জীবনযাপন ডেস্ক

  ০৮ মার্চ, ২০১৯

ঘরের সৌন্দর্যে পর্দা

মানুষ নিজেকে যেমন চমৎকার সাজে সজ্জিত করে সবার সামনে উপস্থাপনে মনোযোগী থাকে; তেমনি নিজেদের ঘর-দুয়ারও আকর্ষণীয় করে রাখতে সচেষ্ট থাকে। ঘরের আসবাব, রং ও নানা উপকরণে সেই সৌন্দর্য ফুটে ওঠে; তেমনি একটি অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ হলো ঘরের পর্দা। যাকে ঘরের আব্রুও বলা যেতে পারে। পর্দায় রয়েছে কিছু ব্যবহারিক দিক। যেমন : ঘরের গোপনীয়তা রক্ষা, বাইরের ধুলাবালি ও দূষিত বায়ু ঠেকিয়ে রাখা ইত্যাদি। গৃহিণীরা অন্দরের সাজসজ্জায় পর্দা নিয়ে করে থাকেন নানা রকম ভাবনা। ঘরের সঙ্গে মানানসই, দেয়ালের রঙের সঙ্গে খাপখাওয়ানো আর কেমন ডিজাইনের হবে, তা এখন প্রাধান্য পাচ্ছে বেশি। আর পর্দার কাপড়েও এসেছে বৈচিত্র্য। তাই পর্দা নির্বাচনের সময় লক্ষ রাখা উচিত অনেক বিষয়েই। সেই সঙ্গে পরিচয় দিতে হবে রুচিশীলতা ও সৃজনশীলতার, তবেই আপনার ঘর হয়ে উঠবে আকর্ষণীয়। ফলে এর কিছু কলাকৌশল জেনে নেওয়া প্রয়োজন।

প্রথমত. আপনার ঘরের পর্দা কোন ধরনের হবে, সে বিষয়ে। পর্দার নানা ধরন নির্ভর করে ঘরের আয়তন, আলোর উৎস ও রঙের ওপর। ঘরের আয়তন যদি ছোট বা বর্গাকার হয়, তবে শর্ট সাইজের বা আঁটসাঁট পর্দা ব্যবহার করা উচিত। অন্যদিকে ঘরের আকার যদি লম্বাটে বা আয়তকার হয়, তবে ফ্লোর পর্যন্ত লম্বা পর্দার প্রয়োজন হবে। আলোর উৎস ও বাতাস সঞ্চালন পেতে হলে শর্ট পর্দাই ভালো।

দ্বিতীয়ত. ঘরে কৃত্রিম আলোর ওপর জোর দিলে আর ঘরটি এয়ারকন্ডিশনড হলে লম্বা পর্দা ঘরকে আরো সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। তবে পর্দার ধরন ঘরের দেয়ালের রঙের ওপরও নির্ভর করে অনেকখানি। গাঢ় রঙের রুমে পর্দা হবে লম্বা সাইজের, অন্যদিকে হালকা রঙের ঘরে দুই ধরনের পর্দাই ঝোলানো যায়। আবার বড় রুম ও ফার্নিচার দুটোর ক্ষেত্রেই পর্দা প্রথার কিছুটা পরিবর্তন আবশ্যক। ফার্নিচারের সঙ্গে পর্দার কালার ম্যাচিং হতে পারে। ফার্নিচার বেশির ভাগ সময়েই মেরুন বা কালচে রঙের হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে মেরুন রঙের পর্দার ওপর সাদা বা অফ হোয়াইট পেলমেট (পর্দার সঙ্গে যুক্ত কাপড়) দেওয়া যেতে পারে।

তৃতীয়ত. বড় রুমের ক্ষেত্রে পর্দায় পেলমেট ব্যবহার করতে হবে। ফার্নিচারের সঙ্গে ঘরের পর্দা মেলাতে গেলে ফার্নিচারের রং অনুযায়ী পর্দার পেলমেট হতে হবে। ঘরের সঙ্গে পর্দা মানানসই হওয়ার প্রশ্নে দেয়াল ও পর্দার রঙের একটা সমন্বয় থাকা প্রয়োজন। এতে করে পর্দাকে ঘরের অংশ বলে মনে হয়। দেয়াল যদি অফ হোয়াইট হয়, তবে পর্দাতেও সেই রং লাগাতে পারেন। আবার যদি দেখা যায়, ঘরের ফার্নিচারগুলোর রং হালকা। এদিকে দেয়ালের একটা অংশের রং নীল, সবুজ বা লাল তখন দেয়ালের সঙ্গে পর্দার রঙের সমন্বয় করা যেতে পারে।

চতুর্থত. ড্রয়িং, ডাইনিং সব জায়গাতেই রুমের সাইজ, ফার্নিচারের সাইজ, রং, দেয়াল ও আবহাওয়া বুঝে পর্দা ঝোলাতে হবে। শোবার ঘরের পর্দা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে হালকা রং বেছে নেবেন। এতে ঘরে একটা স্নিগ্ধতার আভাস থাকে।

পর্দার কাপড় : পর্দার কাপড় ভারী বা হালকা সব ধরনেরই হতে পারে। পর্দা পাতলা হলে বাতাস সহজে ঘরে প্রবেশ করতে পারে। আবার ভারী পর্দা সূর্যের তাপ ও শীতে ঠান্ডা বাতাস থেকে সুরক্ষা দেয়। দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য মজবুত ও পাকা রঙের সুতির কাপড়ই পর্দার জন্য উপযোগী। নেট বা অন্যান্য দামি পর্দার কাপড়ও ব্যবহার করতে পারেন, তবে সেগুলো তুলনামূলকভাবে ব্যয়সাপেক্ষ। এগুলো ময়লাও হয় তাড়াতাড়ি অথচ ঘন ঘন পরিষ্কার করলে বা ধুলে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। অন্যদিকে সুতির পর্দা সহজেই পরিষ্কার করা যায় এবং একবার ইস্ত্রি করলে সহজে ভাঁজ নষ্ট হয় না। আর টেকেও অনেক দিন। স্ট্রাইপ বা চেক কাপড়ের পর্দা হলে কনট্রাস্ট ও ম্যাচিং দুটোর মিশেল থাকলেই বেশি ভালো লাগবে। আমাদের এখানে আজকাল বাহারি প্রিন্টের পর্দার বেশ প্রচলন লক্ষ করা যায়। অনেক বাড়ির গৃহিণীরা প্রিন্টের পর্দা বেশ পছন্দ করেন। এটা আমাদের গৃহস্থালি আয়োজনের একটি ঐতিহ্যও বটে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close