ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

এনামুলের মঞ্চে মাশরাফি শো

পুরো ক্যারিয়ারে জাতীয় দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন এনামুল হক বিজয়। তবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে থিতু হতে না পারলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়াচ্ছেন তিনি। কার প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের চলমান আসরে তুলে নিয়েছেন নিজের প্রথম শতক। তার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর বল হাতে ম্যাজিক দেখিয়েছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ব্যাট-বলে এ যুগলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে ঢাকা লিগে টানা পঞ্চম জয় তুলে নিয়েছে আবাহনী লিমিটেড। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও পেয়েছেন দুজন যৌথভাবে। আবাহনীর এবারের জয়টি এসেছে প্রতিবেশি ক্লাব শেখ জামালের বিপক্ষে ৪৭ রানে। আবাহনীর ২৭০ রানের জবাব দিতে নেমে ২২৩ রানে গুটিয়ে যায় শেখ জামাল। লিগে এটি তাদের দ্বিতীয় পরাজয়।

বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে বৃহস্পতিবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি আবাহনীর। এনামুল এক প্রান্তে অবিচল ছিলেন তবে অন্য প্রান্তে টিকতে পারছিলেন না কেউ। ২০তম ওভারে ৭৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দলটি।

সেখান থেকে ১২১ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন এনামুল ও মোসাদ্দেক হোসেন। তার ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় আবাহনী। ১২২ বলে চারটি ছক্কা ও ছয়টি চারে ১১৬ রান করা এনামুলকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন রবিউল হক। পরের ওভারে এই তরুণ ডানহাতি পেসার ফেরান দুটি চারে ৪৯ রান করা মোসাদ্দেককে।

ব্যাট হাতে তেমন কিছু করতে পারেননি মাশরাফি। ফিরেন ৬ রান করে। শেষের দিকে অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেটে ৫.২ ওভারে সানজামুল ইসলামের সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজের ৫৮ রানের জুটিতে লড়াইয়ের পুঁজি পায় আবাহনী। ১৮ বলে দুটি করে ছক্কা-চারে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন মিরাজ। সানজামুল ১৫ বলে করেন ২৪ রান।

আগে ব্যাটিংয়ে নেমে এনামুলের সেঞ্চুরি এবং শেষ দিকে মোসাদ্দেক হোসেনের (৪৯) ব্যাটে ৭ উইকেটে ২৭০ রান তুলেছিল আবাহনী। জবাবে ৪৫.৩ ওভারে ২২৩ রানেই গুটিয়ে যায় শেখ জামাল। অধিনায়ক নুরুল হাসানের ব্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ৮৩ রান। আবাহনীর ৪৭ রানের এ জয়ে এনামুলের ব্যাটিং যদি ‘নিউক্লিয়াস’ হয় মাশরাফি বিন মুর্তজা তাহলে বোলিংয়ের ‘নায়ক’। একাই ৫ উইকেট নিয়ে শেখ জামালের ইনিংস ধসিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। ২ উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজের।

এনামুলের সেঞ্চুরি আবাহনীকে জেতালেও ব্রাদার্স ইউনিয়নকে জেতাতে পারেনি দেবব্রত দাসের সেঞ্চুরি। বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে আগে ব্যাটিংয়ে নামা ব্রাদার্সের হয়ে ১১২ রানের ইনিংস খেলেন ভারতের এ ক্রিকেটার। তাঁর সেঞ্চুরি এবং ইয়াসির আলীর ফিফটিতে (৫৪) ৫ উইকেটে ২৭৩ রানের স্কোর দাঁড় করায় ব্রাদার্স। জবাবে ম্যাচটা শেষ ওভার পর্যন্ত টেনে নিয়ে জিতেছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। ফিফটি তুলে নেন গাজীর দুই জাতীয় দলের খেলোয়াড় ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হক। তবে ভারতীয় রিক্রুট গুরক্রিত সিংয়ের ৮৮ বলে অপরাজিত ৭১ রানের ইনিংসে ৫ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের জয় পেয়েছে গাজী।

শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রাইম দোলেশ্বরকে ৫৫ রানে হারিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। নাঈম ইসলাম, মুশফিকুর রহিম ও আবদুল মাজিদের ফিফটিতে ৭ উইকেটে ২৭২ রান তুলেছিল রূপগঞ্জ। জবাবে ৪৭.৫ ওভারেই ২১৭ রানে গুটিয়ে যায় দোলেশ্বর। মোশাররফ হোসেন (৪/৪০) ও আসিফ হোসেনের (৩/৪৬) বোলিংয়ে দোলেশ্বরের কোনো ব্যাটসম্যান ফিফটি পর্যন্ত পাননি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ-প্রাইম দোলেশ্বর

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ : ৫০ ওভার, ২৭২/৭ (মজিদ ৫৯, নাইম ২৭, নাঈম ৭৮, মুশফিক ৬৫, নাজমুল ২১, রসুল ৮*, শহীদ ০*; মানিক ০/৪৯, রেজা ২/৭৫, সানি ৩/৪০, আরাফাত ১/১৮, জোহাইব ০/৫৫)

প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব: ৪৭.৫ ওভার, ২১৭ (ইমতিয়াজ ৩৫, লিটন ২, মাহমুদ ২০, মার্শাল ৬, ফরহাদ ১৭, রেজা ২৫, জোহাইব ২৪, শরিফউল্লাহ ৪১, আরাফাত ১৬, সানি ২৮*, মানিক ০; শরীফ ১/৪৯, শহীদ ১/২৮, রসুল ০/৩৮, মোশাররফ ৪/৪০)

ফল : লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৫৫ রানে জয়ী ম্যাচ সেরা : নাঈম ইসলাম

আবাহনী লিমিটেড-শেখ জামাল

আবাহনী : ৫০ ওভার, ২৭০/৭ (এনামুল ১১৬, নাসির ১১, মিঠুন ১৪, মোসাদ্দেক ৪৯, মাশরাফি ৬, মিরাজ ৩৪*, সানজামুল ২৪*; জায়েদ ১/৬৪, নাজমুল ০/৪৭, সোহাগ ১/১০, সানি ১/৪৭, রবিউল ৩/৪৭, সাক্সেনা ১/৪০)

শেষ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব: ৪৫.৩ ওভার, ২২৩ (সৈকত ৩১, সাক্সেনা ৪৩, সানি ১৬, নুরুল ৮৩, ইমরান ২৪, নাজমুল ৩, রবিউল ৪*; মাশরাফি ৫/২৯, সানজামুল ১/৪৩, মিরাজ ২/৪৪, নাসির ০/৫, সাকলাইন ১/৩৫)

ফল : আবাহনী ৪৭ রানে জয়ী ম্যাচ সেরা : মাশরাফি বিন মর্তুজা ও এনামুল হক

ব্রাদার্স ইউনিয়ন-গাজী গ্রুপ

ব্রাদার্স ইউনিয়ন : ৫০ ওভার, ২৭৩/৫ (মিজানুর ১, জুনায়েদ ৪৩, মাইশুকুর ৮, দেবব্রত ১১২*, কাপালী ৪১, ইয়াসির ৫৪, শুভ ৭*; রুহেল ২/৫৬, মেহেদি ০/৫৭, হায়দার ১/৬৪, নাঈম ২/২৯, গুরকীরাত ০/১৭, রাজিবুল ০/৪৯)

গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্স: ৪৯.১ ওভার, ২৭৬/৮ (মেহেদি ১০, ইমরুল ৬৫, মমিনুল ৫৭, নুরুজ্জামান ৮, গুরকীরাত ৭১*, জাকের ১৫, নাদিফ ১৫, রাজিবুল ১, হায়দার ০, নাঈম ১১*; খালেদ ২/৫৭, ইফতেখার ১/৪৯, রানা ২/৪৯, কাপালী ১/৪১, শুভ ০/৩৪, নিহাদ ২/৪৩) ফল : গাজী গ্রæপ ২ উইকেটে জয়ী ম্যাচ সেরা : গুরকীরাত সিং

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist