাজনীতির ভাবনা

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নড়াইল-২ আসন থেকে লড়বেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তার নির্বাচন এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টাইগারদের ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে চলছে ফিসফাঁস। মাশরাফির রাজনীতিতে আসা নিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছেন দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।

নির্বাচন এবং রাজনীতি ইস্যুতে মাশরাফি প্রথম মুখ খুলেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। দিয়েছিলেন আবেগঘন এক বিবৃতি। তাতেও মাশরাফির অবস্থানটা ঠিক পরিষ্কার হচ্ছিল না। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে মাশরাফি ঘরের মাঠে ক্যারিয়ারের সম্ভাব্য শেষ সিরিজের সবকটি ম্যাচ খেলবেন কিনা সংশয় চলছে তা নিয়েই। অবশেষে গণমাধ্যমের সামনে এলেন মাশরাফি। যেখানে ক্রিকেটের বাইশ গজের পাশাপাশি রাজনীতি মাঠ নিয়েও তিক্ত কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হলো তাকে।

আগামী বছর ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে বিশ্বকাপ শেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে মাশরাফি অধ্যায়ের ইতি ঘটতে পারে। কার্যত এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে ক্রিকেট মহলে। কিন্তু বিশ্বকাপ শেষের আগেই নতুন একটা অধ্যায় শুরু করে দিয়েছেন তিনি। ঠিক এই সময়ে অধিনায়কের রাজনীতিতে নেমে পড়ায় ক্রিকেট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে আশার কথা শুনিয়েছেন মাশরাফি। কাল গণমাধ্যমকে আশ্বস্ত তিনি বলেছেন, ‘আমার দিক থেকে একদমই না। আমার মানসিক দিক দিয়ে একদমই না। কারণ আমি ওইখানে (নির্বাচনী এলাকা) এখনো একদমই জড়িত না। পুরোপুরি অনুশীলনে মন আছে। আমি ওখানে মনোযোগ দেব ১৪ ডিসেম্বরের পর (সিরিজ শেষে)। যতটুকু করার ১৪ তারিখের পরে গিয়েই করব। তত দিন পর্যন্ত আমার পুরো মনোযোগ থাকবে খেলায়।’

সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে আগামী ৯ ডিসেম্বর শেষ হবে ১৪ ডিসেম্বর। মাশরাফির কথাতেই পরিষ্কার সিরিজের সবকটি ম্যাচেই খেলছেন তিনি। আপাতত দল ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও বিশ্বকাপে মাশরাফির রাজনীতির প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে এখনই অতদূরের কথা ভাবছেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক।

মাশরাফির ভাবনায় আপাতত ওয়ানডে সিরিজ জয়। টাইগার দলপতি বলেছেন, ‘আমার কাছে এই নির্বাচনে আসার আগে যা ছিল, প্রত্যেকটা সিরিজ যেমন ছিল, এই সিরিজটাও একই রকম। আমার শেষ আর শুরুতে কিছু যায় আসবে না। এভাবে আমি ভাবিনি কোনো দিন, ভাবিও না। অবশ্যই সিরিজটা জিততে চাই আমরা। আর দশটা সিরিজ যেভাবে দেখতে চেয়েছি, এটাও সেভাবেই দেখছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে চলছে মাশরাফির ক্যারিয়ার। রাজনীতিতে প্রবেশ করার জন্য এই সময়টাকেই সেরা হিসেবে মনে করছেন তিনি, ‘আমি বিশ্বকাপ ধরে পরিকল্পনা করছিলাম। আর সাত থেকে আট মাস বাকি আছে। বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরের সাড়ে চার বছরে আমি জানি না আমার অবস্থা কী হবে। একটা সুযোগ এসেছে মানুষের জন্য কাজ করার। যেটা আমি সব সময়ই উপভোগ করি। আমি একটা ফাউন্ডেশনও করেছিলাম। আমার জন্য একটা সুযোগ এসেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে যে সুযোগটা দিয়েছেন। আমার এলাকার জন্য কিছু কাজ করার। আমার মনে হয়েছে এটা আমার জন্য বড় সুযোগ তাদের জন্য কাজ করার। সাত মাস বা আট মাস পর তো আর জাতীয় নির্বাচন হবে না। তাই মনে হয়েছে এই সুযোগটা নেওয়া উচিত।’

দীর্ঘ দেড় যুগেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে অনেক সংবাদ সম্মেলনই করেছেন মাশরাফি। কিন্তু কালকের প্রেক্ষাপটটা একেবারেই আলাদা। গণমাধ্যমের ছুড়ে দেওয়া বাউন্সারগুলো দারুণভাবেই সামলেছেন মাশরাফি। তবু তার কথায় তিনি হয়ে থাকলেন বিনয়ের অবতার, ‘আমার ক্যারিয়ার অবশ্যই শেষের দিকে। না আমি শচীন টেন্ডুলকার, না আমি গ্লেন ম্যাকগ্রা যে মানুষ আমাকে স্মরণ করবে। আমার মতো করেই ক্রিকেট খেলেছি। আমার মতো করেই সংগ্রামমুখর ক্যারিয়ারটা গড়েছি। মানুষের জন্য কিছু করা সব সময়ই উপভোগ করেছি। এটা আমার ছোটবেলার শখ ছিল বলতে পারেন। ছোটবেলার চাওয়া-পাওয়া ছিল। যদি বৃহৎ পরিসরে কিছু করা যায়, এ ভাবনাতেই রাজনীতিতে আসা।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close