ক্রীড়া ডেস্ক
অ্যাশেজের বদলা ওয়ানডে সিরিজে
অ্যাশেজ সিরিজে বাঘের হুংকারে ইংল্যান্ডকে কাঁপিয়ে দেওয়া অস্ট্রেলিয়া ওয়ানডে সিরিজে এসেই যেন বিড়াল হয়ে পড়েছে। বিপরীতে সাদা পোশাকে বিবর্ণ ইংল্যান্ড দারুণ উজ্জ্বল রঙিন পোশাকে। জিলেট ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে অনায়াস জয় তুলে নিয়ে চিরশত্রুদের টুটি চেপে ধরেছিল ইংলিশরা। কাল সিডনিতে তৃতীয় ম্যাচে স্মিথবাহিনীকে তো ঘায়েলই করে ফেললো ইয়ন মর্গানের দল। অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচ জিতে ভস্মাধার পুনরুদ্ধার করেছিল অজিরা। একইভাবে ইংল্যান্ড ওয়ানডে সিরিজ নিজেদের করে নেওয়ার পাশাপাশি অ্যাশেজ হারের বদলা নিয়ে ফেলল প্রথম তিন ম্যাচেই! তৃতীয় ওয়ানডেতে সফরকারীদের জয় ১৬ রানের।
সিডনিতে জিততে ব্যর্থ অস্ট্রেলিয়া নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে দেশের মাটিতে কোনো ওয়ানডে সিরিজে প্রথমবারের মতো প্রথম তিন ম্যাচ পরাজয়ের লজ্জায় পড়ল। দেশে ও দেশের বাইরে মিলিয়ে অজিদের এমন অভিজ্ঞতা হলো এ নিয়ে ছয়বার। ২০১০ সালের পর এই প্রথম দেশের মাটিতে কোনো দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ হারল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এসসিজি) জস বাটলারের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরির ওপর ভর করে ৭ উইকেটে ৩০২ রানের বড় পুঁজি দাঁড় করিয়েছিল ইংল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে ইংলিশ বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পুরো ৫০ ওভার খেললেও ২৮৬ রানের বেশি এগাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। অথচ তখনও অক্ষত ছিল ৪টি উইকেট।
রোববার টসে জিতে ফিল্ডিং বেছে নিয়েছিল স্বাগতিকরা। সিদ্ধান্তটা খুব খারাপ ছিল, বলা যাবে না। অজি বোলারদের তোপে শুরু থেকে তেমন সুবিধা করতে পারেননি ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। ১০৭ রানের মধ্যে ৪টি উইকেট হারিয়ে বসে তারা। তবে অধিনায়ক মর্গান আর জস বাটলার মিলে সে বিপদ কিছুটা সামলে উঠেছিলেন। পঞ্চম উইকেটে ৬৫ রানের জুটি গড়ে সাজঘরে ফিরেন মর্গান (৪১)। এরপর মঈন আলিও ৬ রান করে আউট হলে ১৮৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে আবারও বিপদে পড়ে ইংলিশরা। তবে বাটলার হাল ছাড়েননি। সহজাত মারকুটে ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডকে ৩০০ পার করে দিয়েছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। ৮৩ বলে ৬ বাউন্ডারি আর ৪ ছক্কায় হার না মানা ১০০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন ক্রিস ওকস। ৩৬ বলে ৫ চার আর ২ ছক্কায় ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন এই লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান।
জবাব দিতে নেমে শুরুতে বড় জুটি না পেলেও একটা সময়ে বেশ ভালো অবস্থানে ছিল অস্ট্রেলিয়া। ৩৪ ওভারে ৩ উইকেটেই তারা তুলে ফেলেছিল ১৮১ রান। সেখান থেকে ইংলিশদের দারুণভাবে লড়াইয়ে ফেরান বোলাররা। উইকেট তুলে নেওয়ার চেয়ে নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেংথ বজায় রাখায় মনোযোগী ছিলেন তারা। ফলে অ্যারন ফিঞ্চ (৬২), মিচেল মার্শ (৫৫) আর মার্কাস স্টয়নিস (৫৬) হাফসেঞ্চুরি পেলেও দলকে জয়ের মুখ দেখাতে পারেননি। দলপতি স্টিভেন স্মিথ ৪৫ রান করেন। আর টিম পেইনি অপরাজিত ছিলেন ৩১ রানে। তবে এর মধ্যে স্টয়নিস ছাড়া বাকি সবাই রানের চেয়ে বল খরচ করেছেন বেশি। পরে সেটি আর পুষিয়ে উঠতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডের পক্ষে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মার্ক উড, ক্রিস ওকস আর আদিল রশিদ। একাদশ সেঞ্চুরি পাওয়া জস বাটলার জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। শুক্রবার অ্যাডিলেড ওভালে অনুষ্ঠিত হবে অস্ট্রেলিয়ার ‘মান বাঁচানোর’ চতুর্থ ওয়ানডে।
"