ক্রীড়া প্রতিবেদক
ফতুল্লায় নাটকীয় ড্র
বৃথা গেল মাশরাফি-নৈপুণ্য
চাপের মুখে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ছেড়েছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। কথাটা যেমন সত্য, তেমনি তাকে ফেরাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট যে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছে সেটাও স্পষ্ট। কিন্তু ‘নড়াইল এক্সপ্রেসে’র মন গলাতে পারেনি বিসিবি। ক্ষুদ্রাকৃতির ক্রিকেটে না ফেরার সিদ্ধান্ত অনঢ় থাকলেন বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক।
কিন্তু সীমিত ওভারের দুই ফরমেটে এখনো জাতীয় দলকে অনেক কিছু দেওয়ার বাকি আছে তার। সেটা এবারের প্রিমিয়ার ডিভিশন ঢাকা ক্রিকেট লিগে ধারাবাহিকভাবে প্রমাণ দিয়ে চলেছেন। পুণরায় কুড়ি ওভারের ফরমেটে ফিরলে মাশরাফি যে আরো ক্ষুরধার হয়ে উঠতেন সেটা বলাই যায়। ঢাকা লিগে তার আগুনঝরা পারফরম্যান্স যেন ভক্তক‚লের আক্ষেপ বাড়িয়েই চলছে।
ব্যাট হাতে ধরার সুযোগ খুব একটা পাচ্ছেন না। তবে সুযোগ পেলেই ঝড় তুলেছেন বাইশ গজে। তবে এবার বোলার মাশরাফিকেই চিনেছে ঢাকা লিগ। এবারের আসরে উইকেট শিকারের তালিকায় মাশরাফির নাম সবার ওপরে। ৭ ম্যাচে কাল পর্যন্ত ১৯টি উইকেট শিকার করেছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক। শুধু উইকেটের হিসেবেই নয়, মৃতব্যয়ী বোলার হিসেবেও শীর্ষে আছেন তিনি। কালও ৪১ রানে ৪ উইকেট শিকার করেছেন মাশরাফি। কিন্তু এদিন বৃথা গেছে তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। প্রাইম ব্যাংকের কাছে হেরে গেছে উড়তে থাকা ঢাকা আবাহনী লিমিটেড।
মূলত মাশরাফির তোপেই আড়াই শ রানের নিচে (২৪৬) গুটিয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক। দুই ওপেনার মেহেদী মারুফ ও মেহরাব হোসেন জুনিয়রকে তুলে নেওয়ার পর শেষ দিকে সাজ্জাদুল ইসলাম ও শরিফুল আলমকেও ফেরান আবাহনীর এ পেসার। এ নিয়ে সর্বশেষ তিন ম্যাচে তার শিকার ১২ উইকেট! মোহামেডানের বিপক্ষে ৩ উইকেট নেওয়ার আগে শেখ জামালের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন মাশরাফি। অবশ্য আজ মাশরাফির দল জিততে পারেনি। ৯ উইকেটে ২৩৭ রানেই থেমে গেছে আবাহনীর ইনিংস। ৯ রানের জয় পেয়েছে প্রাইম ব্যাংক।
দিনের অন্য খেলায় গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্সকে ৯৫ রানে হারিয়েছে শেখ জামাল। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ২৬৫ রান তুলেছিল শেখ জামাল। জবাবে ১৭০ রানেই গুটিয়ে যায় গাজী। অপর ম্যাচটি টাই হয়েছে! মোহামেডান স্পোটিংয়ের ২৮৬ রান তাড়া করতে নেমে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৬ রান দরকার ছিল প্রাইম দোলেশ্বরের। প্রথম দুই বলে দুই উইকেট হারালেও শেষ চার বলে ৫ রান নিয়ে ম্যাচ টাই করে দোলেশ্বর।
প্রিমিয়ার লিগে এ নিয়ে ৭ ম্যাচ খেললেন মাশরাফি। এর মধ্যে শুধু রূপগঞ্জ ও ব্রাদার্স তাকে খালি হাতে ফেরাতে পেরেছে। মানে, এ দুটি দলের বিপক্ষে ম্যাচে উইকেটশূন্য ছিলেন মাশরাফি। সব মিলিয়ে ম্যাচপ্রতি তার শিকার গড়ে ২.৭১ উইকেট। প্রথম ম্যাচে খেলাঘরের বিপক্ষে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। কলাবাগানের বিপক্ষে পরের ম্যাচে ৪ উইকেট, এরপর দুই ম্যাচ খালি হাতে ফেরার জ্বালাটা মিটিয়েছেন শেখ জামালের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে।
ফতুল্লার ম্যাচে লক্ষ্য ছিল বেশ কঠিন। লিটন কুমার দাসের অসাধারণ সেঞ্চুরিতে সেই লক্ষ্য চলে এসেছিল একদমই নাগালে। কিন্তু প্রাইম দোলেশ্বরের মুঠো থেকে সেই ম্যাচ বের করে আনলেন মোহাম্মদ আজিম। শেষ পর্যন্ত যদিও জিততে পারেনি মোহামেডানও। শেষের নাটকীয়তায় শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটি হয়েছে টাই। শেষ ওভারে অলআউট হওয়া মোহামেডান করেছিল ২৮৬ রান। ১টি উইকেট হাতে থাকলেও দোলেশ্বর করতে পেরেছে ২৮৬ রানই। এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এটাই প্রথম অমীমাংসিত ম্যাচ।
"