তাঁর আবেগমিশ্রিত বিদায়ী চিঠি
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পরশু জুভেন্টাসে নাম লিখিয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তাতেই শেষ হলো রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে পর্তুগিজ যুবরাজের ৯ বছরের মধুচন্দ্রিমা। প্রিয় ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্তটা স্বাভাবিকভাবেই নাড়িয়ে দিয়েছে রোনালদোকে। সান্তিয়াগো চত্বর ছাড়ার আগে সমর্থক, সতীর্থ তথা রিয়াল মাদ্রিদ সংশ্লিষ্ট সবার উদ্দেশ্যে আবেগমিশ্রিত একটা চিঠিয়ে দিয়েছেন ‘সিআর সেভেন’। তার লেখা চিঠিটি ভাষান্তর করে পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো-
মাদ্রিদ শহর এবং রিয়াল মাদ্রিদে কাটিয়ে যাওয়া বছরগুলো সম্ভবত আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের সময়। এই ক্লাব, ক্লাবের সমর্থক এবং মাদ্রিদ শহরের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তারা আমাকে যেভাবে ভালোবেসেছেন, সমর্থন দিয়েছেন তাতে করে সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই।
যা হোক, আমার মনে হয় জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করার সময় হয়ে গেছে। তাই আমাকে ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য ক্লাবের কাছে অনুরোধ করেছিলাম। আমি সত্যিই দুঃখিত। আমি সবাইকে বলছি, বিশেষ করে সমর্থকদের। দয়া করে আমাকে বোঝার চেষ্টা করুন।
এখানে আমার ৯টা বছর চমৎকারভাবেই কেটেছে। এখানে কাটানো বছরগুলো আমার জন্য ছিল অনন্য। আমার কাছে ক্লাবের অনেক প্রত্যাশা ছিল। তাই সময়টা আমার জন্য আরো কঠিন হয়ে উঠেছে। কিন্তু আমি সব সময়ই এটা নিয়ে সচেতন ছিলাম। এখানে ফুটবল খেলাটা যতটা উপভোগ করেছি এটা কখোনোই ভুলতে পারব না।
এখানকার মাঠ ও ড্রেসিংরুমে চমৎকার সব সতীর্থ পয়েছিলাম। সমর্থকদের আবেগটাও টের পেয়েছিলাম। আমরা সবাই মিলে টানা তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছি। গত পাঁচ বছরের মধ্যে চারবারই শিরোপা জিতেছি। ব্যক্তিগত সন্তুষ্টির জায়গা থেকে এখানে থাকাকালীন আমি চারটি ব্যালন ডি’অর ও তিনটি গোল্ডেন বুট পেয়েছি। এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে বিশাল এবং অসাধারণ একটা ক্লাবে খেলতে পেরেছি বলে।
রিয়াল মাদ্রিদ আমার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। আমার পরিবারেরও মন জয় করে নিয়েছে। এ কারণে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি বেশি বলতে চাই ধন্যবাদ। ক্লাব সভাপতি, পরিচালকরা, আমার সতীর্থরা, কোচদের, ফিজিওদের এবং ক্লাবের প্রত্যেক কর্মীকে ধন্যবাদ; যারা ক্লান্তিহীনভাবে সবকিছু সচল রেখেছেন, এমনকি ছোট ছোট বিষয়েও তারা খেয়াল রেখেছেন।
সমর্থকদের এবং স্প্যানিশ ফুটবলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এই ৯ বছরে আমি দুর্দান্ত কয়েকজন খেলোয়াড়ের বিপক্ষে খেলেছি। তাদের প্রতিও আমি সম্মান এবং শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
আমি অনেক সময় নিয়ে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, জীবনের নতুন সিঁড়িতে পা রাখার সময় এসে গেছে। আমি চলে যাচ্ছি। কিন্তু যেখানেই যাই, এই জার্সি, পরিচয় এবং সান্তিয়াগো বার্নাব্যু সব সময়ই আমার মনে থাকবে। সবাইকে ধন্যবাদ এবং অবশ্যই সেই কথাটা বলতে চাই যেটা নয় বছর আগে প্রথমবার স্টেডিয়ামে এসে বলেছিলাম হালা মাদ্রিদ!
"