দেবার্পন দত্ত ইথান

  ০৬ অক্টোবর, ২০১৮

জাদুর জীবের জগতে

রবিবার সকাল। আমি বাসায় একা। বসে টিভি দেখছি, হঠাৎ আমাদের স্টোর রুম থেকে একটি শব্দ পেলাম। আমি ওই রুমে সাধারণত যাই না। কারণ, এটি বন্ধ থাকে। কিন্তু আজ গিয়ে দেখলাম ওই দরজাটা খোলা। আমি ভেতরে ঢুকলাম। ঢুকে দেখি অনেক আয়না। একটি অনেক সুন্দর আয়না আছে। সেটার কাছে গেলাম। ওটার ওপরে লেখা ‘জাদুর আয়না’। হঠাৎ আমাকে পেছন থেকে কে যেন ধাক্কা দিল। আমি আমার চোখ বন্ধ করে ফেললাম। আর আমি যেই চোখ খুললাম, তখন দেখি আমি আর স্টোর রুমে নেই। আমি এক মাঠের মাঝখানে। পেছনে ঘুরে দেখি কিছু বড় প্রাণী আমার দিকে তেড়ে আসছে। ওই এক ঝাকের মতো। ওদের সবার হাতে গুলি। আমি দিলাম দৌড়। মনে হচ্ছে এগুলো এলিয়েন। একটু দূরে দেখি কিছু গাছ পড়ে আছে। গাছগুলোর কাছে গিয়ে দিলাম লাফ। আমি কোনোমতে পার করলাম সেই গাছ। পেছনে ফিরে দেখি একটা বড় ডাইনোসর এক কিলোমিটার দূরে একটি ছোট ডাইনোসরকে ধরার চেষ্টা করছে। ‘কার! কার!’ এই শব্দটি আমার পাশ থেকে এলো। পাশে দেখি একটি ডাইনোসরের ডিম ফুটছে। ফুটে বের হলো ছোট একটি ডাইনোসর। এটি দেখতে খুব আদুরে। হঠাৎ আমি দেখলাম মা ডাইনোসরটি আমার দিকে দৌড়ে আসছে। আমি পাশ ফিরে দিলাম দৌড়। শেষ পর্যন্ত মা ডাইনোসরটি আমার পিছু ছাড়ল। আমি তখন দেখি আমার সামনে একটি বাড়ি। বাড়িটি খুব ভুতুড়ে লাগছিল। হঠাৎ আমার পা মাটি থেকে উঠে গেল। ওপরে দেখি একটি বড় উড়ন্ত ডাইনোসর আমাকে নিয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর আমাকে একটি পাখির বাসার মতো বাসায় নিয়ে এলো। সেই ডাইনোসরটির দুটো বাচ্চা ছিল। তারা আমাকে দেখতে চাচ্ছে। আমি বাসাটার কোণায় এসে দেখি বাসাটি একটি পাহাড়ের ওপর। তাড়াতাড়ি বাসা থেকে পাহাড়ে নেমে ছুটলাম। সেই ডাইনোসরটি আমাকে ধরার জন্য সামনে এলো এবং আমি লাফ দিলাম। পড়লাম পানিতে। পানিতে বিশাল সব সাপ। তাড়াতাড়ি সাঁতরে পাড়ে উঠলাম। আমি তখন খুব ক্লান্ত। খিদেও পেয়েছে। পেছনে ফিরে দেখি একটি মরা ডাইনোসর। সেটির কিছু মাংস নিয়ে আগুন জ্বালালাম। মাংসটি পুড়িয়ে খেয়ে নিলাম। তারপর একটি ঘুম দিলাম। উঠে পেছনে একটি শব্দ শুনে ঘুরে দেখি, কিছু বড় চিকন ঘোড়া। সেগুলোর পাখা ছিল। আমি চিনলাম। ওগুলো হচ্ছে থ্রেস্টাল। ওরা সবকিছু সহজেই খুঁজে নিতে পারে। আমি একটার কানে গিয়ে বললাম, আমাকে যাদুর আয়নার কাছে নিয়ে চল, যদি তুমি জানো সেটা কোথায়। আমি ওটার গায়ে উঠে বসলাম। আর ওটা উড়তে শুরু করল। হঠাৎ কিছু গাছের মাঝখান থেকে একটা জন্তু বের হলো। সেটার মাথা ছিল সিংহের, মুখ দিয়ে আগুন বের হয়, ঘোড়ার পা, সাপের লেজ ও ড্রাগনের পাখা। এটি ছিল একটি কিমেরা। এটা ছাই খায়। এটা একটু কাছে আসার পর আমাদের দিকে আগুন মারল। আমি থ্রেস্টাল থেকে লাফ দেই এবং একটা গাছে আটকে যাই। আমি দেখলাম থ্রেস্টালটা ছাই হয়ে গেল। কিমেরাটি ছাইগুলো খেয়ে চলে গেল। আমি গাছ থেকে পড়লাম। আমি দেখলাম যে এক কিলোমিটার বা তার একটু বেশি দূরে একটি সেঞ্চুয়ার আর একটি পঙ্খিরাজ ঘোড়া লড়াই করছে। সেঞ্চুয়ারটির কাছে কিছু তীর ও একটি ধনুক ছিল। হঠাৎ একটি তীর গিয়ে ঘোড়াটির গায়ে লাগলো। আর একটি তীর আমার পাশে পড়ল। আমি চিন্তা করলাম যে, সেঞ্চুয়ারটিকে থামাতে হবে। আমি তীরটি তার দিকে ছুঁড়লাম। তীরের আঘাতে সেটি মরে গেল। আমি ঘোড়ার কাছে গেলাম তার পাশে অল্প পানি পেলাম। সেই পানিটি ঘোড়াটির গায়ে ঢাললাম এবং সেটি ভালো হয়ে গেল। হঠাৎ ঘোড়াটি আমাকে তার পিঠে বসতে বলল। আমি বসলাম। সেটি উড়তে শুরু করল। কিছুক্ষণ পর কি যেন একটা ভেতর থেকে এলো। একটা ড্রাগন। ঘোড়াটি এই পাশ ওই পাশ উড়তে লাগল কিন্তু ড্রাগনটি আগুন মারল। আমি আবার লাফ দিলাম। আর সেটি ছাই হয়ে গেল। আমি গিয়ে পড়লাম পানিতে। নিচে অনেক মারমেইড। হঠাৎ ওদের একজন বলে উঠল, মানুষ। আর সঙ্গে সঙ্গে কিছু মারমেইড আমার পিছু নিল। আমি তাড়াতাড়ি পাড়ে সাঁতরে পার হলাম। এটি একটি উপকূল। সেখানে ছিল একটি পাহাড়। পাহাড়ের চূড়ায় উঠে দেখি কিছু পরি যাদু দেখাচ্ছে। একটি বুড়া পরী সেখানে বসে আছে। হঠাৎ একটা পরী আমার দিকে তার কাঠিটা দেখিয়ে বলল, ক্রপ্টেনিও। বুড়া পরিটা বলল, প্রকপসও। পরিটার কাঠি থেকে যাদু বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটা আটকে গেল। বুড়া পরিটা তাকে একটা বকা দিল। তারপর আমাকে ডাকল, ডেকে জিজ্ঞেস করল, আমি এখানে কেন এসেছি। আমি বললাম। বুড়া পরীটা বলল, এই পাহাড়ের নিচে যাও। একটা যাদুকরের ঘর আছে। তার কাছে সে আয়না আছে। সে আমাকে দুটো শব্দ বলল এবং কাঠি দিল। বলল, এগুলো পরে লাগবে। আমি নিচে গেলাম, গিয়ে যেই লাফ দিব আয়নাটিতে, ওমনি সেই যাদুকর বের হলো। সেই যাদুকর এসে কী একটা বলল, তখন আমিও একটি শব্দ বললাম। আমার যাদুটি তাকে আটকে দিল। আর দ্বিতীয়টা বলতেই সে মাটিতে পড়ে গেল। আর আমি লাফ দিলাম আয়নায়। আমি স্টোর রুমে চলে এলাম। আর ওমনি সবাই জিজ্ঞেস করা শুরু করল, কী হয়েছে? কোথায় ছিলে? তিনদিন চলে গেল আমি ওখানে গিয়েছি। কী এক জগৎ। ভাগ্য ভালো যে, বেঁচে ফিরতে পেরেছি।

লেখক : সপ্তম শ্রেণি, রেসিডেন্সিয়াল স্কুল, চট্টগ্রাম।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close