শরীফুল রুকন, চট্টগ্রাম

  ২১ নভেম্বর, ২০১৮

‘লাকি গ্রাউন্ডে’ জয়ের আশা

শুধু সর্বশেষ টেস্ট ড্র করাতেই নয়, চট্টগ্রাম বাংলাদেশ দলের জন্য ‘লাকি গ্রাউন্ড’ও বটে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টের আগে শুধু এ কারণেই নিজেদের এগিয়ে রাখতে পারেন মুশফিকুর রহিমরা। ভালো কিছুর আশা জাগাচ্ছে মুমিনুল হক, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সও।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে খেললেই ২২ গজে মুমিনুল হক যেন ভীষণ সপ্রভিত। এই স্টেডিয়ামে এর আগে তিনি সাতটি টেস্ট খেলে ৮৬.৯০ গড়ে করেছেন ৮৬৯ রান। মুমিনুলের সাতটি টেস্ট সেঞ্চুরির মধ্যে পাঁচটিই চট্টগ্রামের এই মাঠে। সর্বোচ্চ ১৮১ রানের ইনিংস খেলেছেন জহুর আহমেদের মাঠে।

এই মাঠে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট ম্যাচের ফলাফল ড্র হয়েছিল। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ম্যাচটির দুই ইনিংসে বাংলাদেশ তোলে ৮২০ রান। অন্যদিকে ৯ উইকেটে ৭১৯ রান তোলার পর ইনিংস ঘোষণা করেছিল শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসে মুমিনুল হক ২১৪ বলে ১৭৬ রান সংগ্রহ করেন। মুশফিকুর রহিম ৯২ ও মাহমুদউল্লাহ ৮৩ রানে অপরাজিত থাকেন। দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুল হক তোলেন ১০৫ রান। প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে এক টেস্টে দুটি শতক হাঁকিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কারও পান মুমিনুল।

অন্যদিকে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ১৪ ম্যাচ খেলে ১০৯২ রান সংগ্রহ করেছেন মুশফিকুর রহিম। টেস্ট ক্রিকেটে মুশফিকুর রহিমের বর্তমান রান ৩৯৬৯। দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে চার হাজার রানের ক্লাবে প্রবেশ করতে তার প্রয়োজন আর মাত্র ৩১ রান। এ ছাড়াও চট্টগ্রাম টেস্টের দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮১ রান করতে পারলেই অভিজাত এ ফরম্যাটে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে যাবেন মুশফিক। শীর্ষে থাকা তামিমের বর্তমান রান ৪০৪৯।

জহুর আহমেদের মাঠে ২০১১ সালের অক্টোবরে প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ দল। ওই ম্যাচটি ড্র হয়। এরপর এই মাঠে দুই দল আর মুখোমুখি হয়নি। সে ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৬৮ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে দুই রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিকুর রহিম। তামিম ইকবাল প্রথম ইনিংসে ৫২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭ রান করেন। তবে সাত বছর পর একই মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে মাঠে নামছেন না ইনজুরিতে পড়া তামিম ইকবাল।

গতবার চট্টগ্রামের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে সাকিব আল হাসানের পারফরমেন্সও ছিল সন্তোষজনক। প্রথম ইনিংসে ৪০ রানের পাশাপাশি তিন উইকেট নেন সাকিব। পরে দ্বিতীয় ইনিংসে মাঠে নামার সুযোগই পাননি তিনি, তার আগেই খেলার ফলাফল ড্র হয়ে যায়। ওই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একজন ছাড়া অন্যরা ব্যক্তিগত সংগ্রহ অর্ধশতক পার করতে পারেননি। সাত উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন বাংলাদেশের ইলিয়াস সানি।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বোলিং রেকর্ডে এক নাম্বারে অবস্থান সাকিব আল হাসানের। ২০০৮ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৬ রানে সাত উইকেট নিয়ে একইসঙ্গে ক্যারিয়ার সেরা রেকর্ডটিও করেন তিনি। গত জুলাইয়ে জ্যামাইকা টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাকিব ছয় উইকেট নিয়েছেন ৩৩ রান। দেশের বাইরে যা বাংলাদেশের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড।

হাতের ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা সাকিবের সামনে রয়েছে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ২০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করার। ৫৩ ম্যাচে ১৮ বার পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিবের বর্তমান উইকেট সংখ্যা ১৯৬। চট্টগ্রামের উইকেট স্পিনবান্ধব হবে এমন ধরে নিয়েই প্রস্তুতি নিচ্ছে দুই দল। স্পিন সহায়ক উইকেটে এক ম্যাচে চার উইকেট নেওয়া সাকিবের জন্য কঠিন কিছু হয়তো হবে না।

অতীতের এসব সুখস্মৃতি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রেরণা জোগাতে পারে টাইগারদের। চেনা রূপে মুমিনুল, সাকিব, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহদের দেখা গেলে বাংলাদেশকে নিশ্চয়ই হতাশায় ডুবতে হবে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close