reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

‘গোল বলের বিশ্বাস নাই’

ইয়র্কার, বাউন্সার, কাটার, স্লোয়ার ডেলিভারিতে ব্যাটসম্যানদের প্রায়ই নাকাল করে থাকেন মুস্তাফিজুর রহমান। পরশু আফগানিস্তানের বিপক্ষে এশিয়া কাপের অস্তিÍত্ব রক্ষার লড়াইয়েও বল হাতে বিধ্বংসীরূপে হাজির হয়েছেন বাঁ-হাতি পেসার। ইনিংসজুড়ে দুর্দান্ত বল করা মুস্তাফিজই শেষ ওভারে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের পক্ষে। শেষ ওভারে ৪ রান খরচায় ১ উইকেট তুলে নিয়ে টাইগারদের উপহার দিয়েছেন ৩ রানের দারুণ জয়। আফগানদের বিপক্ষে নাটকীয় জয়, অলিখিত সেমিফাইনালের প্রতিপক্ষ পাকিস্তানসহ নানা বিষয় নিয়ে কাল গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন মুস্তাফিজ। দুবাইতে টিম হোটেলে তার বলা কথাগুলোর চৌম্বক অংশ পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলোÑ

প্রশ্ন : শেষ বলের নাটকে জিতলেন। এই জয় কতটা স্বস্তির?

মুস্তাফিজ : দুবাইর চেয়ে ওখানে (আবুধাবি) গরম একটু বেশি। সবারই কষ্ট হয়েছে। অনেক ঘেমেছে সবাই। ক্র্যাম্প (পেশির টান) লাগছিল। শুধু আমার না, অনেকেরই। কষ্টের ফলে এই জয়টা স্বস্তি দিয়েছে।

প্রশ্ন : আফগানিস্তনের শেষ পর্যায়ে মাশরাফির সঙ্গে আপনার কী কথা হয়েছিল?

মুুস্তাফিজ : ভাই আমাকে একটা কথা বলছিলেন যে, তোর বোলিং করা লাগবেই। মাঝখানে ৩ ওভার বোলিংয়ের সময় ভাইকে বলেছিলাম যে পায়ে লাগছে। ভাই তখন বলেছেন যে তুই বিশ্রাম নে; শেষে আবার করবি। আমি বলছি ঠিক আছি ভাই যেভাবে পারি করব।

প্রশ্ন : শেষ ওভারে বাংলাদেশ জিততে পারে এই বিশ্বাস ছিল?

মুুস্তাফিজ : গোল বলের কোনো বিশ্বাস নাই। উপরওয়ালা সহায় থাকলে হবে। শেষ ওভারে রান কুড়ির ওপরে থাকলে ঠিক আছে। কিন্তু ২০ পর্যন্ত থাকলে কোনো গ্যারান্টি নেই। আমার চেষ্টা ছিল নিজের ওপর বিশ্বাস ছিল। আর সময়টা ভালো গেছে এই আর কী!

প্রশ্ন : শেষ যেভাবে জিতেছেন ভাগ্যের সহায়তা ছিল বলে মনে করেন কি?

মুুস্তাফিজ : হ্যাঁ, অবশ্যই। এখানে অনেক অভিজ্ঞ বোলারও শেষ ওভারে ৮-১০ রান দিয়ে দেয়। এটা (জয়) আমাদের কপালে ছিল। কপালে না থাকলে হতো না।

প্রশ্ন : বোলিংয়ে সময় আপনাকে অনেক সংগ্রাম করতে দেখা গেছে। রান আপ নিয়ে বল করাটা কতটা কঠিন ছিল?

মুস্তাফিজ : রান আপে বেশি জোরে দৌড়াতে গিয়ে আমার পায়ে টান লাগছিল। এজন্য এমনভাবে দৌড়ালাম যেন পায়ে না লাগে। সেভাবেই বোলিং করেছি। বল করা লাগতই। কোনো ঐচ্ছিকতা ছিল না। বেশি লাগলে ছোটো রান আপে বল করতাম।

প্রশ্ন : শেষ ওভারে বোলিং করার সময় বাড়তি চাপ মনে হয়েছিল?

মুস্তাফিজ : না, তেমন কিছু নয়। স্বাভাবিকভাবে বোলিং করার চেষ্টা করেছি। বেশি ভাবলে দেখা যেত ওই ২ বলেই ৮ রান নিয়ে নিয়েছে। বেশি ভাবিনি, এ কারণেই জিততে পেরেছি।

প্রশ্ন : শেষ ওভারের ফিল্ডিং সাজানো নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছিল?

মুুস্তাফিজ : ভাই (মাশরাফি) আমাকে বলেছিলেন তুই যেটা ভালো মনে করিস সেটাই কর। আমি জাতীয় দলে খেললে সবসময় সিনিয়রদের দেখি। কী করলে, কোনটা নিলে, কোন জায়গায় ফিল্ডার নিলে ভালো হয়। আমি বলছিলাম। ভাইকে বলেছি। তিনি বলেছেন এটাই ঠিক আছে।

প্রশ্ন : স্নায়ুক্ষয়ী একটা ম্যাচ জিতলেন দলের আবহটা এখন কেমন?

মুস্তাফিজ : দলের অবস্থা ভালো। ম্যাচটা জিততে পারায় আমাদের ভালো হয়েছে। কারণ আমরা পরপর দুইটি ম্যাচ

হেরে বসেছি। এখন জয়ে ফিরেছি। পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলেই

ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ। দলের সবাই-ই ফুরফুরে মেজাজে থাকারই কথা।

প্রশ্ন : শেষ বলটা করার সময় কী ভেবেছিলেন?

মুস্তাফিজ : একটা সামনে করলে নাগালের বাইরে থাকে। পেছনের দিকে করলেও মাঠ অনেক বড় ছিল। ছয় হলে হলো চার যেন না হয়। এটা ভেবেই বল করেছিলাম।

প্রশ্ন : মাশরাফির সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছিল আপনার?

মুুস্তাফিজ : শেষ ওভারে ৮ রান বাকি ছিল। মাশরাফি ভাই এটাই বলছিলেন যে আমরা অনেকবারই ৮-৯ রান ডিফেন্স করতে গিয়ে হেরেছি। ভাই বলছিলেন আজকে (রোববার) তুই জেতা। তখন ভালো লাগছিল। কিন্তু পারছিলাম না, তবু চেষ্টা করলাম কপালে থাকলে হবে। পাশে (নাজমুল ইসলাম) অপু ভাই ছিলেন। তিনিও বলেছিলেন দেখ কী হয়। তাকেও একই কথা বললাম।

প্রশ্ন : পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলেই ফাইনাল। কতটা আশাবাদী?

মুস্তাফিজ : গেইল যেদিন খেলে সেদিন কারোর কিছু করার থাকে না। তেমনিভাবে পাকিস্তানেরও বিশ্বাস নেই। ওরা যেদিন খেলে, সেদিন পাত্তাও দেয় না। যদি আমাদের ভাগ্যে থাকে তাহলে ওদের মতো উল্টাটা হতে পারে। না থাকলে নাই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close