শফিকুল ইসলাম শফিক

  ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮

মাহির সততা

মস্ত বড় গ্রাম নরদাশ। গ্রামের উত্তরপাড়ায় মোসলেম চেয়ারম্যানের বাড়ি। সোনায় সোহাগা একটি পরিবার। চেয়ারম্যান সাহেবের বুকভরা গর্ব। এমন পরিবার কে না চায়? তার পরিবারের সবাই উচ্চশিক্ষিত। সবাই স্কুলের টিচার। এমন পরিবারেই জন্ম নিল মায়ের কোলজুড়ে একটি ফুটফুটে শিশু। মা আদর করে ছেলেটির নাম রাখলেন মাহি।

ছেলেটি প্রখর মেধাবী ও সুচতুর। সে গ্রাম থেকে প্রাইমারি পাস করে। ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। মা-বাবার ইচ্ছেমতো ছেলেকে শহরে ভর্তি করিয়ে দিলেন। এখন সে রাজশাহী সরকারি কলেজিয়েট স্কুলে পড়ছে। ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। তার মা-বাবা গ্রামের স্কুলের টিচার। মামা শহরে থাকেন। তিনিও টিচার। মা-বাবা ছেলেকে মামার বাসায় রাখলেন। নানি তাকে স্কুলে আনা-নেওয়া করেন।

কিছুদিন আগের কথা। অন্তু ও মাহি মামাতো-ফুফাতো ভাই। অন্তুর বাবাও একজন টিচার। তারা দুজনে একসাথে থাকে। দুজনে আলাদা স্কুলে পড়লেও বাসায় একসাথে প্রাইভেট পড়ে। যথারীতি একদিন টিচার পড়িয়ে চলে গেলেন। মাহি পড়া শেষ করে বইখাতা গোছাতে লাগল। হঠাৎ তার হাত থেকে কলম মেঝেতে পড়ে যায়। কলমটি ওঠাতে গিয়ে আঁতকে ওঠে। কী ব্যাপার! কোত্থেকে চকচকে এক শ টাকার নোট এলো? নিশ্চয় এটি স্যারের টাকা। হয় তো স্যারের পকেট থেকে পড়ে গেছে। শিগগিরই স্যারকে ফোন দিল। স্যার বললেন, এটি সত্যিই আমার টাকা নয়। আমার মানিব্যাগে তো সব টাকাই আছে।

এরপর মাহি বাসার সবাইকে বিষয়টি জানিয়ে দিল। কিন্তু সে হারানো টাকার মালিককে কিছুতেই খুঁজে পেল না। সে ভাবল টাকাটা হয় তো মামার কোনো ছাত্রছাত্রীর হতে পারে। কারণ, তার মামার একটি টিউটোরিয়াল হোম আছে। রাতের বেলা সে ওখানেই প্রাইভেট পড়ে। অবশেষে মামাকে বিষয়টি অবগত করল। মামাও টাকার কোনো হদিস পেলেন না। মাহি সপ্তাখানিক পর টাকাটা মসজিদের দান বক্সে জমা দিল। মামা ছেলেটির সততায় খুবই মুগ্ধ হলেন। আদর করে তার গালভরা চুমু দিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close