আমির হোসেন
এই ইংল্যান্ড অন্যরকম
এক যুগ পর বড় কোনো টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পেল ইংল্যান্ড। সবশেষ ২০০৬ বিশ্বকাপে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে জিতেছিল তারা। এরপর মাঝে দুই বিশ্বকাপ ও অন্যান্য টুর্নামেন্টে তারা প্রথম ম্যাচে জয় পায়নি। ১২ বছর পর রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ইংলিশরা ২-১ গোলে জয় পেল তিউনিশিয়ার বিপক্ষে। তবে জয়টা সহজ ছিল না। এমন জয় পেতে কম ঘাম ঝরাতে হয়নি কেইন-স্টার্লিংদের।
ম্যাচের ১১ মিনিটে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হ্যারি কেন গোল করে এগিয়ে দেন দলকে। ৩৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ম্যাচে সমতা ফেরায় তিউনিশিয়া। এই সমতা নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ভাঙতে পারেনি ইংল্যান্ড। যোগ করা সময়ে (৯০+১) সেই হ্যারি কেন আবারো গোল করেন। নিশ্চিত করেন ১২ বছর পর মেজর কোনো টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের জয়।
সোমবার রাতে রাশিয়ার ভলগোগ্রাদে ম্যাচের ১১ মিনিটেই এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। এ সময় কর্নার পায় ইংলিশরা। কর্নার কিক নেন অ্যাশলে ইয়াং। সেখান থেকে উড়ে আসা বলে হেড নেন জন স্টোনস। তার নেওয়া হেড ঝাপিয়ে পরে ফিরিয়ে দেন তিউনিশিয়ার গোলরক্ষক মৌয়েজ হাসেন। ফিরতি বল চলে যায় হ্যারি কেনের কাছে। ডান পায়ের আলতো টোকায় বল জালে পাঠাতে ভুল করেননি কেইন। এর ৪ মিনিট পর তিউনিশিয়ার গোলরক্ষক ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন। ৩৪ মিনিটে পেনাল্টি পায় তিউনিশিয়া। এ সময় ইংল্যান্ডের কাইল ওয়াকার ডি বক্সের মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ফাউল করেন তিউনিশিয়ার ফখরুদ্দিন বেন ইউসেফকে। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান ফেরজানি সাসি। তাতে ১-১ গোলের সমতা নিয়েই শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।
প্রথমার্ধে ইংল্যান্ডের খেলায় যে গতি ছিল দ্বিতীয়ার্ধে সেই গতিতে ভাটা পড়ে। অন্যদিকে তিউনিশিয়া সমতা ধরে রাখতে রক্ষণাত্মক পন্থা অবলম্বন করে। তারা আক্রমণে যাওয়ার চেয়ে বল দখলে রাখার দিকে মনোযোগী হয় বেশি। এই পন্থা অবলম্বন করে তিউনিশিয়া অবশ্য ফলও পায়। ম্যাচের ৯০ মিনিট পর্যন্ত তারা সমতা ধরে রাখে। ৯০+১ মিনিটে কর্নার পায় ইংল্যান্ড। কিক নেন কিয়েরান ত্রিপিয়ের। উড়ে আসা বলে ফ্লিক করেন হ্যারি মাগুইর। তার ফ্লিকে বল চলে যায় পেনাল্টি বক্সের মধ্যে থাকা আনমার্ক কেইনের কাছে। কেন কায়দা করে হেড নেন। বল জালে জড়ায়। তিউনিশিয়ার গোলরক্ষক ফারুক বেন মোস্তফার চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।
ব্রাজিল, স্পেন, জার্মানি, আর্জেন্টিনার মতো দলগুলো যা পারেনি সেটাই করেছে ইংল্যান্ড। ফেভারিট তকমার মূল্যায়ন করেছে তারা। কিন্তু রাশিয়া বিশ্বকাপে ইংলিশরা বেরিয়ে এসেছে গতানুগতিক ধারা থেকে। নতুন কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের অধীনেই মূলত থ্রি লায়নদের বদলে যাওয়া। বহু বছরের পুরনো ৪-৪-২ ফরমেশনের বদলে সাউথগেট দলকে খেলাচ্ছেন ৩-৫-২ ছকে। এই রণ কৌশলেই বাজিমাত করেছেন বিশ্বের অনেক বাঘা বাঘা কোচরা। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজ দেশের খেলার ধরনেও পরিবর্তন এনেছেন সাউথগেট। মাঝ মাঠকে শক্তিশালী করার সুবাদে তার দল তিউনিশিয়ার বিপক্ষে পর্যাপ্ত সুযোগও তৈরি করেছে ইংল্যান্ড।
২৪ জুন সন্ধ্যায় গ্রুপের খর্বশক্তির দল পানামার বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেও একই কৌশল অবলম্বন করবেন বলে খবর ইংলিশ মিডিয়ার। তবে তিউনিশিয়া মাঠে নামছে তার আগের দিন। এদিনও অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে আফ্রিকার দলটিকে। পরের ম্যাচে তিউনিশিয়ার প্রতিপক্ষ ইউরোপের আরেক পরাশক্তি বেলজিয়াম।
"