ক্রীড়া ডেস্ক
‘এই মুহূর্তে আমরা পরিপূর্ণ’
বললেন ব্রাজিল কোচ
রাশিয়া বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে পরশু নিজেদের শেষবারের মতো ঝালিয়ে নিতে মাঠে নেমেছিল ব্রাজিল। প্রীতি ম্যাচটিতে হেক্সা জয়ের মিশনের প্রস্তুতিটাও ভালোভাবে সেরে নিয়েছে টিটের শিষ্যরা। ভিয়েনার আর্নেস্ট হাপেল স্টেডিয়ামে স্বাগতিকে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে সেলেকাওরা।
গত আসরের চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে হারানোর স্বাদ মুছে যাওয়ার আগে ব্রাজিলের বিপক্ষে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রিয়া। কিন্তু সুখস্মৃতিটার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারেনি আসন্ন বিশ্বকাপে দর্শক হয়ে থাকা দেশটি। উল্টো নাকানি-চুবানি খেতে হয়েছে ব্রাজিলের বিপক্ষে। এই জয়ে পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে রাশিয়া যাবে টিটের দল।
গত একমাস আগেও প্রায় অনিশ্চিত ছিল নেইমারের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। ফেব্রুয়ারিতে লিগ ওয়ান ম্যাচে মার্শেইয়ের বিপক্ষে চোটে পড়েছিলেন এই পিএসজি ফরওয়ার্ড। তারপর থেকে তিন মাস মাঠের বাইরে। অনেকে মনে করেছিলেন, নেইমারকে ছাড়া রাশিয়া যেতে হবে ব্রাজিলকে। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান সেনসেশন দমবার পাত্র নয়। রাজসিক প্রত্যাবর্তনের দ্বারা বুঝিয়ে দিলেন, ব্রাজিলকে ষষ্ঠ শিরোপা এনে দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তিনি। দলের প্রাণভোমরাকে ফিরে পেয়ে জ্বলে উঠল সতীর্থরাও।
রাশিয়া যাওয়ার আগে দুইটা প্রীতি ম্যাচ পেয়েছেন নেইমার। দুইটিতে দুই গোল করলেন ২৬ বছর বয়সী ফরওয়ার্ড। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোল পেয়েছিলেন দ্বিতীয়ার্ধে নেমে। পরশু অবশ্য শুরুর একাদশে ছিলেন তিনি। ৬৩ মিনিটে উইলিয়ানের পাস থেকে যেভাবে ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে গোল করলেন, তাতেই বুঝিয়ে দিলেন বিশ্বকাপের জন্য কতটুকু ফিট তিনি। কে বলবে নেইমার সদ্য চোট থেকে ফিরেছেন!
অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে গোল করে একটি মাইলফলকেও ভাগ বসিয়েছেন নেইমার। ছুঁয়ে ফেলেছেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোমারিওকে। জাতীয় দলের জার্সিতে দুইজনের গোলসংখ্যা এখন ৫৫। তবে এই গোল পেতে ১৫ ম্যাচ বেশি খেলতে হয়েছে নেইমারকে। ব্রাজিলিয়ান ফরওয়ার্ডের সামনে এখন দুই কিংবদন্তি রোনাল্ডো (৬২) ও পেলে (৭৭)। রোমারিওকে ছুঁয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বসিত ছিলেন নেইমার। গোলটি অবশ্য উৎসর্গ করেছেন ১৯৯৪ বিশ্বকাপজয়ী রোমারিওকেই। সংবাদ সম্মেলনে নেইমার বলেন, ‘আজকের (শনিবার) গোলটা আমি উৎসর্গ করছি আমার আদর্শ রোমারিওকে। শুধু আমার নয়, ব্রাজিলিয়ানদের আদর্শ তিনি। ব্রাজিল ইতিহাসের সেরা গোলদাতার সঙ্গে এক তালিকায় থাকতে পারাটা আমার জন্য গর্বের বিষয়।’
অস্ট্রিয়ানদের বিপক্ষে অন্য দুইটি গোল করেছেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও ফিলিপ্পে কুতিনহো। দলের প্রধান অস্ত্র নেইমারের প্রত্যাবর্তন এবং জয়ের ধারাবাহিকতা, সব মিলিয়ে টিটের বৃহস্পতি এখন তুঙ্গে। তবে রাশিয়া যাওয়ার আগে পা মাটিতেই রাখছেন সেলেকাও কোচ, ‘আমি জানি না, নেইমারের ক্ষমতার শেষ কোথায়। ওর কৌশিল ও সৃষ্টিশীল দক্ষতা অনবদ্য। মাঠের শেষ দিকে ওকে যখন আমরা ছেড়ে দিই তখন সে প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে। আমাদের দলটি একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছে এবং আমরা এই মুহূর্তে পরিপূর্ণ দল। এই অবস্থানে আসার জন্য আমরা প্রচুর খেটেছি।’
রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিল হেক্সা জয়ের মিশন শুরু করবে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭ জুন রোস্তভ অ্যারেনায়। ‘ই’ গ্রুপে টিটের দলের অন্য দুই প্রতিপক্ষ হচ্ছে কোস্টারিকা ও সার্বিয়া।
"