জীবনযাপন ডেস্ক

  ০৩ জানুয়ারি, ২০২০

নতুন বছরের সাজ পোশাক

আমাদের জীবনের বড় একটি অংশজুড়ে রয়েছে ফ্যাশন। তাই নতুন বছরে নতুন করে নিজেকে উপস্থাপন করতে চায় অনেকেই। কারণ চলন, বলন, সাজ-পোশাকই ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে। তাই নতুন বছরের ফ্যাশন ভাবনায় যোগ করে নিতে পারেন এমন কিছু যা একই সঙ্গে আমাদের মার্জিত রুচি এবং দেশাত্মবোধকে তুলে ধরে। সে রকমটাই জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন।

নতুন বছরে নিজেকে উপস্থাপন প্রসঙ্গে আফরোজা পারভীন বলেন, ‘আমার ভালো লাগার জায়গা থেকে দেশকে উপস্থাপন করতে চাই। তাঁতের শাড়ি, জামদানিসহ এ ধরনের দেশি শাড়ি পরে দেশীয় ফ্যাশনকে তুলে ধরতে চাই। শাড়ি শুধু একটি পোশাক নয়, শাড়ি আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ। তাই শুধু উৎসব বা পার্বণেই নয়, নতুন বছরে বাঙালি নারীর পছন্দের পোশাক হিসেবে শাড়িই থাকুক সবার ওপর। ঐতিহ্যবাহী মসলিন, যশোরের মনিপুরি, জুট কাতান, জুট কটন, সুপার নেট, চন্দ্রি কাতান, ঢাকাই জামদানি, মিরপুরের কাতান, বালুচরি, টাঙ্গাইলের সিল্ক, টাঙ্গাইলের কাতান, সুতি, পাবনার কাতান, হাফ সিল্ক, পিউর সিল্ক, চোষাসহ বিভিন্ন কাপড়ের দেশীয় শাড়িই আমাকে সবসময় টানে। এখন তো দেশীয় কাপড়ে অ্যাপ্লিক, এমব্রয়ডারি, স্কিন প্রিন্ট, কার্ট ওয়ার্ক, কাঁথা স্টিচ, ব্লক, জরিপাতি, হাতের ও কারচুপি কাজ করে তৈরি করা হয় দারুণ সব শাড়ি।

পরিবর্তনের ধারাটি নতুন বছরের প্রথম থেকেই শুরু করতে চাই। আর সাজ-পোশাকের সঙ্গে বাঙালিয়ানার ছোঁয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। শাড়ির সঙ্গে তাই চোখে কাজল না পরলে মানায় না। সাজটা হতে হবে ন্যাচারাল। ঠোঁটেও তাই পরতে হবে হালকা রঙের লিপস্টিক। তবে মাঝে মধ্যে কিছুটা ভারি রঙের লিপস্টিক পরা যেতে পারে। গাঢ় রংগুলো শীতকালেই মানানসই। গরমের দিনগুলোতে সাজ-পোশাকে হালকা রং বেছে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের পরিচয়। সম্পূর্ণ সাজজুড়েই যেন বাঙালিয়ানার ছোঁয়া থাকে। একজন রূপ বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমি যেটাকে বেছে নেব, মানুষ সেটাকে সহজেই গ্রহণ করবে। কপালে থাকতে পারে পছন্দসই একটি টিপ। শাড়ির সঙ্গে চুল ব্লো-ডাই করে রাখলে দেখতে বেশি সুন্দর লাগে। অনেক সময় টেনে বেঁধে ফেলি। তবে চুলের সাজটা যার যার রুচি অনুযায়ী করাই ভালো। শাড়ির সঙ্গে পরার জন্য রূপার গহনাই বেশি মানানসই বলে মনে হয়। তবে চলতি ফ্যাশনের যে কোনো ধরনের গহনাই পরতে পারেন। খেয়াল রাখবেন, গহনাটি যেন শাড়ির সঙ্গে মানানসই হয়।

পাঞ্জাবিতে পরিপূর্ণ : নতুন বছরের ফ্যাশন ভাবনা নিয়ে ফ্যাশন ডিজাইনার বিপ্লব সাহা বলেন, ক্রেতাদের চাহিদা এবং রুচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে অভিজাত ফ্যাশন হাউস এবং বুটিক হাউসগুলোতে নান্দনিক পোশাকের রয়েছে বিপুল সম্ভার। আমরা আমাদের নিজস্ব ডিজাইনের মাধ্যমে দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গ নিপুণভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। পোশাকে প্রধান্য দিচ্ছি শিল্পকে, আবহমান সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গকে। আর এ দেশীয় সংস্কৃতিমাখা পোশাকই সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করছে মানুষকে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের। দেশীয় কাপড় দিন দিন অনেক উন্নত হচ্ছে। শুধু ডিজাইনে নয়, মানের দিক দিয়েও কোনো অংশে পিছিয়ে নেই দেশীয় পোশাক। আমাদের ষড়ঋতুর দেশ। তাই বিভিন্ন ঋতুকে কেন্দ্র করেই পোশাকগুলো তৈরি করা হয়। নিজেদের অস্তিত্বকে ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন উৎসব কিংবা পার্বণ ছাড়াও দৈনন্দিন জীবনে, কর্মক্ষেত্রে, সব জায়গাতেই পরতে হবে দেশীয় পোশাক। সেক্ষেত্রে ছেলেরা পরতে পারেন পাঞ্জাবি। আর মেয়েদের জন্য শাড়িই হোক প্রতিদিনের পোশাক। তুলনামূলক সহজলভ্য এসব পোশাক পরাটা নির্ভর করে অভ্যাসের ওপর। বয়স এবং রুচির সঙ্গে মানানসই দেশীয় যেকোনো পোশাকই হোক আমাদের নতুন বছরের নতুন ফ্যাশনের বাহক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close