আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২০ জানুয়ারি, ২০১৭

ওআইসির বৈঠকে যোগ দিচ্ছে না মিয়ানমার

মিয়ানমারে মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার কুয়ালালামপুরে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে। তবে এই বৈঠকে যোগ দেবে না মিয়ানমার। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনার জন্য অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) বৈঠক আহ্বান করে মালয়েশিয়া।

বৈঠকের আগে ওআইসির মিয়ানমার-বিষয়ক বিশেষ দূত সৈয়দ হামিদ আলবার এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংঘাত বন্ধে ওআইসির উচিত জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করা। কম্বোডিয়া ও রুয়ান্ডার মতো গণহত্যা আমরা দেখতে চাই না। যেখানে লাখ লাখ মানুষ মারা গেছে। তাই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা বন্ধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করা উচিত। এটি এখন আর অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। বরং আন্তর্জাতিক উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনিফা আমান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হবে। এ ছাড়া রাখাইন রাজ্যে ইতোমধ্যে মানবাধিকার পরিস্থিতির যে চরম অবনতি হয়েছে সেটি যেন না বাড়ে, এ জন্য মিয়ানমারকে অনুরোধ করবে ওআইসি। সম্মেলন শেষে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’

এদিকে মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইয়ান হুই আরাকান সফর শেষ করবেন শুক্রবার। তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মংডুতেই প্রবেশ করতে দেয়নি মিয়ানমার। সেখানে জাতিসংঘ এই সংঘাত বন্ধে কী করবে তা অনিশ্চিত।

এদিকে বৈঠকের ঠিক আগের দিন বুধবার রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের সহিংসতা এবং কম্বোডিয়া ও রুয়ান্ডার মতো গণহত্যা রোধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন ওআইসির মিয়ানমার-বিষয়ক দূত এবং মালয়েশিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ হামিদ আলবার।

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযানের প্রেক্ষাপটে অধিক সংখ্যায় রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশের ফলে সংকটে প্রতিবেশী দেশটিও। ফলে বাংলাদেশও রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিজেদের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরতে চায় এই সম্মেলনে।

বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। ব্রিটেনে বসবাসরত রোহিঙ্গা নেতা আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেছেন, ‘যখন তারা জরুরি বৈঠক ডেকেছেন, তখন আমরা আশা করছি একটা ইতিবাচক সমাধান আসবে। আমাদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, তা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল। এর একটি নিরপেক্ষ তদন্ত দরকার। আমরা চাই জাতিসংঘের কমিশন গঠন করে তদন্ত করা হোক।’

কিন্তু ওআইসি এ ক্ষেত্রে কতটা ভূমিকা রাখতে পারবে? এমন প্রশ্নে এই রোহিঙ্গা নেতা বলেন, ‘এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বড় সংগঠন। তারা চাইলে এ বিষয়ে চাপ তৈরি করতে পারে।’ বাংলাদেশও ওআইসির সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিজেদের প্রত্যাশার বিষয়ে তুলে ধরবে। সেখানে তারা বাংলাদেশের কাছ থেকে কী আশা করছে?

নুরুল ইসলাম বলেন, তারা চান, বাংলাদেশে একটা অস্থায়ী আশ্রয় দেওয়ার পর, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে, ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে মানবিক সহায়তা দিতে হবে। এরপর বাংলাদেশ থেকে তাদের (রোহিঙ্গাদের) ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করবে।

আমরা উদ্বাস্তু হিসেবে জীবনযাপন করতে চাই না। আমরা নিজেদের দেশে ফিরে যেতে চাই। তারাও (বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা) ফিরে যেতে চায়। ওখানে (মিয়ানমারে) পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় তারা এভাবে চলে আসছে। মংডুতে একটা সেফ জোন করা দরকার। সূত্র : বিবিসি

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist