ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ১২ নভেম্বর, ২০১৮

তবু আক্ষেপ মুমিনুলের

দিনের শুরুতেই ধসে পড়েছিল বাংলাদেশের টপ অর্ডার। ২৬ রান তুলতেই তিন উইকেট নেই টাইগারদের। এই ধ্বংসস্তূপ থেকে স্বাগতিক দলকে টেনে তুললেন মুমিনুল হক সৌরভ। সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ২৬৬ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে তুললেন ‘পকেট রকেট’। দলকে কক্ষপথে ফেরানো এই জুটি গড়ার পথে শতক তুলে নিয়েছেন দুজনই। তবে মুশফিককে ছাপিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনের নায়ক মুমিনুলই। ১৬১ রানের রাজসিক ইনিংস খেলে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড গড়েছেন তিনি। বিপর্যস্ত বাংলাদেশকে ভালো একটা অবস্থানে পৌঁছে দিয়ে মুমিনুল যখন আউট হয়ে সাজঘরে ফিরছিলেন তখন গোটা গ্যালারি দাঁড়িয়ে থেকে তাকে অভিবাদন জানিয়েছে। এমন একটা দিন শেষেও আক্ষেপের আগুনের পুড়েছেন বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান।

মুমিনুলের আক্ষেপ ডাবল সেঞ্চুরি করতে না পারার। ক্রিকেটীয় ভাষায় দিনের খেলা শেষ না করে ফিরে আসায়। মুমিনুলের আফসোস শেষ বিকেলে তার সঙ্গে সাজঘরে ফিরে গেছেন ‘নাইট ওয়াচম্যান’ তাইজুল ইসলামও। না হলে প্রথম দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের হাসিটা আরো চওড়া হতে পারত। কাল দিনের খেলা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মুমিনুল বলেছেন, ‘একটু আফসোস আছে। আমার জন্য একটা উইকেট বেশি পড়ে গিয়েছে। আমি তো আউট হয়েছি, সঙ্গে আরেকটি উইকেট পড়েছে। শেষের দিকে আরেকটু খেলতে পারলে দলের জন্য ভালো হতো। এতটুুকুু আফসোস আছে। এটাই আমাকে একটু পোড়াচ্ছে, খারাপ লাগছে।’

দ্বিশতক হাতছাড়া হওয়ার আক্ষেপটা আছে মুমিনুলের। কিন্তু সেটাকে আড়াল করে রাখলেন ‘লিটল মাস্টার’। মুমিনুল কষ্টটা চেপে রাখলেন রসিকতার সুরে, ‘বাংলাদেশ কোনো দিন যদি ৩৫০, ৪৫০ তাড়া করার জন্য যখন খেলে, তখন হয়তো ২০০ হতে পারে! দলের যখন দরকার তখন আসবে। এটা যত পরে হবে, আমার ক্ষিধেটা তত বাড়বে। হয়ে গেলে তখন ক্ষিধেটা তো মিটে গেল!’

টেস্ট ক্যারিয়ারে এটা মুমিনুলের সপ্তম সেঞ্চুরি। সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করেছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেÑ তিনটি। দুটি করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। কাল জিম্বাবুয়ের সঙ্গেও নিজের দ্বিতীয় শতকটা তুলে নিয়েছেন বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। তার সবকটি শতকই দেশের মাটিতে। অথচ এই শতকের আগের আট ইনিংস মিলিয়ে ৬৯ রান করেছেন মুমিনুল। তার রানে ফেরাটা খুব দরকার হয়ে পড়েছিল। এই সেঞ্চুরিটাকেও তাই মুমিনুল আলাদাভাবে দেখছেন প্রেক্ষাপট বিবেচনায়। তার কাছে এই শতকটা ‘ইন্টারেস্টিং’। কাল সাংবাদিক বৈঠকে মুমিনুল বলেছেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে এই সেঞ্চুরিতে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। আমার জীবনের সেরাগুলোর একটি। যত সেঞ্চুরি করেছি ক্যারিয়ারে, তার মধ্যে এটি বেশ ইন্টারেস্টিং। কারণ অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। যতক্ষণ ব্যাট করেছি, খুব কষ্ট করে ব্যাট করেছি। অন্য সেঞ্চুরিগুলোর তুলনায় খুব কঠিন ছিল কন্ডিশন ও পরিস্থিতি।’

ব্যাট করার জন্য মিরপুরের এই উইকেট দারুণ সহায়ক। তবু শুরুতেই ব্যাটিংয়ে ছন্দপতন হওয়ায় একটা ভয় ঢুকে গিয়েছিল সমর্থকদের মধ্যে। এই অবস্থা থেকে মুমিনুল মুশফিককে নিয়ে যেভাবে দলকে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন সেটার বিশেষণ এক কথায় অসাধারণ। মুমিনুলের ১৬১ রানের ইনিংসটার বিশেষণ আরো অনেককিছুই দেওয়া যায়। তবে দুর্দান্ত এই শতকের অর্ধেক কৃতিত্বটা সতীর্থ মুশফিককে দিয়েছেন মুমিনুল। তিনি বলেন, ‘তিনি (মুশফিক) আমাকে এত পরামর্শ দিয়েছেন যেগুলো আমার ব্যাটিংয়ে খুব কাজে এসেছে। সত্যি বলতে, আমার এই সেঞ্চুরির অর্ধেক কৃতিত্ব তারই।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close