ক্রীড়া প্রতিবেদক
শেরে বাংলার সঙ্গে রুবেলও
গত বছরের জুনে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মঞ্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাইলফলকটা ছুঁয়েছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। কাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ১০০ উইকেটের মালিক হলেন রুবেল হোসেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে এ দুজন ছাড়া উইকেট সংখ্যায় তিন অঙ্কে যাওয়ার নজির নেই অন্য কোনো বাংলাদেশি পেসারের। যেখানে মাশরাফি প্রথম, রুবেল দ্বিতীয়।
রুবেল মাইলফলক ছুঁতে পারবেন কি না সেটা নিয়ে অবশ্য সংশয় ছিল। তবে আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল শেরে বাংলার স্টেডিয়ামের রেকর্ড। ষষ্ঠ ভেন্যু হিসেবে শততম ওয়ানডে ম্যাচের মঞ্চায়ন হলো এখানে। তবে ‘হোম অব ক্রিকেট’ একটা জায়গায় ছাড়িয়ে গেছে শারজাহ্ ক্রিকেট স্টেডিয়াম, সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড, হারারে স্পোর্টস ক্লাব ও কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামকে। কাল সবচেয়ে কম সময়ে ১০০ ম্যাচ আয়োজনের অনন্য এই রেকর্ড গড়ল মিরপুর। কাকতালীয় হলেও ২০০৬ সালে ৮ ডিসেম্বর এই জিম্বাবুয়ে-বাংলাদেশ ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছিল সাকিব-মাশরাফিদের চেনা দুর্গের।
অতীতের সঙ্গে মিলে গেছেন রুবেলও। ২০০৯ সালে এমনই একটা ত্রিদেশীয় সিরিজে ওয়ানডে অধ্যায় শুরু হয়েছিল রুবেলের। তবে সেদিনের ম্যাচে জিম্বাবুয়ে নয়, টাইগারদের প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা। এই ম্যাচে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অভিষেকে ৪ উইকেট শিকার করেছিলেন রুবেল। সেদিন বল হাতে আগুন ঝরিয়েও রুবেল ছিলেন ম্যাচের পার্শ্ব-চরিত্রে। অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে কারণে সিরিজের সূচনা ম্যাচের অবধারিত নায়ক সাকিব আল হাসান।
মাইলফলক ছোঁয়ার উপলক্ষ। একটু তো ধৈর্যের পরীক্ষা দিতেই হবে। ৪৮তম ওভারে এসে অপেক্ষার অবসান ঘটল রুবেল ও ভক্তকুলের। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে পিটার মুর ও টেন্ডাই চেতারাকে সাজঘরে পাঠিয়ে কাক্সিক্ষত গন্তব্যে পৌঁছে যান রুবেল। যা দ্বিতীয় বাংলাদেশি পেসার হিসেবে কোনো ক্রিকেটারের উইকেটের সেঞ্চুরি। তবে ল্যান্ডমার্ক স্পর্শ করতে এই পেসার মাশরাফির চেয়ে তিনটি ম্যাচ বেশি খেললেন। ত্রিদেশীয় সিরিজের উদ্বোধনী লড়াইটি রুবেলের ক্যারিয়ারের ৮১তম ম্যাচ।
আরো একটা জায়গায় মাশরাফির পাশে নাম লিখিয়েছিলেন রুবেল। ২০১৩ সালে ওয়ানডে অধিনায়কের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগারÑ২৬ রানে ৬ উইকেট ও রেকর্ড স্পর্শ করেছিলেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শুরুর দিনে ক্যারিয়ারের প্রথম ও একমাত্র হ্যাটট্রিক তুলে নিয়েছিলেন রুবেল। ২০১৫ বিশ্বকাপে তার দুটি ডেলিভারিতে দল হারিয়েছিল ইংল্যান্ডকে, বাংলাদেশ উঠেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে।
কিন্তু ইনজুরি, ফর্মহীনতা ও মাঠের বাইরের নানা বিতর্কিত ঘটনার জেরে প্রায় হারিয়ে যাচ্ছিলেন বজ্রগতির এই পেসার। অবশেষে ত্রিদেশীয় সিরিজে তাকে ডেকে পাঠিয়েছেন নির্বাচকরা। সুযোগ পেয়ে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন ১ জানুয়ারি আটাশ বছর পূর্ণ করা এই ক্রিকেটার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ফেরার ম্যাচে ৫ ওভারে ২৪ রান খরচায় তুলে নেন ২ উইকেট।
"