ক্রীড়া ডেস্ক
দাবি তুলছে আশরাফুলের ব্যাট
লিগে তৃতীয় শতক
মোহাম্মদ আশরাফুল। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে নিষিদ্ধ হওয়ার আগে যার ব্যাটের দিকে তাকিয়ে থাকত বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকরা। মাঠে নেমে কখনো ফিরতেন দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়ে। আবার কখনো সমর্থকদের ডুবিয়ে দিতেন একরাশ হতাশায়।
নিজের দিনে প্রতিপক্ষ বোলারদের তুলোধুনো করতে ছিলেন পারদর্শী। আবার খুব বাজে বলে শট খেলতে গিয়ে ফিরতেন সাজঘরে। তার ব্যাটিং স্টাইল দেখে প্রশংসা করেছিলেন ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার।
আশরাফুল ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের সহজাত প্রতিভা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নেমে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে বিশ^মঞ্চকে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন। তবে নিজের নামের প্রতি কখনো সুবিচার করা হয়নি তার। ক্যারিয়ারের গ্রাফ একবার ওপরে উঠেছে তো আরেকবার একেবারে নিচে।
ক্যারিয়ারের বন্ধুর সময়ে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের দায়ে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সব ধরনের ক্রিকেট থেকে। ২০১৩ সালে বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে ম্যাচ পাতানোর দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার পর আট বছরের নিষেধাজ্ঞার খড়্গ উঠে তার মাথায়।
তবে আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে তিন বছর কমে শাস্তি হয় পাঁচ বছরের। এর মধ্যে দুই বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা হওয়ায় ঘরোয়া লিগে নিষেধাজ্ঞা থাকে তিন বছর। আশার কথা, ২০১৮ সালের ১৩ আগস্টের পর সব ধরনের ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন আশরাফুল।
নভেম্বরে শুরু হওয়া বিপিএলের ষষ্ঠ আসরেও ব্যাট হাতে দেখা যেতে পারে ক্রিকেটের এই মারকুটে ব্যাটসম্যানকে। এমনকি বাংলাদেশের আগামী ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের কথাও মাথায় রাখছেন তিনি। চাইলেই তো আর সম্ভব না। ঘরোয়া লিগে রান করে নির্বাচকদের দৃষ্টিতে আসতে হবে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কলাবাগান ক্রীড় চক্রের হয়ে পেয়েছেন তিন সেঞ্চুরি ও একটি হাফ সেঞ্চুরি। কাল তিন নম্বর সেঞ্চুরিটি তিনি পেয়েছেন মোহামেডানের বিপক্ষে। কিন্তু বিফলে গেছে তার ১২৪ বলে ১২৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটা।
মোহামেডানের স্পিনার তাইজুল ইসলামের বলে আউট হওয়ার আগে তার ব্যাটে ছিল ১৩টি চার ও ৩টি ছক্কার পসরা। তার সেঞ্চুরির ওপর ভর করে ৫০ ওভারে ২৬০ রানের টার্গেট দেয় কলাবাগান। জবাবে ৪ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের জয় তুলে নেয় মোহামেডান।
১২৭ রানের ইনিংসটি আবার তার ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটের সর্বোচ্চ ইনিংসও। এর আগে অ্যাশের সর্বোচ্চ রান ছিল অপরাজিত ১১৮। এবারের প্রিমিয়ার লিগে আশরাফুল এর আগে সেঞ্চুরি করেছেন দুটি। অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে করেছিলেন ১২০ রান ও প্রাইম দোলেশ^রের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১০৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস।
ফিফটি পেয়েছিলেন রূপগঞ্জের বিপক্ষে। অথচ প্রথম সেঞ্চুরির পরে নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন তিনি। যেন চিরাচরিত সেই পুরনো আশরাফুল। দল থেকে বাদও পড়েছিলেন। এরপর কোচকে অনুরোধ করে খেলতে নেমেই প্রাইম দোলেশ^রের বিপক্ষে পেয়েছিলেন লিগের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। লিগে রান পেয়েছেন। নিষেধাজ্ঞাও শেষের দিকে। বাংলাদেশের জার্সিটা আবার চড়ানোর স্বপ্ন দেখতেই পারেন আশরাফুল। তার ব্যাট যে জাতীয় দলে ফেরার দাবিটা ক্রমেই জোরালো করে তুলেছে।
"