ক্রীড়া ডেস্ক
অতিমানব ডি গিয়া
হঠাৎ করেই খেলার ধরন পাল্টে ফেলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। হয়ে উঠে অতিমাত্রায় রক্ষণাত্মক। পরশু উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের নক আউট পর্বের প্রথম লেগেও একই কৌশলে খেলল রেড ডেভিলসরা। হোসে মরিনহোর বাজিটা কাজে লেগেছে। পুরো ম্যাচে একটাও গোল হজম করেনি রেড ডেভিলসরা। গোলের দেখা পায়নি তারাও। সেভিয়ার মাঠে গোলশূন্য ড্র নিয়েই তাই ফিরতে হয়েছে ইংলিশ ক্লাবটিকে। ১৩ মার্চ ওল্ড ট্রাফোর্ডে ফিরতি লেগের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
মরিনহোর দলের অতিমাত্রায় রক্ষণাত্মক হয়ে খেলার কৌশলটা আরেকটু হলেই বুমেড়াং হয়ে যেতো। ইউনাইডেটকে যে এদিন বড্ড বাঁচা বাঁচিয়ে দিয়েছেন গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়া। পরশু অ্যাওয়ে ম্যাচটাতে যে অতিমানব হয়ে উঠেছিলেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক। গোলমুখের সামনে দুর্দান্ত ডি গিয়া এদিন গোল বাঁচিয়েছেন একটি নয়, দুটো নয়, আট আটটি! অবিশ্বাস্য বটে।
ডি গিয়া সেভিয়ার সামনে চীনের প্রাচীর হয়ে না দাঁড়লে ইউনাইটেড এদিন তিন-চার গোলে হারলেও সেটা অবাক হওয়ার মতোই কিছুই ছিল না। কিন্তু ডি গিয়ার বিশ্বস্ত দুই হাতের কল্যাণে ইউনাইটেড ম্যাচটা হারেনি। গোলশূন্য ড্রয়ে মান বাঁচিয়েছে। ডি গিয়ার এই আটটি ‘সেভ’-এর কল্যাণেই তো ইউনাইটেডের রক্ষণভাগে ২৫ বার আক্রমণ করেও গোল পায়নি সেভিয়া। এর জবাবে মরিনহোর আক্রমণ ভাগ নিয়ে কথা না বলাই ভালো। সেভিয়ার গোলপোস্টে লুকাকু-সানচেজরা মিলে রাখতে পেরেছেন মাত্র একটি শট!
আক্রমণ, গোলপোস্টে, শট এমনকি বল দখলে রাখার হারেও (৫৭%) ইউনাইটেডের চেয়ে এগিয়ে ছিল সেভিয়া। ভিনসেজ্জে মনতেল্লার দল শুধু জয়টাই পায়নি, সেটাও ডি গিয়ার কারণে। প্রথমার্ধেই দুর্দান্ত কিছু ‘সেভ’ করেছেন ২৭ বছর বয়সী এ গোলরক্ষক। এর মধ্যে প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে করা ‘সেভ’টি সম্ভবত তার ক্যারিয়ার সেরা। ইউনাইটেডের বক্সে ভিক্টর লিন্ডহফ ও ক্রিস স্মলিংকে ফাঁকি দিয়ে কিছুটা জায়গা বের করেছিলেন সেভিয়া ফরোয়ার্ড লুইস ম্যুরিয়েল। ‘পয়েন্ট বøাঙ্ক রেঞ্জ’ তার জোরালো হেড ডি গিয়া স্প্রিংয়ের মতো শূন্যে লাফিয়ে এক হাতে কীভাবে ঠেকালেন, তা সত্যিই গবেষণার বিষয়।
বিরতির পরও ইউনাইটেডের ত্রাতা হয়ে ছিলেন ডি গিয়া। এ ম্যাচে তার আট ‘সেভ’ মনে করিয়ে দিয়েছে ইউনাইটেডের ‘আইস র?্যাবিট’ ফন ডার সারকে। চ্যাম্পিয়নস লিগে ডি গিয়ার আগে সর্বশেষ ইউনাইটেডের গোলরক্ষক হিসেবে কোনো ম্যাচে আটটি ‘সেভ’ করেছিলেন ফন ডার সার। সেটা ২০১১ সালে বার্সেলোনার বিপক্ষে।
ডি গিয়ার রাতে আড়ালে পড়েছে গেছে পরশু রাতের অন্য ম্যাচটা। ম্যাচের ৭০ মিনিট পর্যন্ত এএস রোমার সঙ্গে ১-১ গোলে সমতায় ছিল শাখতার দানেৎস্ক। পরের মিনিটে ফ্রি কিক পায় শাখতার। ফ্রেডের বাঁকা শট রোমার ‘মানবদেয়াল’-এর ওপর দিয়ে আশ্রয় নেয় জালে। চ্যাম্পিয়নস লিগে ফ্রেডের প্রথম এ গোলেই রোমাকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে শাখতার। অথচ ৪১ মিনিটে তুরস্কের উইঙ্গার চেনজিগ আন্ডারের গোলে রোমাই এগিয়ে ছিল ম্যাচে।
"