ক্রীড়া ডেস্ক
রক্ত দিয়ে জয় উপহার
মাকড়সার জালের মতো সমালোচনা ঘিরে ধরেছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে। পাঁচ ব্যালন ডি অরের মালিকের নামের পাশে লা লিগার চলতি মৌসুমে মাত্র চার গোল! স্বাভাবিকভাবেই তাই নিন্দুকদের ছোঁড়া তীরে বিদ্ধ হচ্ছিলেন রোনালদো। রিয়ালের ঘোর সমর্থকরাও নাকি তাকে আর বার্নাব্যুতে দেখতে চাইছে না, ক’দিন আগেই স্প্যানিশ মিডিয়ায় এমন খবর রটেছিল।
তবে রোববার রুদ্ররূপেই হাজির হলেন রিয়াল মাদ্রিদ প্রাণভোমরা। তার দুুর্ধর্ষ-দুর্দমনীয় পারফরমেন্সে রিয়ালের কাছে ৭-১ গোলে চূর্ণ হয় দেপোর্তিভো লা করুনা। তবে এতে যে সিআরসেভেনের সমালোচনা কমেছে তা নয়। কিন্তু রিয়ালের প্রতি তার দায়বদ্ধতা-ন্যায়পরায়ণতা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছিল, সেটা নিশ্চিতভাবেই হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে।
দলের প্রতি দায়িত্ববোধ আর ভালোবাসা না থাকলে কেউ তো আর এমনি এমনি রক্ত ঝরান না! ম্যাচের তখন ৮৪ মিনিট। ডান প্রান্ত থেকে লুকাস ভাসকেজের ক্রসে ডাইভিং হেডে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন রোনালদো। এর সঙ্গে দলীয় হাফ ডজনও পূরণ হয়। কিন্তু লক্ষ্যভেদ করার মুহূর্তে দুর্ঘটনার শিকার হন লস ব্ল্যাঙ্কোসদের এই অপরিহার্য সদস্য। বল বিপদমুক্ত করতে পা বাড়িয়েছিলেন দেপোর্তিভোর সেন্টার ব্যাক ফাবিয়ান সার। তার বুটের আঘাতে কপাল থেকে ফিনকির মতো রক্ত পড়তে থাকে রোনালদোর। সঙ্গে সঙ্গে মাঠ থেকে বের হয়ে যান তিনি। তবে খানিকক্ষণ শুশ্রƒষা নিয়ে আবারও মাঠে নামেন ফিফার বর্ষসেরা তারকা। খেলা চালিয়ে যান বাকিটা সময়। এর আগে নিজের প্রথম গোলটি করেছিলেন ৭৮ মিনিটে। গ্যারেথ কাসেমিরোর ক্রসে পা ছুঁয়ে গোলের হাপিত্যেশ কাটান রোনালদো।
পরশু স্বস্তির জয় নিয়ে দলের সবাই যখন হাসিমুখে মাঠ ছাড়ছিলেন, পর্তুগিজ উইঙ্গারের মুখটা তখনো গোমাড়াই ছিল। রিয়ালের জন্য রক্ত ঝরিয়েও সমালোচকদের মুখে কুলুপ আঁটতে পারবেন কি না, হয়তো সে কথাই ভাবছিলেন। ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মুখ থেকে বেরিয়ে এলো রিয়ালের প্রতি শ্রদ্ধা, ‘এই জার্সিটা সাদা বলেই হয়তো ভিন্ন কোনো রং এর ওপর খুব সহজেই ফুটে ওঠে। এটা গায়েই আমি দিনের পর দিন ঘাম ঝরাই, কাদা মাখিয়ে নোংরা করি। আজ (পরশু) তো রক্তাক্ত করে ফেললাম। তবে এটার জন্য আমি লজ্জিত নই বরং সম্মানিত।’
"