ক্রীড়া ডেস্ক
বিনয়ের অবতার মুশি
বাংলাদেশ কখনো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দুশ রান করতে পারেনি। গত মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বোচ্চ ১৯৩ রান পর্যন্ত স্কোর বোর্ডে জমা করেছিল টাইগাররা। ঠিক সেই দলটাই দুদিন আগে কলম্বোতে টপকে গেল লঙ্কানদের ২১৪ রানের পাহাড়। লাল-সবুজ জার্সিধারীরা পেয়েছে ৫ উইকেটের ঐতিহাসিক এক জয়।
বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় এই জয়ের পার্শ্ব নায়ক আছেন অনেকেই। কিন্তু জয়ের আসল কারিগর মুশফিক। টপ অর্ডারের প্রায় সব ব্যাটসম্যান যখন সাজঘরে ফিরে এসেছেন, তখন ত্রাণকর্তা হয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। ৩৫ বলে ৭২ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে দলকে উপহার দিয়েছেন রেকর্ড জয়। এমন কালজয়ী একটা ইনিংস খেলার পরও মুশফিকের পা মাটিতেই, ঠিক যেন বিনয়ের অবতার। কাল অনুশীলনের ফাঁকে গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘নিজের ওপর বিশ্বাস থাকতে হয়। নিজের ওপর বিশ্বাসটা না থাকলে কেউ ভালো করতে পারবে না। উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য খুব ভালো ছিল। যেকোনো ব্যাটসম্যান এ রকম একটা ইনিংস খেলবে, এটাই স্বাভাবিক। সেটা আমি পেরেছি বলে খুশি।’ ত্রিদেশীয় সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচে ঐতিহাসিক জয়ের পর পরদিন সকালে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন, ‘তামিম-সৌম্য যে মারতে পারে, এটা আমাদের জানা ছিল। লিটন যে মারতে পারে, জানা ছিল না। মুশফিক তো না-ই।’ সত্যি বলতে, মুশফিককে সবার সামনে কালকেও বলেছি, ‘তুমি যে এ রকম মারতে পার, আমি জানিই না! গত এক-দেড়-দ্ইু বছর যদি দেখেন, মুশফিক ছয় মারতে গেলে বাউন্ডারিতে আউট হয়। আমি সব সময় বলি যে ও ছয় মারার খেলোয়াড় না।’
কাল বিসিবি সভাপতির মন্তব্যের প্রসঙ্গ উঠতেই হাসলেন মুশফিক। তার এই হাসির অর্থ অনেক কিছুই হতে পারে। মুখে হাসিটা রেখেই মুশি বললেন, এবার হয়তোবা বিসিবি প্রধানের ভাবনা বদলাবে! অথচ বাংলাদেশের হয়ে নিয়মিত বড় শট খেলতে পারেন হাতে গোনা যে কজন, মুশফিক তাদের অন্যতম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মেরেছেন ১১৭ ছক্কা, বাংলাদেশের হয়ে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বোর্ড সভাপতির মন্তব্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে তুমুল। সোমবার কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বাংলাদেশের অনুশীলনের আগে মুশফিকের কাছে জানতে চাওয়া হলো বোর্ড প্রধানের মন্তব্য নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া। মুশফিকের হাসিতে ফুটে উঠল অনেক কথা। মুশফিক বলেছেন, ‘এই ইনিংসের পর হয়তো উনি ভাববেন যে আমি পারি, আলহামদুলিল্লাহ। হয়তো উনি অন্যরকমভাবে আমার খেলা দেখেছেন। গত ২-৩ মাস আমরা যতটা কঠোর পরিশ্রম করেছি, সেটার ফল মিললে একটা ভালো লাগা থাকেই। হয়তো অনুশীলন উনি দেখেননি। ম্যাচে সেটা কাজে লেগেছে।’
"