ক্রীড়া ডেস্ক

  ২৮ মে, ২০১৮

রিয়ালের অবিস্মরণীয় কীর্তি

ইউরোপের শ্রেষ্ঠ ক্লাবগুলোর স্বপ্ন থাকে একবারের জন্য হলেও উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরার। শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াইয়ে টানা তিনবার শিরোপা জেতা সহজ কথা নয়। এবার সেই অসাধ্য কাজটাই করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। চ্যাম্পিয়নস লিগের যুগে যা প্রথম। পরশু কিয়েভের এনএসসি অলিম্পিস্কি স্টেডিয়ামে গ্যারেথ বেলের জোড়া গোলে লিভারপুলকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা। এই জয়ে রেকর্ড টানা তৃতীয় ও সর্বোচ্চ ১৩তম চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফিটা ঘরে তুলেছে লস ব্লাঙ্কোসরা।

ইতোমধ্যে চ্যাম্পিয়নস লিগটাকে নিজেদের টুর্নামেন্ট বানিয়ে ফেলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। পরশুর ম্যাচের আগে ক্লাবটি দাঁড়িয়েছিল ইতিহাস গড়ার সামনে। চ্যাম্পিয়নস লিগ নামকরণের পর কোনো ইউরোপিয়ান ক্লাব টানা দুইবার শিরোপা জয় করতে পারেনি। গত দুই মৌসুমে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও জুভেন্টাসকে হারিয়ে টানা দুইবার শিরোপা জিতেছিল স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

এবার অলরেডদের হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়ে নিজেদের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেল জিনেদিন জিদানের দল। সেইসঙ্গে জিদান নিজেও একটা রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন। প্রথম কোচ হিসেবে এক ক্লাবের হয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতল এই ফরাসি ফুটবল কিংবদন্তি।

কিয়েভের ফাইনালে প্রথম মিনিট থেকেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছিল দুই দল। বল মাঠে গড়ানোর পর পরই রিয়ালকে চেপে ধরে লিভারপুল। ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা এই আক্রমণ ধরে রাখে ম্যাচের ২৫ মিনিট পর্যন্ত। মাঝখানে রিয়ালের কৃতিত্ব বললে ১৫ মিনিটে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর একটি শট। ২৬ মিনিটে ক্লপের মুখটা বিবর্ণ করে দেয় মোহাম্মদ সালাহর ইনজুরি। সার্জিও রামোসের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে কাঁধে আঘাত পান লিভারপুলের প্রাণভোমরা।

প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর পুনরায় মাঠে নামলেও ২ মিনিট পর মাঠে লুটিয়ে পড়েন মিসরীয় ফারাও। শেষ পর্যন্ত ৩০ মিনিটের সময় কান্নাভেজা চোখ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় সালাহকে। অলরেডরা নিজেদের প্রধান অস্ত্রকে হারিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণটাও তুলে দেয় রিয়ালের হাতে। এবার ৩৭ মিনিটে রিয়ালের জন্য দুঃসংবাদ হয়ে আসে ড্যানিয়েল কারভাহালের চোট। এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডারকেও মাঠ ছাড়তে হয়ে কান্নাভেজা চোখে।

দুই দল প্রথমার্ধটা শেষ করে গোলশূন্য থেকে। বিরতির পর বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ফিরে আসে নিজেদের খেলায়। প্রতিপক্ষের শিবিরে পুনঃপুন আক্রমণ করলেও লিভারপুলের দুর্দান্ত রক্ষণের কাছে বারবার হতাশ হতে হচ্ছিল তাদের। ৪৮ মিনিটে ইস্কোর শটটি গোলপোস্টে না লাগলে এগিয়ে যেতে পারত জিদানের দল।

পরশু লিভারপুলকে ডুবিয়েছে মূলত লরিস কারিয়ুস। এই জার্মান গোলরক্ষকের শিশুতোষ ভুলেই দুইটি গোল হজম করতে হয়েছে ক্লপের শিষ্যদের। ৫১ মিনিটে ডি-বক্স থেকে কারিয়ুস বল দিতে যাচ্ছিলেন দলের এক ডিফেন্ডারকে। কিন্তু বাড়ানো বলটি করিম বেনজেমার পায়ে লেগে ঢুকে যায় অলরেডদের গোলপোস্টে। ২০০২ সালের পর প্রথম ফরাসি হিসেবে চ্যাম্পিয়ন লিগের ফাইনালে গোল পেয়েছেন বেনজেমা। কিন্তু ব্যবধানটা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে দেয়নি লিভারপুল। ৫৫ মিনিটে ডেজান লভরেনের পাস থেকে অলরেডদের সমতায় ফেরায় সাদিও মানে।

সমতায় থাকা ম্যাচের মোড়টা মূলত ঘুরিয়ে দিয়েছেন বদলি হিসেবে নামা বেল। ৬৪ মিনিটে মার্সেলোর পাস থেকে বাইসাইকেল কিকে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের শ্রেষ্ঠ গোলটি করে ফেলেন এই ওয়েলস উইঙ্গার। এর আগে ফাইনালে শ্রেষ্ঠ গোলটি করেছিলেন জিদান। পরশু বেলের গোলটি দেখে নিজেও অবাক হয়ে হাত ঝেড়েছেন তিনি।

কারিয়ুস দ্বিতীয় ভুলটি করেন ৮৩ মিনিটে। বেলের দূরপাল্লার বুলেট গতির শটটি চাইলেই ফিরিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু পাঞ্চ করতে গিয়ে নিজেদের জালে বল জড়িয়ে দেন কারিয়ুস। ম্যাচের বাকি সময়টুকু লিভারপুলকে গোল শোধের কোনো সুযোগ দেয়নি জিদানের দল। রেফারির শেষ বাঁশি বাজার পর মাঠে লুটিয়ে পড়েন কারিয়ুস। পরে ভুলের জন্য সমর্থকদের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চান। কিন্তু তার আগেই ১৩তম শিরোপা জেতার আনন্দে বিজয়োল্লাসে মেতে ওঠেন জিদানের শিষ্যরা।

রিয়াল মাদ্রিদ ৩

লিভারপুল ১

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist