ক্রীড়া প্রতিবেদক
আরিফুলের থিতু হওয়ার স্বপ্ন
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আরিফুল হকের পদচারণা খুব বেশি দিনের নয়। মাত্র কয়েক মাসের। অভিজ্ঞতা বলতে দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। অভিষেক ম্যাচে সাত নাম্বারে ব্যাট করতে এসে অপরাজিত ছিলেন এক রানে। পরের ম্যাচে আরিফুল আউট হয়েছেন মাত্র দুই রানেই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওই সিরিজে দলে থাকলেও আর সুযোগ পাননি জাতীয় দলের নবাগত সদস্য।
ক্যারিয়ারের এমন শুরু নিঃসন্দেহে সবাই ভুলে যেতে চাইবে। এটা খুব করে চাইছেন আরিফুলও। এই দুঃস্মৃতি ভুলে তার চোখ আলোকবর্ষ দূরে। দেখছেন স্বপ্ন। ব্যাটিং এবং বোলিং দুই বিভাগেই পারফর্ম করার সুযোগ চান তিনি। অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে জাতীয় দলের একাদশে নিজেকে থিতু করাকেই লক্ষ্য হিসেবে স্থির করেছেন আরিফুল। আগামী মাস থেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যস্ততা শুরু হচ্ছে। ভারতের দেরাদুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর বাংলাদেশ যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। দুই সফরের জন্যই সম্প্রতি বিরাট বড় একটা প্রাথমিক দল দিয়েছেন বিসিবি নির্বাচকরা। সেই তালিকায় নাম আছে আরিফুলেরও।
অনেক দিন ধরেই জাতীয় দলে পেস অলরাউন্ডারের সংকট। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে সুযোগ দেওয়া হলেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এবার আরিফুলকে সুযোগ দেওয়ার পক্ষে নির্বাচকরা। ইনজুরিতে না পড়লে আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তার মাঠে নামা প্রায় নিশ্চিত। এই সুযোগটার অপেক্ষায় আছেন আরিফুল। কাল অনুশীলনের ফাঁকে প্রচারমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘আমার লক্ষ্য হলো জাতীয় দলে থিতু হওয়া। কারণ আমি এখনো থিতু না। আমার যেটা ভূমিকা, সেটা চেষ্টা করব পালনের। হয়তো পরিস্থিতি নির্ভর করবে কোথায় ব্যাট করব, কীভাবে ব্যাট করব। সব সামলেই আসলে আমাকে জাতীয় দলে অলরাউন্ডার হিসেবে পাকাপোক্ত হতে হবে।’
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শেষ আসরে বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন আরিফুল। আসন্ন সিরিজে সুযোগ পেলে বোলিংয়ের সেই অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগাতে চান তিনি, ‘ঘরোয়া ক্রিেেকট বোলিং করি, জাতীয় দলে সে সুযোগ এখনো হয়নি। বিপিএলেও ওইভাবে সুযোগ হয়নি। যদি সুযোগ পাই, আমার আগের সব অভিজ্ঞতা দিয়ে চেষ্টা করব।’
লোয়ার-অর্ডারে ঝড় তোলার মতো নির্ভরযোগ্য বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান বাংলাদেশ দলে নেই বললেই চলে। ২৫ বছর বয়সী আরিফুল সেই ঘাটতিটাই পূরণ করতে চান, ‘আমি যখন ব্যাট করতে নামি, শুরুতে চিন্তা করি এক-দুই নিয়ে খেলার। ভাবনা থাকে, বাজে বল পেলে মারব। ডট বলব করব না, স্ট্রাইক বদলাব নিয়মিত। বড় শট আমি চিন্তা করি শেষ দিকে খেলার। চেষ্টা করি শেষ পর্যন্ত টিকে থাকার। শেষের দিকে নিয়ে গেলে, আমি জানি যে দুই-তিন ওভার মেরে খেলতে পারব। চেষ্টা করি মানসিকতা এভাবে রাখার।’
ফরমেটের কারণেই আফগান সিরিজটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে ধরে নিয়েছে বাংলাদেশ দল। প্রতিপক্ষ দুই স্পিনার রশিদ খান এবং মুজিবুর রেহমানকে নিয়েই যত ভয় বাংলাদেশের। আইপিএলে তাদের বোলিং থেকে ব্যাটিংয়ে নিজের কৌশল নির্ধারণের চেষ্টা করছেন আরিফুল। বলেছেন, ‘আমাদের বিপক্ষে যারা যারা বোলিং করবে, আইপিএলে তাদের খেলা দেখছি। আফগানিস্তানের মুজিব আছে, ওকে আমরা ওইভাবে দেখিনি। রশিদ খানকে বিপিএলে দেখেছি। সব মিলিয়ে ওদের কীভাবে খেলা যায়, তা নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
"