ক্রীড়া প্রতিবেদক, দুবাই থেকে

  ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

সামনে আফগানিস্তান নির্ভার বাংলাদেশ

এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। ১৩৪ রানের বিশাল জয়টা সুপার ফোরের পথটা করে দিয়েছে সুগম। তবু নির্ভার হতে পারছিল না টাইগার শিবির। সোমবার আফগানিস্তান অঘটনের জন্ম দেওয়ায় দুশ্চিন্তার মেঘ অনেকটাই সরে গেছে। আফগান স্পিন নিয়েও ভাবতে হচ্ছে না মাশরাফিদের। আগামীকালের ম্যাচটা যে স্রেফ নিয়মরক্ষার। হারলে খুব একটা ক্ষতি নেই। জিতলে আত্মবিশ্বাসের পালে লাগবে বাড়তি একটা হাওয়া।

শুক্রবার সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচের আগে বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে টাইগাররা। কাল অনুশীলন করেনি বাংলাদেশ দল। হোটেলে অলস সময় কাটিয়েছেন খেলোয়াড়রা। কেউ কেউ ঘুরে বেরিয়েছেন দুবাই নগরী। কাল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে আসা মেহেদি হাসান মিরাজকেও বেশ চনমনে দেখা গেল।

আফগান স্পিন বিষে ভয় নেই বাংলাদেশের। আগের দিন গণমাধ্যমকে এমনটাই বলে গেছেন মোহাম্মদ মিঠুন। কাল নির্ভরতার কথা শোনালেন মিরাজও, ‘আমাদের দলেও ভালো স্পিনার রয়েছে। এই মুহূর্তে সবাই খুব ভালো খেলছে। আমাদের দলে আছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। পেসাররাও ভালো করছেন। সবমিলিয়ে দলে একটা ভারসাম্য তৈরি হয়েছে। আশা করছি (আফগানিস্তানের সঙ্গে) খুব ভালো একটা ম্যাচ হবে।’

আফগান স্পিনারদের মধ্যে কোনো জুজু দেখছেন না মিরাজ। বরং ফরম্যাটটা ওয়ানডে বিধায় আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের যে ব্যাটসম্যান আছেন তারা স্পিন অনেক ভালো খেলেন। আশা করছি তেমন কোনো সমস্যা হবে না। ৫০ ওভারের খেলা। ওখানে অনেক সময় থাকে, এক দুই রান নেওয়ার সুযোগ থাকে। যে কারণে রান নেওয়ার জন্য ওই রকম তাড়াহুড়ো করা লাগে না।’

আগের ম্যাচে বাংলাদেশ বিশাল ব্যবধানে জিতলেও দলকে ভাবাচ্ছে টপ অর্ডার। লঙ্কানদের বিপক্ষে দুই রানের মধ্যে হারাতে হয়েছে দুই উইকেট। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উইকেট ছেড়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছে আবার ওপেনার তামিম ইকবালকে। কঠিন এই চাপ থেকে দলকে উদ্ধার করেছেন মুশফিক ১৪৪ রানের দারুণ এক ইনিংসে।

ম্যাচের নায়ককে তাই আলাদাভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে দিলেন বাংলাদেশ কোচ স্টিভ রোডস। বলেছেন, ‘আমরা শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাট করব। অবশ্যই শুরুটা ভালো চাই। ভালো একটা অবস্থানে যেতে এটা খুব জরুরি। সেদিন মুশফিক সত্যিই অসাধারণ ইনিংস খেলেছে। কারণ চাপের মুখে সে ব্যাটিং করেছিল। এটা আমার দেখা সেরা ওয়ানডে ইনিংসগুলোর একটি। ওকে খুব ভালো সঙ্গ দিয়েছে মিঠুন। আশা করছি এ ধরনের জুটি আমরা আরো পাব।’

দুই রানে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তামিম। কব্জির হাড়ে চিড় নিয়ে দেশে ফিরে গেছেন তামিম। টুর্নামেন্টের শুরুতে এভাবে ব্যাটিং স্তম্ভকে হারানোটা যে বড় একটা ধাক্কা হয়ে এসেছে সেটা মানছেন বাংলাদেশ কোচ। বলেছেন, ‘তামিমকে হারানোটা বড় ধাক্কা। শেষ ৩০ ওয়ানডেতে ও দুর্দান্ত ফর্মে ছিল। ও সত্যিই নিজের খেলাটার উন্নতি করেছে।’

অবশ্য তামিম না থাকলেও তরুণদের নিয়ে আশাবাদী রোডস। বলেছেন, ‘আমাদের কয়েকজন আছেন যারা সুযোগের জন্য মুখিয়ে আছে। ওরা দেখাতে চায় যে কী করতে পারে। যেমন মুমিনুল, শান্ত, আরিফুল। তামিমের ছিটকে পড়াটা অন্যদের জন্য সুযোগ। আমি নিশ্চিত সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে সবটুকু নিংড়ে দেবে ওরা।’

লঙ্কানদেন বিপক্ষে বাংলাদেশ শক্তিশালী সংগ্রহ পেয়েছিল মুশফিক ও মিঠুনের ব্যাটিং দৃঢ়তায়। পরে বোলাররা তাদের বাকি কাজটা সেরেছেন। রোডসের বিশ্বাস সামনের ম্যাচগুলোতেও আলো ছড়াবেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুস্তাফিজুর রহমানরা। কাল সংবাদ সম্মেলনে টাইগার কোচ বলেছেন, ‘মাশরাফি এবং ফিজ (মুস্তাফিজ) অভিজ্ঞ বোলার। রুবেলও অনেক দিন ধরে খেলছে। রনি টি-টোয়েন্টিতে ভালো করছে। স্পিনাররা প্রায় সব সময় ভালো করছে। আমার বিশ্বাস পরের ম্যাচগুলোতে আমরা ভালো করব। জয়ের জন্য আমরা সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব। ভারত কিংবা পাকিস্তানকে হারানোটা হবে দারুণ ব্যাপার।’

বাংলাদেশ দল নিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত স্বপ্ন দেখছেন রোডস। কাল তিনি বলেছেন, ‘অবশ্যই, আরো সাফল্যের জন্য আমরা ক্ষুদার্থ। খেলাধুলার মূল কথা হচ্ছে জয়ের চেষ্টা করা এবং সফল হওয়া। শুধু আমি নই। সবাই সফলতা পছন্দ করেন। তবে ভারত, পাকিস্তানের সঙ্গে জেতাটা কঠিন হবে। কিন্তু আমাদের দলে কিছু খেলোয়াড় আছে যারা অনেক পরিশ্রমী। পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close