ক্রীড়া প্রতিবেদক
তুষারের আরেকটি কীর্তি
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের রেকর্ডের বরপুত্র বলা হয়ে থাকে তুষার ইমরানকে। ব্যাট হাতে গড়ে চলেছেন একের পর এক রেকর্ড। কাল আরো একটি রেকর্ড গড়লেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। প্রথমবারের মতো এক ম্যাচে করলেন ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি। বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে তবু জিততে পারেনি তুষারের দল দক্ষিণাঞ্চল। লিটন দাস ও আফিফ হোসেনের শতকের ওপর দাঁড়িয়ে চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে দারুণ এক ড্র তুলে নেয় পূর্বাঞ্চল। শেষ দিনে পূর্বাঞ্চলের সামনে ৪১৫ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল দক্ষিণাঞ্চল। লিটন ও আফিফের অজেয় শতকের পর পূর্বাঞ্চল ১ উইকেটে ২২৪ রান যোগ করলে ম্যাচটা অমীমাংসিত থেকে যায়।
জয়-পরাজয় নির্ধারণ হয়নি এই রাউন্ডের অন্য ম্যাচেও। কাল বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে ড্র হয়েছে মধ্যাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের ম্যাচটি। মিজানুর রহমান ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে সেই চ্যালেঞ্জ জিতে মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে ম্যাচ বাঁচিয়েছে উত্তরাঞ্চল। তবে মিজানুর সেঞ্চুরি করলেও অল্পের জন্য পারেননি শান্ত। প্রথম ইনিংসে ২২৯ রানে পিছিয়ে থাকা উত্তরাঞ্চল শেষ দিনে ফলোঅনের পর দ্বিতীয় ইনিংসে করে ২ উইকেটে ২১৩ রান।
প্রথম ইনিংসে প্রায় দুই দিন ব্যাট করে ৫২৯ রান তুলেছিল মধ্যাঞ্চল। উত্তরাঞ্চল শেষ দিন শুরু করেছিল প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেটে ২৮৬ রান নিয়ে। শেষ দিনে আর ১৪ রান যোগ করেই শেষ হয় তাদের ইনিংস। ১০০ রানে অপরাজিত মুশফিক এদিন আউট হয়ে যান ১১১ রানে। ৮৪ রানের অষ্টম উইকেট জুটিতে তার সঙ্গী তাইজুল ফেরেন ২৫ রানে।
সিলেটে দক্ষিণাঞ্চল দিন শুরু করেছিল দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ১৪২ রান নিয়ে। ২৯ রানে শুরু করা সৌম্য ফিরে যান আর ৬ রান যোগ করে। কিন্তু ৪৬ রানে শুরু করা তুষার এগিয়ে যান দৃঢ় পায়ে। লাঞ্চের আগেই সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ১৪৪ বলে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০ হাজার রান করা বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান নিজের সেঞ্চুরির রেকর্ডকে নিয়ে গেলেন আটাশে। ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের দ্বাদশ ব্যাটসম্যান তিনি।
সেঞ্চুরির পরপরই অবশ্য অবসর নেন তুষার। জ্বলে ওঠেন প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ মোহাম্মদ মিঠুন। ৫ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৬৬ রান। শেষ দিকে ৫ বলে ৩ ছক্কায় ১৯ করেন অধিনায়ক রাজ্জাক। লাঞ্চের দুই ওভার পর ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণাঞ্চল। পূর্বাঞ্চলের চ্যালেঞ্জ তখন দুই সেশন টিকে থাকা। তৃতীয় ওভারে ইমতিয়াজ হোসেনকে হারিয়ে কাজটা কঠিন হয়ে ওঠে আরো। কিন্তু এরপরই লিটন ও আফিফের পাল্টা আক্রমণ। যেন টিকে থাকা নয়, রান তাড়াতেই নেমেছিলেন তারা!
ওভারপ্রতি প্রায় ৫ রান করে তুলে দুজনে গড়েন ২০৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। ১১ চার ও ৪ ছক্কায় ১২৯ বলে ১১৩ রান করেন লিটন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার দশম সেঞ্চুরি। ১০ চার ও ৩ ছক্কায় বাঁ-হাতি আফিফ সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ১৩১ বলে। পঞ্চম প্রথম শ্রেণির ম্যাচে প্রতিভাবান এই ব্যাটসম্যানের এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। আফিফের সেঞ্চুরির পরই বেলা সাড়ে ৩ টায় ড্র মেনে নেয় দুই দল।
এই ড্রয়ে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে পূর্বাঞ্চল। এক পয়েন্ট কম নিয়ে তিনে দক্ষিণাঞ্চল। ৪১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উত্তরাঞ্চল।
"